বাংলাদেশের গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ৫৩ জন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তসহ ১৫১ জন আসামির খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। গত বছর ৫ই অগাস্টে আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কারা বিদ্রোহ করে তারা পালিয়ে গিয়েছিলো।
পালিয়ে বেড়ানো এসব আসামির মধ্যে বুয়েটের বহুল আলোচিত আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিও আছে। এ কারণেই বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে।
কাশিমপুর কারাগার কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন ছয়ই অগাস্ট কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগার থেকে থেকে মোট ২০২ জন আসামি পালিয়ে গিয়েছিলো। এদের মধ্যে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলো ৮৮ জন।
"ওই সময়ে যারা পালিয়ে গিয়েছিলো তাদের মধ্যে ৫১ জনকে আমরা ফেরত পেয়েছি। এদের মধ্যে ৩৫ জন বিভিন্ন মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী," বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন কাশিমপুর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ-আল-মামুন।
তবে এখনো যারা পালিয়ে আছে তাদের মধ্যে আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমি ছাড়া আলোচিত আর কোন মামলার আসামি নেই বলে কর্মকর্তারা দাবি করেছেন।
মুনতাসির আল জেমির পালিয়ে যাওয়ার খবর সোমবার গণমাধ্যমে আসার পর রাতে বুয়েটে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছে একদল শিক্ষার্থী। রাতেই এক সংবাদ সম্মেলনে তারা পালিয়ে যাওয়া আসামিকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছে।
২০১৯ সালের ৬ই অক্টোবর দিবাগত রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মীর নির্মম নির্যাতনে নিহত হন আবরার ফাহাদ। তখন ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এই শিক্ষার্থীকে হত্যার ঘটনায় বুয়েটসহ সারাদেশে তুমুল অসন্তোষ তৈরি হয়েছিলো।
ওই ঘটনায় ২০২১ সালের ৮ই ডিসেম্বর ২০জনকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলো বিচারিক আদালত।
বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মুনতাসির আল জেমিসহ আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত সবাই বর্তমান সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলো।
আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের সময় যে কয়েকটি ঘটনায় দলটির সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলো আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডকে তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন অনেকে।