মানচিত্রে সুদানের ওমদুরমানের অবস্থান। ফাইল ছবি : আলজাজিরা
সুদানের রাজধানী খার্তুমের উপকণ্ঠে আবাসিক এলাকায় সামরিক পরিবহন বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬ জনে। আঞ্চলিক সরকার বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে।
আন্তোনভ বিমানটি স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে ওয়াদি সাইদনা বিমানঘাঁটির কাছে বিধ্বস্ত হয়। ওমদুরমানের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত এই ঘাঁটি সেনাবাহিনীর অন্যতম প্রধান সামরিককেন্দ্র।
খার্তুমের আঞ্চলিক সরকারের গণমাধ্যম কার্যালয় এক বিবৃতিতে এদিন বলেছে, চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী, এ দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৪৬-এ পৌঁছেছে। পাশাপাশি আহত হয়েছে ১০ জন। এর আগে সেনাবাহিনী সমর্থিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অন্তত ১৯ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল। উড্ডয়নের সময় বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর সামরিক সদস্য ও বেসামরিক নাগরিক—উভয়ই হতাহত হয়েছে বলে সেনাবাহিনী জানিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, তারা একটি বড় বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছে এবং আশপাশের বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণে আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এ ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জরুরি দলগুলো শিশুসহ আহত বেসামরিক নাগরিকদের নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে গেছে।
একজন সামরিক সূত্র জানিয়েছেন, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে বিমানটির বিধ্বস্ত হয়েছে।
তবে গণমাধ্যমে কথা বলার অনুমতি না থাকায় তিনি নাম প্রকাশ করতে চাননি।২০২৩ সালের এপ্রিলে দেশটির সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সংঘাত চলমান।
আরো পড়ুন
সুদানে সমান্তরাল সরকার গঠনের ঘোষণা, বিভক্তির শঙ্কা তীব্র
সেনাবাহিনীর অগ্রগতি
বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার এক দিন আগে আরএসএফ দাবি করেছিল, তারা দক্ষিণ দারফুরের রাজধানী নিয়ালা এলাকায় একটি রুশ নির্মিত ইলিউশিন বিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে। বিমানটি ধ্বংস হওয়ার সময় এর পুরো ক্রু সদস্যরা ভেতরেই ছিলেন।
এদিকে সাম্প্রতিক উত্তেজনা সেনাবাহিনীর জন্য একটি বড় সাফল্যের মধ্যেই এলো।
মধ্য সুদান ও রাজধানী খার্তুমে একাধিক ফ্রন্টে আরএসএফের বিরুদ্ধে বড় অগ্রগতি অর্জন করেছে সেনাবাহিনী।
অন্যদিকে শনিবার রাতে আরএসএফ কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে রাজনৈতিক ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এতে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় একটি সমান্তরাল সরকার গঠনের পথ উন্মুক্ত হয়েছে।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তার সাবেক উপপ্রধান ও আরএসএফ কমান্ডার মোহাম্মদ হামদান দাগলো এখন এক ভয়াবহ ক্ষমতার দ্বন্দ্বে লিপ্ত, যারা একসময় মিত্র ছিলেন।
জাতিসংঘের মতে, এই যুদ্ধ সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি করেছে। এই সংঘাত খার্তুমসহ প্রধান প্রধান শহরকে ধ্বংস করে দিয়েছে, এক কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, দেশটিকে চরম খাদ্য সংকটের মুখে ফেলেছে এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো বিপর্যস্ত করেছে। সূত্র : এএফপি