প্রতীকী ছবি
মেঘনা নদীর আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার নিকট এলাকায় গভীর স্থান থেকে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চুম্বক ড্রেজারে বাল্কহেড নৌকায় অবাধে বালু উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। ফলে হুমকিতে রয়েছে নদীর তীরবর্তী বন্দরনগরী ভৈরব বাজারসহ মেঘনা নদীর ওপর নির্মিত সড়ক সেতু, রেলসেতু, তেলের ডিপো, বিএডিসির দুটি সার গুদাম ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন স্থাপনা। ওই স্থানে অতীতে বালু মহালের ডাক না থাকলেও শুধু ফার্টিলাইজারের ডেসপাচ জেটির পার্শ্ববর্তী জায়গায় সামান্য চর কাটার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক কর্তৃক (নব্যসৃষ্টি করা ইজারা) বালুর উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ডিসির দেওয়া বালু উত্তোলনের অনুমতিতে নাকি শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে। এ বিষয়ে ব্রাক্ষণবাড়ীয়ার ডিসিকে ফোনে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি ক্ষেপে যান। তিনি বলেন ভৈরবের সাংবাদিক হয়ে তাকে এব্যাপারে কেন প্রশ্ন করা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানার ওয়াটার ইনটেক ও ডেসপাচ জেটি এলাকায় বালুর সামান্য চর জাগায় ডেসপাচ জেটিতে পণ্যবাহী জাহাজ ভিড়তে সমস্যা হওয়ায় ওই জায়গাটুকু গভীরতা বাড়াতে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ১৭ এপ্রিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বালুমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওইসভায় গৃহীত সিদ্ধান্তে আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানার ওয়াটার ইনটেক ও ডেসপাচ জেটি এলাকায় মেঘনা নদীতে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ চালানো হয়। সে অনুযায়ী ৯৪, ৮০, ৩১৫ ঘনফুট মাটি/বালু উত্তোলনের জন্য চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর স্বাক্ষরিত এক আদেশে অনুমোদন দেন মেসার্স কামাল ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছেন, জায়গার পরিমাপ, ড্রেজারের সংখ্যা নিয়ে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা মুখ না খোলায় এবং নানা ফাঁকফোকর থাকায় ইজারাদাররা অতিরিক্ত ড্রেজার ব্যবহার করে বালু উত্তোলন করছে। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে। আনুমানিক দুই কোটি টাকার ইজারা নিয়ে ১ কোটি ঘনফুট বালু উত্তোলনের জন্য ডিসি অনুমতি দিলেও অতিরিক্ত ড্রেজার ব্যবহার করে নির্দিষ্ট এরিয়ার বাহিরে নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে অন্তত পাঁচ কোটি ঘনফুট বালু উত্তোলন কারার টার্গেট নেমেছে একটি প্রভাবশালী চক্র। তাছাড়া চর কাটার জন্য মূলত কাটিং ড্রেজার ব্যবহার করা হয়। ডেসপাচ জেটির এলাকার নদীর গভীরতা বাড়াতে কাটিং ড্রেজার ব্যবহার না করে লোড ড্রেজার ব্যবহার করলে ভবিষ্যতে জেটি এলাকারই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ডেসপাচ জেটি এলাকায় মাটির অনুমতি নিয়ে ১০-১৫টি লোড ড্রেজার মেঘনা নদীর গভীরে ভৈরবপ্রান্তে এসে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে বন্দরনগর ভৈরবের একাধিক স্থাপনা। যুগান্তর