লক্ষ্মীপুর
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিবাদে সারাদেশের ন্যায় লক্ষ্মীপুরেও চলছে হরতাল, অবরোধ ও বিক্ষোভ।
সোমবার (৭ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে শহরের দক্ষিণ তেমুহনী, উত্তর তেমুহনীতে হরতাল সমর্থনে তৌহিদ জনতা, হেফাজতে ইসলামী, ইসলামী যুব আন্দোলনসহ বিভিন্ন ব্যানারে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা। এসময় দফায় দফায় বিভিন্ন দিক থেকে মিছিল নিয়ে অবরোধ স্থলে জড়ো হতে থাকে।
কিশোরগঞ্জ
গাজায় ইসরাইলের হামলায় নারী ও শিশুসহ গণহত্যার প্রতিবাদে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরব দুর্জয়মোড় এলাকায় তৌহিদি জনতার আয়োজনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
একই সময় কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সামনে একই দাবিতে নো ক্লাস, নো এক্সাম, নো স্কুল কর্মসূচি পালন করে কিশোরগঞ্জ নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এই কর্মসূচিতে ইনস্টিটিউটের শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ করে।
ভৈরবের কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন, ভৈরব ইমাম ওলামা পরিষদের সভাপতি আবদুল্লাহ আল আমিন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট কিশোরগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক হাজি মোহাম্মদ রুবেল হোসেন, ভৈরব বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সভাপতি সিয়াম মিয়া প্রমুখ।
আরো পড়ুন
ফিলিস্তিনে বর্বর হামলার প্রতিবাদে ঝিনাইদহে বিক্ষোভ
এসময় বক্তারা ইসরাইলি পণ্য বয়কট করার আহ্বান জানিয়ে ড. মোহাম্মদ ইউনুসকে সারাবিশ্বের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইসরাইলের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের অনুরোধ জানান। এছাড়া তারা বলেন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করতে হবে। এসময় ভারতের মুসলমানদের জমি দখলের চেষ্টা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন বক্তারা।
পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে ভৈরব বাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ করেন।
আরো পড়ুন
https://dhakamail.com/country/222471
খাগড়াছড়ি
ফিলিস্তিনে দখলদার ইসরাইলের গণহত্যার বিরুদ্ধে মসজিদুল আকসা পুনরুদ্ধার ও মাজলুম ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে খাগড়াছড়িতে সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) বেলা ১২টায় খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বর মুক্তমঞ্চ এলাকায় এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে শহরের চেঙ্গী স্কোয়ার এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল করে শাপলা চত্বর হয়ে সেলিম মার্কেট ঘুরে আবার মুক্ত মঞ্চে এসে সমাবেশ করে।
আরো পড়ুন
ফিলিস্তিনিদের মুক্তি সংগ্রামের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইবিতে বিক্ষোভ
মো. রাকিব ইফতির সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন মো. আমিনুল ইসলাম, মো. ইব্রাহিম খলিল, মো. মাওলানা আলমগীর, মো. মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক।
বক্তারা ইসরায়েলের ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং এর বিচার দাবি একই সঙ্গে জাতিসংঘের নিরাবতায় নিন্দা জানায়। বাংলাদেশের সব ইসরাইল পণ্য বয়কট করার আহ্বান জানান।
নীলফামারী
ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে সারাদেশের মতো ফুঁসে উঠেছে নীলফামারীর সর্বস্তরের মানুষ।
সোমবার (৭ এপ্রিল) সকালে নীলফামারী শহরের চৌরঙ্গী মোড়ের স্মৃতি অম্লানচত্তর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুণরায় চৌরঙ্গী মোড়ে গিয়ে ঘণ্টাব্যাপী সমাবেশের মাধ্যমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
জনসাধারণের ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশে সাধারণ শিক্ষার্থীর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, নার্স, মসজিদের ইমামসহ রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা যোগ দেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ইসরায়েল গাজা ও রাফা সীমান্তে গুলি ও বোমা বর্ষণ করে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে, যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। পশ্চিমা বিশ্ব একদিকে মানবতার কথা বললেও, অন্যদিকে ফিলিস্তিনে এই নিপীড়নের বিরুদ্ধে তারা নিরব ভূমিকা পালন করছে। বক্তারা অবিলম্বে ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানান। পাশাপাশি সমস্ত পশ্চিমা পণ্য আজ থেকে বয়কোটের ঘোষণা করা হয় এই সমাবেশ থেকে।
আরো পড়ুন
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে বান্দরবানে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ
সমাবেশে নীলফামারী সদর ছাত্র শিবিরের সভাপতি শফিকুল ইসলাম, নীলফামারী ইসলামী আন্দোলনের সেক্রেটারি ফজলু হক বাপ্পি, নীলফামারী সরকারি কলেজের শিক্ষক কাহারুজ্জামান বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ শেষে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এবং ফিলিস্তিনে শান্তি কামনা করে সমাবেশের সমাপ্তি করা হয়।
নরসিংদী
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে সারাদেশের ন্যায় নরসিংদীতেও বিপুল মানুষ বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে এ প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। নরসিংদী শহরের শিক্ষা চত্বর থেকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এক বিক্ষোভ মিছিল বের করে নরসিংদী জেলখানা মোড়ে এসে প্রতিবাদ সমাবেশ করে কর্মসূচি শেষ হয়।
ঝিনাইদহ
ফিলিস্তিনে লাগাতার বর্বর হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে ঝিনাইদহে বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঝিনাইদহবাসীর আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন— ঝিনাইদহ ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসাইন, কেসি কলেজ প্রভাষক আলমগীর হোসেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের পক্ষে তৌফিক হাসান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে রত্না খাতুন, কেসি কলেজ ছাত্রদের পক্ষে তাসদিদ হাসানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
আরো পড়ুন
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে বান্দরবানে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ
সে সময় বক্তারা বলেন, মুসলিম বিশ্ব দিনের পর দিন চুপ থাকার কারণে আজ এ পরিস্থিতির সৃস্টি হয়েছে। ইসরাইল ন্যাক্কারজনকভাবে যেভাবে মানুষ হত্যা করছে তা রীতিমতো মানবতার চরম লংঘন। ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না। আমরা সবসময় ফিলিস্তিনের মানুষের পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো।
ইবি
ফিলিস্তিনিদের মুক্তি সংগ্রামের প্রতি সংহতি জানিয়ে গ্লোবাল ধর্মঘটের ডাকের প্রতি সাড়া জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৭ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে এ মিছিল শুরু হয়ে পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া বাজার হয়ে পুণরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এসে মিছিল শেষ হয়। পরে সেখানে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন— বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট, ছাত্রশিবির ইবি শাখার সেক্রেটারি আবু ইউসুব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার জনসাধারণ।
ছাত্রশিবির ইবি শাখার সেক্রেটারি আবু ইউসুব বলেন, গত রমজানে গাজাবাসীর ওপর বর্বরচিত হামলা শুরু করেছিল। তারা যুদ্ধ বিরোধী চুক্তিকে উপেক্ষা করে তারা ফিলিস্তিনের ওপর বর্বরোচিত হামলা শুরু করেছিল। রাসুল (স.) সময়েও হুদায়বিয়ার সন্ধি চুক্তি ভঙ্গ করেছিল কাফের সম্প্রদায়। এভাবে তারা যখন যুক্তি ভঙ্গ করেছিল আল্লাহ তায়ালার সাহায্যে তারা পৃথিবীর বুক থেকে মুছে গিয়েছিল। আমরা ইসরাইলিদের বলে দিতে চাই যেহেতু তোমরা চুক্তি ভঙ্গ করেছ, তোমরাও বেশি দিন পৃথিবীর বুকে টিকে থাকতে পারবে না। অতি শীঘ্রই পৃথিবীর মানচিত্র থেকে ইসরাইলকে মুছে ফেলা হবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখনও ইসরাইলি পণ্য ব্যবহৃত হচ্ছে কিন্তু আমরা সচেতন হচ্ছি না। যারা ইসরাইলের পণ্য সরবরাহ করছে তাদেরকে আমরা সচেতন করে দিতে চাই। অতি শীঘ্রই ইসরাইলে পণ্য ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। আমাদের কেউ সচেতন থাকতে হবে যেন আমরা ইসরাইলে পণ্য ব্যবহার না করি। আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানাই অতি শীঘ্রই পাসপোর্ট থেকে ইসরাইল ভ্রমণ নিষিদ্ধ করে দিতে হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে ইসরাইলে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে দিতে হবে এবং ফিলিস্তিনের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে সহযোগিতা করতে হবে।
এ সময় তিনি আরব মুসলিম নেতাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা যদি এমন আচরণ করতে থাকেন তাহলে পৃথিবীর মুসলমান আপনাদেরকে বয়কট করতে বাধ্য হবে।
আরো পড়ুন
গাজাবাসীর প্রতি সংহতি সমাবেশের ডাক রাবি প্রশাসনের, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, আমরা সামনাসামনি দেখতে পাই যে, ফিলিস্তিনের ওপর এ হামলা করছে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী। কিন্তু আমেরিকা যদি তাদের পৃষ্ঠপোষকতা না করতো তাহলে তাদের দ্বারা এটি সম্ভব হতো না। ইসরায়েলের পৃষ্ঠপোষকতা করছে আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বৃটেন এবং ভারত। ইসরায়েলকে বয়কট করার পাশাপাশি এদেরকেও বয়কট করতে হবে। ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডে বোঝা যাচ্ছে, তারা আগামীতেও এই গণহত্যা চালিয়ে যাবে। তাই শুধু বিক্ষোভ মিছিল করেই আমাদের কাজ সীমাবদ্ধ রাখলে হবে না। ইতোমধ্যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের যে দামামা বেজে উঠেছে তার জন্য আমাদেরকেও শারীরিক এবং মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। ইটের বদলে পাটকেল মারতে হবে। যদি আপনি শুধু বিক্ষোভ মিছিল নিয়েই পড়ে থাকেন তাহলে আজ গাযার যে পরিস্থিতি হয়েছে কাল আমাদেরও সেই একই পরিস্থিতি হবে। সারাবিশ্বের সকল মুসলিম জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করার সময় এসে গেছে।