০৬:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি ও অধিকার রক্ষার দিবস মে ডে

  • আপডেট সময়: ০৬:৪৩:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
  • 20

ছবি: সংগৃহীত


হাসান জাহিদ

মে মাসের প্রথম দিনটিকে মে দিবস বলা হয়। এই দিনটি আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস নামেও পরিচিত। শ্রমিকদের অধিকারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে এই দিবসটি পালিত হয়। দিবসটি ১৮৮৬ সালের ১ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর হে মার্কেটে পুলিশ কর্তৃক বিক্ষোভকারী বেশ কয়েকজন শ্রমিককে হত্যার স্মরণে পালিত হয়। শ্রমিকরা ১২ ঘন্টা কর্মদিবস আট ঘন্টা করার দাবি জানিয়েছিলেন।

মে দিবসের একটি বিড়ম্বনা হলো, বাংলাদেশ বা এই উপমহাদেশের অন্য কোথাও কম শ্রমিকেরই এই দিনটি সম্পর্কে কোনো জ্ঞান নেই যা ১৮৮৬ সালে ইলিনয়ের শিকাগোতে বিখ্যাত হে মার্কেটের ঘটনাকে স্মরণ করে।

বিশ্বের অনেক দেশে শ্রমিক আন্দোলনকে স্মরণ করার জন্য মে দিবস পালন করা হয়।

বাংলাদেশে এই দিনটি সরকারি ছুটির দিন। রাষ্ট্রীয়ভাবে পরিচালিত বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার এবং অন্যান্য টিভি চ্যানেলগুলি বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে এবং জাতীয় দৈনিকগুলি এই উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে।

১৮৮৯ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে সমাজতন্ত্রীদের একটি সভা দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকে প্রথম আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের ডাক দেয়া হয়েছিল। ১৮৮৬ সালে শিকাগো, ইলিনয়ের হে মার্কেট স্কয়ার দাঙ্গার পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রতিবাদী শ্রমিকদের সম্মান জানাতে এই দিবসটি পালিত হয়েছিল। আটঘন্টা কর্মদিবসের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে পুলিশি সহিংসতার প্রতিবাদে ৪ মে হে মার্কেট স্কয়ারে এই সমাবেশ ডাকা হয়েছিল। হে মার্কেট স্কয়ারের সমাবেশটি সহিংস হয়ে ওঠে, যদিও কেউ জানে না কে এই সহিংসতা শুরু করেছিলো।

মে দিবস ধীরে ধীরে আরো বেশি দেশে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা সেপ্টেম্বর মাসকে শ্রমিক দিবসে শ্রমিকদের সম্মান জানানো বেছে নেয়। রাশিয়া এবং অন্যান্য কমিউনিস্ট দেশগুলিতে মে দিবস বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। মস্কোতে মে দিবসের কুচকাওয়াজে সাঁজোয়া ট্যাঙ্ক, রকেট এবং সামরিক কর্মীরা জাতির নেতাদের অভিবাদন জানিয়েছিল।

১৯৯৯ সাল থেকে বিশ্বায়ন এবং পুঁজিবাদের প্রতিবাদকারী দলগুলি ১ মে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

বিশ্বের অনেক দেশেই ‘মে ডে’ পরিচিত প্রাচীন এক বসন্তের উৎসব হিসেবে। কিন্তু বর্তমানে এটা বেশি পরিচিত শ্রম দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে। বিশ্বজুড়ে শ্রমিকদের ঐতিহাসিক সংগ্রাম ও অর্জনের কথা মনে করিয়ে দিতেই দিনটি পালিত হয়ে থাকে।

প্রতি বছর কাজের পরিবেশ আরো ভালো করা এবং ট্রেড ইউনিয়নকে আরো শক্তিশালী করার দাবিতে বিশ্বজুড়ে এদিন নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি হতে দেখা যায়।

শুরুর দিকে এই দিবসটি বিভিন্ন সামাজিক ও সমাজতান্ত্রিক সংস্থা এবং শ্রমিক সংগঠনগুলো পালন করতো।

যদিও এই দিবসের পেছনের আসল প্রতিবাদটি হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে, কিন্তু সেখানে এটি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সোমবার পালন করা হয়ে থাকে।

 কীভাবে এর শুরু?

১৮৮৬ সালে ব্রিটিশ সমাজ সংস্কারক রবার্ট ওয়েনের এক চিন্তা থেকে, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রেড ইউনিয়নগুলো দিনে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে এক বিরাট প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করে।

রবার্ট ওয়েন ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি পূরণে স্লোগান ঠিক করেন, ‘আট ঘণ্টা কাজ, আট ঘণ্টা বিনোদন এবং আট ঘণ্টা বিশ্রাম’।

সবচেয়ে বড় আন্দোলনটা হয় পহেলা মে শিকাগোতে, যেখানে প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিক সমবেত হন।

সে সময় কারখানায় কোন নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা বা বিশ্রাম ছাড়াই টানা কাজ করে যাওয়াটা নিয়ম ছিল। আর সেসময় শিকাগো ছিল যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পকারখানা ও ইউনিয়ন সংগঠনগুলোর কেন্দ্র।

পরবর্তী কয়েক দিনে এই আন্দোলনকে ব্যবসায়ী ও রাজনীতি মহল পছন্দ না করলেও, আরও হাজার হাজার ক্ষুব্ধ শ্রমিক ও আন্দোলনকারী এতে যুক্ত হতে থাকেন।

এ সময় কিছু নৈরাজ্যবাদীও এতে যোগ দেন যারা কোন রকম নিয়ম ও আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সামাজিক কাঠামো স্বীকার করেন না।

উত্তেজনা আরো বাড়তে থাকে, পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদর মধ্যে সংঘর্ষ দেখা দেয়, একজন মারা যায় ও অনেকে আহত হয়।

পুলিশি নিষ্ঠুরতায় ক্ষুব্ধ ও উত্তেজিত বিক্ষোভকারী এবং শ্রমিক নেতারা পরদিন ৪ মে শিকাগোর বিখ্যাত হে মার্কেট স্কয়ারে কর্মসূচির ডাক দেন।

এ সময় আজও পরিচয় জানতে না পারা এক ব্যক্তি পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়েন।

ওই বিস্ফোরণের ফলে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, সাতজন পুলিশ সদস্য নিহত হয় এবং ৬৭ জন কর্মকর্তা আহত হয়। চারজন বিক্ষোভকারীও নিহত হয় এবং ৩০ জনেরও বেশি আহত হয়।

এই ঘটনা পরে পরিচিতি পায় হে মার্কেট ম্যাসাকার হিসেবে। পরবর্তীতে আট জন নৈরাজ্যবাদীরা খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত হন এবং তাদের দোষ ঠিকভাবে প্রমাণের আগেই তাদের অনেককে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

এই ঘটনাগুলোর স্মরণে, ১৮৮৯ সালে ২০ দেশের সমাজকর্মী, শ্রমিক নেতা ও ট্রেড ইউনিয়নগুলোর এক আন্তর্জাতিক কংগ্রেসে পহেলা মে তারিখ ‘মে দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা আদায়ে মে দিবসের তাৎপর্য

কিছু স্বার্থান্বেষী মহল মে দিবসের প্রকৃত ইতিহাস গোপন করতে চাইবে, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। তবুও, শ্রমিক ও প্রতিবাদী আন্দোলনকে দমন করার পরিবর্তে, ১৮৮৬ সালের ঘটনাবলী এবং আট ঘন্টা কর্মদিবসের আন্দোলনের মুখপাত্র শিকাগো প্রতিবাদীদের মৃত্যুদণ্ড বহু প্রজন্মের উগ্রপন্থীদের একত্রিত করেছিল। শ্রমিক হিসেবে, সকলেরই মে দিবসকে কেবল এর ঐতিহাসিক তাৎপর্যের জন্যই নয়, বরং আজকের শ্রমিক শ্রেণীর, অর্থাৎ জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিকে কেন্দ্র করে সংগঠিত হওয়ার সময় হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া এবং উদযাপন করা উচিত।

হাসান জাহিদ, কথাশিল্পী, সংগীতশিল্পী ও পরিবেশবিদ

 

উত্তরাধুনিক

Writer, Singer & Environmentalist

শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি ও অধিকার রক্ষার দিবস মে ডে

আপডেট সময়: ০৬:৪৩:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত


হাসান জাহিদ

মে মাসের প্রথম দিনটিকে মে দিবস বলা হয়। এই দিনটি আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস নামেও পরিচিত। শ্রমিকদের অধিকারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে এই দিবসটি পালিত হয়। দিবসটি ১৮৮৬ সালের ১ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর হে মার্কেটে পুলিশ কর্তৃক বিক্ষোভকারী বেশ কয়েকজন শ্রমিককে হত্যার স্মরণে পালিত হয়। শ্রমিকরা ১২ ঘন্টা কর্মদিবস আট ঘন্টা করার দাবি জানিয়েছিলেন।

মে দিবসের একটি বিড়ম্বনা হলো, বাংলাদেশ বা এই উপমহাদেশের অন্য কোথাও কম শ্রমিকেরই এই দিনটি সম্পর্কে কোনো জ্ঞান নেই যা ১৮৮৬ সালে ইলিনয়ের শিকাগোতে বিখ্যাত হে মার্কেটের ঘটনাকে স্মরণ করে।

বিশ্বের অনেক দেশে শ্রমিক আন্দোলনকে স্মরণ করার জন্য মে দিবস পালন করা হয়।

বাংলাদেশে এই দিনটি সরকারি ছুটির দিন। রাষ্ট্রীয়ভাবে পরিচালিত বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার এবং অন্যান্য টিভি চ্যানেলগুলি বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে এবং জাতীয় দৈনিকগুলি এই উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে।

১৮৮৯ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে সমাজতন্ত্রীদের একটি সভা দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকে প্রথম আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের ডাক দেয়া হয়েছিল। ১৮৮৬ সালে শিকাগো, ইলিনয়ের হে মার্কেট স্কয়ার দাঙ্গার পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রতিবাদী শ্রমিকদের সম্মান জানাতে এই দিবসটি পালিত হয়েছিল। আটঘন্টা কর্মদিবসের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে পুলিশি সহিংসতার প্রতিবাদে ৪ মে হে মার্কেট স্কয়ারে এই সমাবেশ ডাকা হয়েছিল। হে মার্কেট স্কয়ারের সমাবেশটি সহিংস হয়ে ওঠে, যদিও কেউ জানে না কে এই সহিংসতা শুরু করেছিলো।

মে দিবস ধীরে ধীরে আরো বেশি দেশে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা সেপ্টেম্বর মাসকে শ্রমিক দিবসে শ্রমিকদের সম্মান জানানো বেছে নেয়। রাশিয়া এবং অন্যান্য কমিউনিস্ট দেশগুলিতে মে দিবস বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। মস্কোতে মে দিবসের কুচকাওয়াজে সাঁজোয়া ট্যাঙ্ক, রকেট এবং সামরিক কর্মীরা জাতির নেতাদের অভিবাদন জানিয়েছিল।

১৯৯৯ সাল থেকে বিশ্বায়ন এবং পুঁজিবাদের প্রতিবাদকারী দলগুলি ১ মে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

বিশ্বের অনেক দেশেই ‘মে ডে’ পরিচিত প্রাচীন এক বসন্তের উৎসব হিসেবে। কিন্তু বর্তমানে এটা বেশি পরিচিত শ্রম দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে। বিশ্বজুড়ে শ্রমিকদের ঐতিহাসিক সংগ্রাম ও অর্জনের কথা মনে করিয়ে দিতেই দিনটি পালিত হয়ে থাকে।

প্রতি বছর কাজের পরিবেশ আরো ভালো করা এবং ট্রেড ইউনিয়নকে আরো শক্তিশালী করার দাবিতে বিশ্বজুড়ে এদিন নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি হতে দেখা যায়।

শুরুর দিকে এই দিবসটি বিভিন্ন সামাজিক ও সমাজতান্ত্রিক সংস্থা এবং শ্রমিক সংগঠনগুলো পালন করতো।

যদিও এই দিবসের পেছনের আসল প্রতিবাদটি হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে, কিন্তু সেখানে এটি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সোমবার পালন করা হয়ে থাকে।

 কীভাবে এর শুরু?

১৮৮৬ সালে ব্রিটিশ সমাজ সংস্কারক রবার্ট ওয়েনের এক চিন্তা থেকে, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রেড ইউনিয়নগুলো দিনে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে এক বিরাট প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করে।

রবার্ট ওয়েন ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি পূরণে স্লোগান ঠিক করেন, ‘আট ঘণ্টা কাজ, আট ঘণ্টা বিনোদন এবং আট ঘণ্টা বিশ্রাম’।

সবচেয়ে বড় আন্দোলনটা হয় পহেলা মে শিকাগোতে, যেখানে প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিক সমবেত হন।

সে সময় কারখানায় কোন নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা বা বিশ্রাম ছাড়াই টানা কাজ করে যাওয়াটা নিয়ম ছিল। আর সেসময় শিকাগো ছিল যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পকারখানা ও ইউনিয়ন সংগঠনগুলোর কেন্দ্র।

পরবর্তী কয়েক দিনে এই আন্দোলনকে ব্যবসায়ী ও রাজনীতি মহল পছন্দ না করলেও, আরও হাজার হাজার ক্ষুব্ধ শ্রমিক ও আন্দোলনকারী এতে যুক্ত হতে থাকেন।

এ সময় কিছু নৈরাজ্যবাদীও এতে যোগ দেন যারা কোন রকম নিয়ম ও আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সামাজিক কাঠামো স্বীকার করেন না।

উত্তেজনা আরো বাড়তে থাকে, পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদর মধ্যে সংঘর্ষ দেখা দেয়, একজন মারা যায় ও অনেকে আহত হয়।

পুলিশি নিষ্ঠুরতায় ক্ষুব্ধ ও উত্তেজিত বিক্ষোভকারী এবং শ্রমিক নেতারা পরদিন ৪ মে শিকাগোর বিখ্যাত হে মার্কেট স্কয়ারে কর্মসূচির ডাক দেন।

এ সময় আজও পরিচয় জানতে না পারা এক ব্যক্তি পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়েন।

ওই বিস্ফোরণের ফলে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, সাতজন পুলিশ সদস্য নিহত হয় এবং ৬৭ জন কর্মকর্তা আহত হয়। চারজন বিক্ষোভকারীও নিহত হয় এবং ৩০ জনেরও বেশি আহত হয়।

এই ঘটনা পরে পরিচিতি পায় হে মার্কেট ম্যাসাকার হিসেবে। পরবর্তীতে আট জন নৈরাজ্যবাদীরা খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত হন এবং তাদের দোষ ঠিকভাবে প্রমাণের আগেই তাদের অনেককে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

এই ঘটনাগুলোর স্মরণে, ১৮৮৯ সালে ২০ দেশের সমাজকর্মী, শ্রমিক নেতা ও ট্রেড ইউনিয়নগুলোর এক আন্তর্জাতিক কংগ্রেসে পহেলা মে তারিখ ‘মে দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা আদায়ে মে দিবসের তাৎপর্য

কিছু স্বার্থান্বেষী মহল মে দিবসের প্রকৃত ইতিহাস গোপন করতে চাইবে, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। তবুও, শ্রমিক ও প্রতিবাদী আন্দোলনকে দমন করার পরিবর্তে, ১৮৮৬ সালের ঘটনাবলী এবং আট ঘন্টা কর্মদিবসের আন্দোলনের মুখপাত্র শিকাগো প্রতিবাদীদের মৃত্যুদণ্ড বহু প্রজন্মের উগ্রপন্থীদের একত্রিত করেছিল। শ্রমিক হিসেবে, সকলেরই মে দিবসকে কেবল এর ঐতিহাসিক তাৎপর্যের জন্যই নয়, বরং আজকের শ্রমিক শ্রেণীর, অর্থাৎ জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিকে কেন্দ্র করে সংগঠিত হওয়ার সময় হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া এবং উদযাপন করা উচিত।

হাসান জাহিদ, কথাশিল্পী, সংগীতশিল্পী ও পরিবেশবিদ