
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে এ বছর আগাম জাতের কচুর মুখি চাষ করে লাভবান হয়েছেন কৃষকরা। মুখিকচু লাভজনক হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে এর আবাদ। ধানসহ অন্যান্য ফসলের চেয়ে মুখি কচু লাভজনক।
সরেজমিনে গিয়ে গজারিয়া ইউনিয়নের মানিকদী গ্রামের অধিকাংশ ফসলি জমিতে দেখা যায় মুখি কচুর ফলন। জমিতে পুরুষের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরাও কাজ করছেন। কেউ গাছের গোড়া থেকে মাটি খুড়ে মুখির ছড়া তুলছেন আবার কেউবা ছড়া থেকে মুখি আলাদা করছেন। প্রক্রিয়া শেষ করে জমি থেকেই বস্তায় ভরছেন বাজার জাত করার জন্য।
একদিকে মুখির বাজার দর ভালো, অন্যদিকে আবার কাল বৈশাখির আশঙ্কা। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যেই জমি থেকে মুখি উত্তোলন করছেন কৃষকরা। প্রতি বিঘা জমিতে মুখিকচু চাষে খরচ হয় ত্রিশ থেকে বত্রিশ হাজার টাকা, আর বিক্রি করা যায় নব্বই হাজার থেকে এক লাখ টাকা।
প্রতি কেজি মুখির বর্তমান বাজার দর একশ টাকা থেকে একশ বিশ টাকা। বিজ রোপণ থেকে শুরু করে ফলন উত্তোলন পর্যন্ত খরচ বাদ দিয়ে কৃষক প্রতি বিঘায় লাভ করছেন লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা। মুখি চাষে পরিশ্রম বেশি হলেও এতে লাভ বেশি।
মানিকদী পাড়াতলা গ্রামের কৃষক রেনু মিয়া বলেন, আমাদের মুখি চাষ দেখে অত্র অঞ্চলের অনেক কৃষক আবাদ শুরু করেছে। প্রতি বিঘা জমিতে ষাট থেকে সত্তর মণ ফলন হচ্ছে। পাইকাররা জমি থেকেই কিনে নিচ্ছেন।
কৃষক আসাবুদ্দিন বলেন, ‘আমাদের আট বিঘা জমিতে মোট খরচ হয়েছে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা। বাজার দর ভাল থাকলে আট বিঘা জমির মুখি পনেরো থেকে ষোল লক্ষ টাকা বিক্রি করতে পারবো। সকল খরচ বাদে আমার আট থেকে নয় লক্ষ টাকা লাভ হতে পারে।’
এ বিষয়ে শ্রমিক আবুল কালামের সাথে কথা হলে তিরি বলেন, ধান চাষ থেকে মুখি কচুতে অনেক লাভ। ধান চাষে অনেক সময় ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে, মুখিতে সেটা থাকেনা। জমি থেকে মুখি উত্তোলন করে আমরা প্রতিদিন মজুরি হিসেবে আটশ থেকে নয় শ টাকা পাচ্ছি।’
উপজেলা কৃষি অফিসার আকলিমা বেগম বলেন, ‘ভৈরব উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে আগাম জাতের মুখি কচুর আবাদ দিন দিন বাড়ছে। মুখিকচু লাভজনক ফসল হওয়ায় পাশের ইউনিয়নগুলোর কৃষকরাও মুখিকচু আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের মাঝে বিভিন্ন রকমের কৃষি উপকরণ বিতরণসহ মাঠ পর্যায়ে কৃষি অফিসারগণ কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।’ সংবাদ অনলাইন