১০:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

টাইব্রেকারে জিততে ব্যর্থ হলো বাংলাদেশের যুবারা

  • আপডেট সময়: ০৬:৩২:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
  • 19

যুব সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের টাইব্রেকার শেষ হতেই উদাস মনে গোলবারের পাশে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের গোলরক্ষক ইসমাইল হোসেন। সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়ন করার দারুণ সুযোগ এনে দিয়েও সতীর্থদের ব্যর্থতায় তা ভেস্তে যাওয়ায় বাকরুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। আর মাঠের অন্য পাশে ভারতের যুবাদের উল্লাসের বিপরীতে তার সতীর্থরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

পড়ারই কথা! টাইব্রেকারে ভারতের নেওয়া দ্বিতীয় শট আটকিয়ে বাংলাদেশকে শিরোপা ধরে রাখার সুযোগ করে দিয়েছিলেন ইসমাইল।

কিন্তু নাজমুল হুদা ও সালাহ উদ্দিন শাহেদ শেষ দুটি শটে গোল করতে ব্যর্থ হলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন যায় ভেসে। ভারতের হয়ে শেষ শট নিয়ে পুরো স্টেডিয়ামকে আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন অধিনায়ক সিঙ্গামায়ুম শামি। তাতে ৪-৩ গোলে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত।

এর আগে অরুণাচলের গোল্ডেন জুবিলি স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরু হতে না হতেই গোলের দেখা পায় ভারত।

দ্বিতীয় মিনিটে প্রায় মাঝ মাঠ থেকে ফ্রি কিক নিয়ে বাংলাদেশের জাল খুঁজে নেন সিঙ্গামায়ুম শামির। তবে ভুলটা করেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক ইসমাইল হোসেন। ফ্রি কিকটা দূরের হওয়ায় গোলবার ছেড়ে একটু সামনে বেরিয়ে এসেছিলেন তিনি। সেটা বুঝতে পেরেই ভারতের অধিনায়ক গোলবারে শট নেন, একটু একটু করে পিছিয়েও পরে বলের নাগাল পাননি বাংলাদেশের গোলরক্ষক।

১৩ মিনিটে আরেকটি গোল প্রায়ই পেয়েই গিয়েছিল ভারত। ভারতের আক্রমণভাগের খেলোয়াড় রোহেন সিংয়ের শট ধরতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন ইসমাইল। সেই বল পেয়ে ওমং ডোডুম বল বাড়ান প্রশান জোজোর কাছে। তার শট গোলবারের দিকে যেতে থাকলে বাংলাদেশের রক্ষণভাগের এক খেলোয়াড় কোনো রকমে সেভ করেন।

এরপর দুই মিনিটের মধ্যে আরেনাও দুটি আক্রমণ হয়।

তাতে বাংলাদেশের ত্রাণকর্তা হয়ে দাঁড়ান ইসমাইল। বিশেষ করে ১৬ মিনিটের সময় যেভাবে গোলবার থেকে বেরিয়ে এসে অবিশ্বাস্যভাবে সেভটা করলেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক।

৩০ মিনিটে গোল শোধ দেওয়ার প্রায় কাছাকাছি পৌঁছেছিল। তবে নাজমুল হুদা ফয়সালের কর্নার কিক থেকে মিঠু চৌধুরী হেড নিলে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের শরীরে লাগায় বলটা আর জালে জড়ায়নি। তাতে বাংলাদেশের সমতায়ও ফেরা হয়নি।

৬০ মিনিটে দুর্দান্ত এক শট নিয়েছিলেন মোরশেদ আলি। তবে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া তার শটটা কর্নারের বিনিময়ে দারুণভাবে প্রতিহত করেন সুরজ সিংহ। সেই যাত্রায় ভারতকে রক্ষা করলেও কর্নার থেকে জাল অক্ষত রাখতে পারেননি ভারতের গোলরক্ষক। বাংলাদেশের নেওয়া সেট পিসে ভারতের বক্সে শুরুতে বেশ জটলা বাঁধে। এরই ফাঁকে গোল করে সুপার সাব বনে যান বদলি নামা জয় আহমেদ।

জয়ের নেওয়া শটটি হাতে লাগালেও গতির কাছে ঠিকই পরাস্ত হয়েছেন ভারতের গোলরক্ষক সুরজ। দলকে সমতায় ফেরানোর পর উদযাপনটাও করলেন দেখার মতো। মাঠে ডান প্রান্ত থেকে এক চক্কর দিয়ে বাঁ প্রান্তে এসে মুখ আঙুল দিয়ে দর্শকদের চুপ থাকার ইঙ্গিত করেন জয়।

যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে আরেকটি দারুণ সেভ করেন ইসমাইল। তবে ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশকে বড় বিপদ থেকে রক্ষা করেন মিঠু। গোল বাঁচাতে সামনে এসে বাংলাদেশের গোলরক্ষক ইসমাইল বল গ্লাভসে নিতে না পারলে ভারতের আব্বাস শট নিলে গোলমুখ থেকে বল ক্লিয়ার করেন মিঠু।

নির্ধারিত সময় শেষে ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র হলে টুর্নামেন্টের বাইলজ অনুযায়ী টাইব্রেকারে গড়ায়। তাতে ভারতের ফরোয়ার্ড রোহেনের বল আটকিয়ে দিয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখান ইসমাইল। কিন্তু চতুর্থ শট নিতে এসে বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হুদা ফয়সাল বারের ওপর দিয়ে বল মারেন। শেষ শট নিতে এসে সালাহ উদ্দিন শাহেদও ব্যর্থ হন। তার শট সেভ করে দেন ভারতের গোলরক্ষক সুরজ। অন্যদিকে ভারতের অধিনায়ক শামি শট নিয়ে পুরো স্টেডিয়ামকে আনন্দে ভাসান। তাতে ৪-৩ ব্যবধানে যুব চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত।

উত্তরাধুনিক

Writer, Singer & Environmentalist

টাইব্রেকারে জিততে ব্যর্থ হলো বাংলাদেশের যুবারা

আপডেট সময়: ০৬:৩২:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

যুব সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের টাইব্রেকার শেষ হতেই উদাস মনে গোলবারের পাশে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের গোলরক্ষক ইসমাইল হোসেন। সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়ন করার দারুণ সুযোগ এনে দিয়েও সতীর্থদের ব্যর্থতায় তা ভেস্তে যাওয়ায় বাকরুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। আর মাঠের অন্য পাশে ভারতের যুবাদের উল্লাসের বিপরীতে তার সতীর্থরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

পড়ারই কথা! টাইব্রেকারে ভারতের নেওয়া দ্বিতীয় শট আটকিয়ে বাংলাদেশকে শিরোপা ধরে রাখার সুযোগ করে দিয়েছিলেন ইসমাইল।

কিন্তু নাজমুল হুদা ও সালাহ উদ্দিন শাহেদ শেষ দুটি শটে গোল করতে ব্যর্থ হলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন যায় ভেসে। ভারতের হয়ে শেষ শট নিয়ে পুরো স্টেডিয়ামকে আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন অধিনায়ক সিঙ্গামায়ুম শামি। তাতে ৪-৩ গোলে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত।

এর আগে অরুণাচলের গোল্ডেন জুবিলি স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরু হতে না হতেই গোলের দেখা পায় ভারত।

দ্বিতীয় মিনিটে প্রায় মাঝ মাঠ থেকে ফ্রি কিক নিয়ে বাংলাদেশের জাল খুঁজে নেন সিঙ্গামায়ুম শামির। তবে ভুলটা করেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক ইসমাইল হোসেন। ফ্রি কিকটা দূরের হওয়ায় গোলবার ছেড়ে একটু সামনে বেরিয়ে এসেছিলেন তিনি। সেটা বুঝতে পেরেই ভারতের অধিনায়ক গোলবারে শট নেন, একটু একটু করে পিছিয়েও পরে বলের নাগাল পাননি বাংলাদেশের গোলরক্ষক।

১৩ মিনিটে আরেকটি গোল প্রায়ই পেয়েই গিয়েছিল ভারত। ভারতের আক্রমণভাগের খেলোয়াড় রোহেন সিংয়ের শট ধরতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন ইসমাইল। সেই বল পেয়ে ওমং ডোডুম বল বাড়ান প্রশান জোজোর কাছে। তার শট গোলবারের দিকে যেতে থাকলে বাংলাদেশের রক্ষণভাগের এক খেলোয়াড় কোনো রকমে সেভ করেন।

এরপর দুই মিনিটের মধ্যে আরেনাও দুটি আক্রমণ হয়।

তাতে বাংলাদেশের ত্রাণকর্তা হয়ে দাঁড়ান ইসমাইল। বিশেষ করে ১৬ মিনিটের সময় যেভাবে গোলবার থেকে বেরিয়ে এসে অবিশ্বাস্যভাবে সেভটা করলেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক।

৩০ মিনিটে গোল শোধ দেওয়ার প্রায় কাছাকাছি পৌঁছেছিল। তবে নাজমুল হুদা ফয়সালের কর্নার কিক থেকে মিঠু চৌধুরী হেড নিলে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের শরীরে লাগায় বলটা আর জালে জড়ায়নি। তাতে বাংলাদেশের সমতায়ও ফেরা হয়নি।

৬০ মিনিটে দুর্দান্ত এক শট নিয়েছিলেন মোরশেদ আলি। তবে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া তার শটটা কর্নারের বিনিময়ে দারুণভাবে প্রতিহত করেন সুরজ সিংহ। সেই যাত্রায় ভারতকে রক্ষা করলেও কর্নার থেকে জাল অক্ষত রাখতে পারেননি ভারতের গোলরক্ষক। বাংলাদেশের নেওয়া সেট পিসে ভারতের বক্সে শুরুতে বেশ জটলা বাঁধে। এরই ফাঁকে গোল করে সুপার সাব বনে যান বদলি নামা জয় আহমেদ।

জয়ের নেওয়া শটটি হাতে লাগালেও গতির কাছে ঠিকই পরাস্ত হয়েছেন ভারতের গোলরক্ষক সুরজ। দলকে সমতায় ফেরানোর পর উদযাপনটাও করলেন দেখার মতো। মাঠে ডান প্রান্ত থেকে এক চক্কর দিয়ে বাঁ প্রান্তে এসে মুখ আঙুল দিয়ে দর্শকদের চুপ থাকার ইঙ্গিত করেন জয়।

যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে আরেকটি দারুণ সেভ করেন ইসমাইল। তবে ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশকে বড় বিপদ থেকে রক্ষা করেন মিঠু। গোল বাঁচাতে সামনে এসে বাংলাদেশের গোলরক্ষক ইসমাইল বল গ্লাভসে নিতে না পারলে ভারতের আব্বাস শট নিলে গোলমুখ থেকে বল ক্লিয়ার করেন মিঠু।

নির্ধারিত সময় শেষে ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র হলে টুর্নামেন্টের বাইলজ অনুযায়ী টাইব্রেকারে গড়ায়। তাতে ভারতের ফরোয়ার্ড রোহেনের বল আটকিয়ে দিয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখান ইসমাইল। কিন্তু চতুর্থ শট নিতে এসে বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হুদা ফয়সাল বারের ওপর দিয়ে বল মারেন। শেষ শট নিতে এসে সালাহ উদ্দিন শাহেদও ব্যর্থ হন। তার শট সেভ করে দেন ভারতের গোলরক্ষক সুরজ। অন্যদিকে ভারতের অধিনায়ক শামি শট নিয়ে পুরো স্টেডিয়ামকে আনন্দে ভাসান। তাতে ৪-৩ ব্যবধানে যুব চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত।