গ্রীষ্মের তাপ এখন তুঙ্গে। ঘরের বাইরে বের হলে শরীর যেন জ্বলে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে শান্তি আর স্বস্তির জন্য এয়ার কন্ডিশনার বা এসির বিকল্প নেই। একটা সময় এটি বিলাসি পণ্য ভাবা হলেও বর্তমানে প্রয়োজনীয় সামগ্রী হয়ে দাঁড়িয়েছে। গরম থেকে বাঁচতে এসি তো ব্যবহার করবেনই, তবে কিছু নিয়ম মানা জরুরি। এতে যন্ত্রটি দীর্ঘদিন ভালো থাকে।
অনেকে বাইরে থেকে ঘরে ফিরে দ্রুত ঘরকে ঠান্ডা করতে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এসি চালান। যা শরীর বা বিদ্যুতের খরচ কোনো দিক থেকেই ভালো নয়। গরম থেকে মুক্তি পেতে এসি সবসময় ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে চালানো উচিত।
এসি কেন তাপমাত্রা ২৪° সেলসিয়াস রাখা উচিত?
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এয়ার কন্ডিশনারের ডিফল্ট তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এতে কেবল বিদ্যুৎ খরচই সাশ্রয় হবে না বরং আপনার বার্ষিক বিদ্যুৎ বিলও কমবে প্রায় ৪,০০০ টাকা। আবার আপনি যদি ২৭ ডিগ্রি তাপমাত্রায় এসি চালান তাহলে বার্ষিক বিল ১৮ ডিগ্রির তুলনায় প্রায় ৬,৫০০ টাকা কমে যাবে।
এয়ার কন্ডিশনারের তাপমাত্রা প্রতি ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ালে ৬ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২১ ডিগ্রির পরিবর্তে ২৪ ডিগ্রিতে সেট করলে ১৮ শতাংশ এনার্জি সাশ্রয় হবে।
এই হিসাব অনুযায়ী, এয়ার কন্ডিশনারের তাপমাত্রা ২৪° সেলসিয়াসে সেট করে মোট বিদ্যুৎ সংরক্ষণের সম্ভাবনা বার্ষিক ২০ বিলিয়ন ইউনিট (যার মূল্য ১০,০০০ কোটি টাকা) হতে পারে। যদি ৫০ শতাংশ মানুষ এই নিয়ম মানেন, তাহলে এটি প্রায় ১০ বিলিয়ন ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে, যা প্রতি বছর ৮.২ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড হ্রাসের সমতুল্য হতে পারে।
স্বাস্থ্যও থাকবে ভালো
আমেরিকান সোসাইটি অফ হিটিং, রেফ্রিজারেটিং অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং ইঞ্জিনিয়ার্স কর্তৃক পরিচালিত গবেষণা অনুযায়ী, ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রায় ঘুমালে শ্বাসযন্ত্রের রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। এছাড়াও দেখা দিতে পারে বুকে সংক্রমণ, শরীরে শুষ্কতা, মাথাব্যথা এবং জয়েন্টে ব্যথার মতো সমস্যাও। এমন পরিস্থিতিতে, ২৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ঘুমানো স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
মনে রাখবেন, যখন এসি থার্মোস্ট্যাটে সেট করা থাকে, তখন এটি ঘরের ভেতরের বাতাসের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে এবং তাপমাত্রা সঠিক হলে কম্প্রেসার বন্ধ করে দেয়। অর্থাৎ, যদি এসির তাপমাত্রা কম মাত্রায় সেট করা হয়, তাহলে কম্প্রেসার বেশিক্ষণ কাজ করবে। এতে যন্ত্রের ওপর চাপ বাড়বে।
