০৩:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

কতটা দর্শক টানতে পারছে ঈদের সিনেমা?  

  • আপডেট সময়: ১০:৩০:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
  • 22

মুক্তির মিছিলে ১১টির মতো সিনেমা থাকলেও শেষ পর্যন্ত এবারের কোরবানি ঈদে প্রেক্ষাগৃহে এসেছে ৬ সিনেমা। এগুলো হলো— তাণ্ডব, ইনসাফ, নীল চক্র, উৎসব, এশা মার্ডার ও টগর।

মাল্টিপ্লেক্সের পাশাপাশি নিয়মিত ও মৌসুমী মিলিয়ে ১৩৯টির মতো সিঙ্গেল স্ক্রিনে প্রদর্শিত হচ্ছে এই সিনেমাগুলো। সবাই নিজের ছবিকে সেরার তালিকায় রাখলেও আসলে এগিয়ে কোন ছবি?

মাল্টিপ্লেক্স 

ঈদ উৎসবে পূর্ণতা আনে শাকিব খানের সিনেমা। সিঙ্গেল স্ক্রিন, মাল্টিপ্লেক্স— দুই জায়গায়-ই তার রাজত্ব। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি।

স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ঈদের সময় আমরা প্রচুর দর্শক পাই। এবারও ব্যতিক্রম হচ্ছে না। কমবেশি সবগুলো ছবি-ই ভালো যাচ্ছে। তবে এগিয়ে আছে ‘তাণ্ডব’। ছবিটি হুড়মুড়িয়ে দেখছেন সবাই। দ্বিতীয় স্থান রয়েছে ‘উৎসব’। অপ্রত্যাশিতভাবে ছবিটি উঠে এসেছে। তৃতীয় স্থানে ‘ইনসাফ’ রয়েছে। এরপর ‘নীল চক্র’, ‘এশা মার্ডার’। ‘টগর’ ডিজাস্টার ছিল।

ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ছয় সিনেমার পাঁচটি চলছে যমুনা ব্লকবাস্টারে। ছবিগুলো নিয়ে ব্লকবাস্টারের মার্কেটিং বিভাগের সহকারী ম্যানেজার মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘‘আমাদের এখানে বেশ রমরমা অবস্থা। ঈদের ছুটি উপভোগ করতে সিনেমা দেখতে আসছেন সবাই। চাহিদার তুঙ্গে রয়েছে ‘তাণ্ডব’। প্রচুর দর্শক পাচ্ছি। সেজন্য শো-ও বাড়িয়েছি। ১১টিরও বেশি শো চলছে। সব শো-ই মোটামুটি হাউজফুল চলছে। এরপরের স্থানে আছে ‘উৎসব’ ও ‘ইনসাফ’। উৎসব একটু আলাদা ঘরানার সিনেমা। পরিবারের সবাই মিলে দেখছেন। রোজ দুইটা করে শো চলছে ছবিটির। দুটোই পিক টাইমে। বিকেলে ও সন্ধ্যায়। ইনসাফও দর্শক টানছে। ঈদে ছবিগুলোর মধ্যে দর্শকপ্রিয়তায় এই ছবি তিনটি এগিয়ে আছে। ‘নীলচক্র’ ও ‘এশা মার্ডার’ গড়পড়তা চলছে। ‘টগর’ সিনেমাটি দর্শক পায়নি বলে নেমে গেছে।’’

ঢাকার অদূরে কেরানিগঞ্জে অবস্থিত লায়ন সিনেমাসের কর্ণধার মির্জা আব্দুল খালেক বলেন, ‘‘আমার এখানে ‘তাণ্ডব’ নিয়ে দর্শকের আগ্রহ বেশি। অধিকাংশ দর্শক শাকিব খানের ছবিটি দেখতে আসছেন। হাউজফুল যাচ্ছে। এরপর ‘ইনসাফ’কে রাখা যায়। মোটামুটি যাচ্ছে। দুটি করে শো চলছে। দুপুরে ২৫-৩০ ভাগ দর্শক পাচ্ছি। সন্ধ্যার শো খুব ভালো যাচ্ছে। বাকিগুলো নিয়ে বলার মতো কিছু নেই। দর্শক আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তবে শুনেছি ঢাকার দিকে ‘উৎসব সিনেমাটা বেশ ভালো করছে। তবে আমাদের এদিকে ছবিটির দর্শক নেই। সেকারণে হয়তো দর্শক টানতে পারছে না।’’

সিঙ্গেল স্ক্রিন 

সিঙ্গেল স্ক্রিনের মালিকরা লাভের গুড় তুলতে শাকিবে ভরসা পান। অন্যদের ওপর আস্থা নেই তাদের। ফলে এবারও সেখানে একক রাজত্ব ঢালিউড ভাইজানের। দেশজুড়ে ১৩০ টি সিঙ্গেল স্ক্রিনে চলছে ‘তাণ্ডব’।

ঢাকার ঐতিহ্যবাহী মধুমিতা সিনেমা হল শাকিব খানের ঘাটি হিসেবে পরচিত। সেখানে কেমন চলছে তাণ্ডব জানতে চাইলে হলের কর্ণধার ইফতেখার নওশাদ বলেন, ‘ভালো-ই চলছে। আমি সেদিন হলে গিয়েছিলাম। দর্শকের প্রতিক্রিয়া দেখলাম। নিশো ও সিয়ামের ক্যামিওর অংশ তারা বেশ উপভোগ করেছেন। সবাইকে হাত তালি দিতে দেখলাম।’

তবে তার কথায় সন্তুষ্টির ঘাটতি পাওয়া যায়। নওশাদ বলেন, ‘‘বরবাদ’ ও ‘তুফানে’র ক্রেজটা ‘তাণ্ডবে’র ক্ষেত্রে দেখতে পাচ্ছি না। আমার হলের এসিটা ভালো কাজ করছে না। এই গরমে দর্শকের অসুবিধা হচ্ছে। এটা একটা কারণ হতে পারে। তাছাড়া আমার মনে হয় শুধু অ্যাকশনধর্মী ছবির ওপর নির্ভর করলে চলবে না। রোমান্টিক সিনেমা প্রয়োজন। প্রেমের সিনেমার প্রচুর দর্শক আছে।’’

রাজধানীর শ্যমলীতে চলছে ‘তাণ্ডব’। যাচ্ছে হাউজফুল। সন্তুষ্ট হল কর্তৃপক্ষ। ফুটে উঠল হলের হাউজম্যান আহসান উল্লাহর কথায়। তিনি বলেন, ‘ভালো চলছে ছবিটি। প্রায় সবগুলো শো হাউজফুল যাচ্ছে। আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। দর্শকের রিভিউ ভালো। এরকম ছবি হলে হাল মালিকদের দুর্দশা কেটে যাবে বলে মনে হচ্ছে।’

খুলনার সঙ্গীতা সিনেমা হলে চলছে ‘ইনসাফ’। সিনেমাটি মোটামুটি দর্শক টানছে বলে জানালেন হলটির সমন্বয়কারী আতাহার আলী। তিনি বলেন, ‘আমরা যতটা প্রত্যাশা করেছিলাম ততটা না হলেও খারাপ যাচ্ছে না। মোটামুটি ভালোই বলা যায়। এরকম থাকলে আশা করি ভালোই হবে।’

ছবিটি নিয়ে তার মন্তব্য, ‘প্রথমার্ধ কিছুটা ঝুলে গেলেও শেষার্ধে তা পুষিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আইটেম সংটা শেষে না দিয়ে অন্য কোথাও দিলে ভালো হতো। এটা দর্শকের রিভিউ।’

দিনাজপুরের পুরনো একটি হল মডার্ন সিনেমা হল। কর্তৃপক্ষ হলটি চালাতে আগ্রহী নয়। সেকারণে মেরামত করা হয়নি। তারপরও দর্শক আসছে শাকিবের নামে। হলের ব্যবস্থাপক মো. রেজা বললেন, ‘আমাদের হল অনেক পুরনো। নতুন করে মেরামত করা হয়নি। দর্শক যা আসার শাকিব খানের জন্য আসছেন। ওই জায়গা থেকে খারাপ যাচ্ছে না। প্রত্যাশা পূরণ করেছে। হাউজফুল না হলেও ভালোই দর্শক হচ্ছে।’

চট্টগ্রামের সুগন্ধা সিনেমা হলে চলছে ‘তাণ্ডব’। ছবিটি ভালোই চলছে জানালেন সিনেমা হলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ হোসাইন। তিনি বলেন, ‘ভালোই যাচ্ছে। দর্শক রিভিউ ভালো পাচ্ছি। মোটামুটি দর্শক পাচ্ছি। ঈদের ছুটিতে অনেকেই বাড়ি চলে গেছেন বলে দর্শক সংখ্যায় ঘাটতি আছে। তবে আমরা যে প্রত্যাশা করেছিলাম সেটি পূরণ করতে পেরেছে।’

দেশের বৃহত্তম সিনেমা হল যশোর মণিহারে চলছে ‘তাণ্ডব’। কিন্তু ছবিটি সন্তুষ্ট করতে পারেনি হল কর্তৃপক্ষকে। হলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তোফাজ্জেল হোসেন ‘আমাদের এখানে একসঙ্গে এক হাজার দর্শক সিনেমা উপভোগের সুযোগ থাকলেও সর্বোচ্চ সাড়ে চারশো দর্শক হয়েছে। প্রত্যাশা বেশি থাকলেও সেভাবে দর্শকদের সাড়া পাওয়া যায়নি।’

যা বলছে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি

তবে ঈদের সিনেমাগুলো নিয়ে সন্তুষ্ট নন চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস।   তার কথায়, ‘‘কোনো সিনেমাই আহামরি যাচ্ছে না। তুলনামূলকভাবে তাণ্ডব এগিয়ে থাকলেও তুফান, বরবাদ, প্রিয়তমার মতো দর্শক টানতে পারছে না। আমাদের প্রত্যশা পূরণ করতে পারেনি। ছবির গল্প সেভাবে ছুঁতে পারেনি দর্শকদের। ’’

আরও বলেন, ‘‘দ্বিতীয় স্থানে ‘ইনসাফ’। মোটামুটি দর্শক টানতে পারছে। বাকি ছবিগুলো নিয়ে কিছু বলার নেই। উৎসব ছবির গল্প আলাদা এবং তারকাবহুল হওয়ায় দর্শকের আগ্রহ জাগছে। তবে মনে করি না। সেরকম কিছু হবে।’’

প্রদর্শক সমিতির সহ সভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন এগিয়ে রাখছেন ‘তাণ্ডব’কে। তিনি বলেন, ‘হল মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যেটুকু জানলাম তাতে বলা যায় সবচেয়ে ভালো যাচ্ছে ‘তাণ্ডব’। এরপর রয়েছে ‘ইনসাফ’।’’

 

উত্তরাধুনিক

Writer, Singer & Environmentalist

কতটা দর্শক টানতে পারছে ঈদের সিনেমা?  

আপডেট সময়: ১০:৩০:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫

মুক্তির মিছিলে ১১টির মতো সিনেমা থাকলেও শেষ পর্যন্ত এবারের কোরবানি ঈদে প্রেক্ষাগৃহে এসেছে ৬ সিনেমা। এগুলো হলো— তাণ্ডব, ইনসাফ, নীল চক্র, উৎসব, এশা মার্ডার ও টগর।

মাল্টিপ্লেক্সের পাশাপাশি নিয়মিত ও মৌসুমী মিলিয়ে ১৩৯টির মতো সিঙ্গেল স্ক্রিনে প্রদর্শিত হচ্ছে এই সিনেমাগুলো। সবাই নিজের ছবিকে সেরার তালিকায় রাখলেও আসলে এগিয়ে কোন ছবি?

মাল্টিপ্লেক্স 

ঈদ উৎসবে পূর্ণতা আনে শাকিব খানের সিনেমা। সিঙ্গেল স্ক্রিন, মাল্টিপ্লেক্স— দুই জায়গায়-ই তার রাজত্ব। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি।

স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ঈদের সময় আমরা প্রচুর দর্শক পাই। এবারও ব্যতিক্রম হচ্ছে না। কমবেশি সবগুলো ছবি-ই ভালো যাচ্ছে। তবে এগিয়ে আছে ‘তাণ্ডব’। ছবিটি হুড়মুড়িয়ে দেখছেন সবাই। দ্বিতীয় স্থান রয়েছে ‘উৎসব’। অপ্রত্যাশিতভাবে ছবিটি উঠে এসেছে। তৃতীয় স্থানে ‘ইনসাফ’ রয়েছে। এরপর ‘নীল চক্র’, ‘এশা মার্ডার’। ‘টগর’ ডিজাস্টার ছিল।

ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ছয় সিনেমার পাঁচটি চলছে যমুনা ব্লকবাস্টারে। ছবিগুলো নিয়ে ব্লকবাস্টারের মার্কেটিং বিভাগের সহকারী ম্যানেজার মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘‘আমাদের এখানে বেশ রমরমা অবস্থা। ঈদের ছুটি উপভোগ করতে সিনেমা দেখতে আসছেন সবাই। চাহিদার তুঙ্গে রয়েছে ‘তাণ্ডব’। প্রচুর দর্শক পাচ্ছি। সেজন্য শো-ও বাড়িয়েছি। ১১টিরও বেশি শো চলছে। সব শো-ই মোটামুটি হাউজফুল চলছে। এরপরের স্থানে আছে ‘উৎসব’ ও ‘ইনসাফ’। উৎসব একটু আলাদা ঘরানার সিনেমা। পরিবারের সবাই মিলে দেখছেন। রোজ দুইটা করে শো চলছে ছবিটির। দুটোই পিক টাইমে। বিকেলে ও সন্ধ্যায়। ইনসাফও দর্শক টানছে। ঈদে ছবিগুলোর মধ্যে দর্শকপ্রিয়তায় এই ছবি তিনটি এগিয়ে আছে। ‘নীলচক্র’ ও ‘এশা মার্ডার’ গড়পড়তা চলছে। ‘টগর’ সিনেমাটি দর্শক পায়নি বলে নেমে গেছে।’’

ঢাকার অদূরে কেরানিগঞ্জে অবস্থিত লায়ন সিনেমাসের কর্ণধার মির্জা আব্দুল খালেক বলেন, ‘‘আমার এখানে ‘তাণ্ডব’ নিয়ে দর্শকের আগ্রহ বেশি। অধিকাংশ দর্শক শাকিব খানের ছবিটি দেখতে আসছেন। হাউজফুল যাচ্ছে। এরপর ‘ইনসাফ’কে রাখা যায়। মোটামুটি যাচ্ছে। দুটি করে শো চলছে। দুপুরে ২৫-৩০ ভাগ দর্শক পাচ্ছি। সন্ধ্যার শো খুব ভালো যাচ্ছে। বাকিগুলো নিয়ে বলার মতো কিছু নেই। দর্শক আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তবে শুনেছি ঢাকার দিকে ‘উৎসব সিনেমাটা বেশ ভালো করছে। তবে আমাদের এদিকে ছবিটির দর্শক নেই। সেকারণে হয়তো দর্শক টানতে পারছে না।’’

সিঙ্গেল স্ক্রিন 

সিঙ্গেল স্ক্রিনের মালিকরা লাভের গুড় তুলতে শাকিবে ভরসা পান। অন্যদের ওপর আস্থা নেই তাদের। ফলে এবারও সেখানে একক রাজত্ব ঢালিউড ভাইজানের। দেশজুড়ে ১৩০ টি সিঙ্গেল স্ক্রিনে চলছে ‘তাণ্ডব’।

ঢাকার ঐতিহ্যবাহী মধুমিতা সিনেমা হল শাকিব খানের ঘাটি হিসেবে পরচিত। সেখানে কেমন চলছে তাণ্ডব জানতে চাইলে হলের কর্ণধার ইফতেখার নওশাদ বলেন, ‘ভালো-ই চলছে। আমি সেদিন হলে গিয়েছিলাম। দর্শকের প্রতিক্রিয়া দেখলাম। নিশো ও সিয়ামের ক্যামিওর অংশ তারা বেশ উপভোগ করেছেন। সবাইকে হাত তালি দিতে দেখলাম।’

তবে তার কথায় সন্তুষ্টির ঘাটতি পাওয়া যায়। নওশাদ বলেন, ‘‘বরবাদ’ ও ‘তুফানে’র ক্রেজটা ‘তাণ্ডবে’র ক্ষেত্রে দেখতে পাচ্ছি না। আমার হলের এসিটা ভালো কাজ করছে না। এই গরমে দর্শকের অসুবিধা হচ্ছে। এটা একটা কারণ হতে পারে। তাছাড়া আমার মনে হয় শুধু অ্যাকশনধর্মী ছবির ওপর নির্ভর করলে চলবে না। রোমান্টিক সিনেমা প্রয়োজন। প্রেমের সিনেমার প্রচুর দর্শক আছে।’’

রাজধানীর শ্যমলীতে চলছে ‘তাণ্ডব’। যাচ্ছে হাউজফুল। সন্তুষ্ট হল কর্তৃপক্ষ। ফুটে উঠল হলের হাউজম্যান আহসান উল্লাহর কথায়। তিনি বলেন, ‘ভালো চলছে ছবিটি। প্রায় সবগুলো শো হাউজফুল যাচ্ছে। আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। দর্শকের রিভিউ ভালো। এরকম ছবি হলে হাল মালিকদের দুর্দশা কেটে যাবে বলে মনে হচ্ছে।’

খুলনার সঙ্গীতা সিনেমা হলে চলছে ‘ইনসাফ’। সিনেমাটি মোটামুটি দর্শক টানছে বলে জানালেন হলটির সমন্বয়কারী আতাহার আলী। তিনি বলেন, ‘আমরা যতটা প্রত্যাশা করেছিলাম ততটা না হলেও খারাপ যাচ্ছে না। মোটামুটি ভালোই বলা যায়। এরকম থাকলে আশা করি ভালোই হবে।’

ছবিটি নিয়ে তার মন্তব্য, ‘প্রথমার্ধ কিছুটা ঝুলে গেলেও শেষার্ধে তা পুষিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আইটেম সংটা শেষে না দিয়ে অন্য কোথাও দিলে ভালো হতো। এটা দর্শকের রিভিউ।’

দিনাজপুরের পুরনো একটি হল মডার্ন সিনেমা হল। কর্তৃপক্ষ হলটি চালাতে আগ্রহী নয়। সেকারণে মেরামত করা হয়নি। তারপরও দর্শক আসছে শাকিবের নামে। হলের ব্যবস্থাপক মো. রেজা বললেন, ‘আমাদের হল অনেক পুরনো। নতুন করে মেরামত করা হয়নি। দর্শক যা আসার শাকিব খানের জন্য আসছেন। ওই জায়গা থেকে খারাপ যাচ্ছে না। প্রত্যাশা পূরণ করেছে। হাউজফুল না হলেও ভালোই দর্শক হচ্ছে।’

চট্টগ্রামের সুগন্ধা সিনেমা হলে চলছে ‘তাণ্ডব’। ছবিটি ভালোই চলছে জানালেন সিনেমা হলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ হোসাইন। তিনি বলেন, ‘ভালোই যাচ্ছে। দর্শক রিভিউ ভালো পাচ্ছি। মোটামুটি দর্শক পাচ্ছি। ঈদের ছুটিতে অনেকেই বাড়ি চলে গেছেন বলে দর্শক সংখ্যায় ঘাটতি আছে। তবে আমরা যে প্রত্যাশা করেছিলাম সেটি পূরণ করতে পেরেছে।’

দেশের বৃহত্তম সিনেমা হল যশোর মণিহারে চলছে ‘তাণ্ডব’। কিন্তু ছবিটি সন্তুষ্ট করতে পারেনি হল কর্তৃপক্ষকে। হলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তোফাজ্জেল হোসেন ‘আমাদের এখানে একসঙ্গে এক হাজার দর্শক সিনেমা উপভোগের সুযোগ থাকলেও সর্বোচ্চ সাড়ে চারশো দর্শক হয়েছে। প্রত্যাশা বেশি থাকলেও সেভাবে দর্শকদের সাড়া পাওয়া যায়নি।’

যা বলছে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি

তবে ঈদের সিনেমাগুলো নিয়ে সন্তুষ্ট নন চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস।   তার কথায়, ‘‘কোনো সিনেমাই আহামরি যাচ্ছে না। তুলনামূলকভাবে তাণ্ডব এগিয়ে থাকলেও তুফান, বরবাদ, প্রিয়তমার মতো দর্শক টানতে পারছে না। আমাদের প্রত্যশা পূরণ করতে পারেনি। ছবির গল্প সেভাবে ছুঁতে পারেনি দর্শকদের। ’’

আরও বলেন, ‘‘দ্বিতীয় স্থানে ‘ইনসাফ’। মোটামুটি দর্শক টানতে পারছে। বাকি ছবিগুলো নিয়ে কিছু বলার নেই। উৎসব ছবির গল্প আলাদা এবং তারকাবহুল হওয়ায় দর্শকের আগ্রহ জাগছে। তবে মনে করি না। সেরকম কিছু হবে।’’

প্রদর্শক সমিতির সহ সভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন এগিয়ে রাখছেন ‘তাণ্ডব’কে। তিনি বলেন, ‘হল মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যেটুকু জানলাম তাতে বলা যায় সবচেয়ে ভালো যাচ্ছে ‘তাণ্ডব’। এরপর রয়েছে ‘ইনসাফ’।’’