ছবিসূত্র: ভিডিও থেকে
পাকিস্তানে আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের সবাই একই পরিবারের সদস্য। তারা খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের স্বাত নদীর তীরে পিকনিকে গিয়েছিলেন। তাদের আত্মীয়স্বজনরা শুক্রবার তাদের বাঁচাতে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
জেলা প্রশাসক শেহজাদ মাহবুব শুক্রবার জানান, নিহত ৯ জনই একই পরিবারের ১৬ সদস্যের মধ্যে ছিলেন। পরিবারের কিছু শিশু নদীতে নেমে ছবি তুলছিল, এমন সময় হঠাৎ করেই প্রবল স্রোতের আকস্মিক বন্যা এসে পড়ে। তাদের উদ্ধার করতে আত্মীয়রা এগিয়ে গেলে তারাও পানিতে আটকা পড়ে যান। মাহবুব আরো জানান, এ পর্যন্ত ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিখোঁজ রয়েছেন আরো ৪ জন এবং ৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে প্রাদেশিক জরুরি সেবার মুখপাত্র শাহ ফাহাদ জানান, প্রায় ১০০ জন উদ্ধারকর্মী বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে ৫৮ জনকে উদ্ধার করেছেন। নিখোঁজ পর্যটকদের সন্ধানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তিনি জনগণকে সতর্ক করে বলেন, স্বাত নদীতে আকস্মিক বন্যার পূর্বাভাস আগে থেকেই দেওয়া হয়েছিল, যা অবশ্যই মেনে চলা উচিত ছিল।
উল্লেখ্য, স্বাত নদী গ্রীষ্ম ও শীতকালে পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে নদী ও ঝরনার আশেপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় পাঞ্জাব এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় সিন্ধু প্রদেশে ভারি বৃষ্টিপাতে অন্তত আরো ১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। স্থানীয় উদ্ধার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারি বৃষ্টির কারণে এসব এলাকায় বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কিছু মহাসড়ক বন্ধ হয়ে গেছে।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, পাকিস্তানে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলা বার্ষিক বর্ষা মৌসুম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে এবং চলতি সপ্তাহে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।
তবে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের তুলনায় এ বছর বর্ষাকালে কম বৃষ্টিপাত হতে পারে। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের অতিবৃষ্টিতে পাকিস্তানে নদীভাঙন ও ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছিল, যাতে ১ হাজার ৭৩৯ জন প্রাণ হারান।
প্রশাসন স্থানীয় জনগণ ও পর্যটকদের জন্য নদী সংলগ্ন এলাকায় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে। বৃষ্টি ও বন্যাজনিত দুর্যোগের পুনরাবৃত্তি রোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
সূত্র: এএফপি