১১:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ২০ দেশের জরুরি সম্মেলন

  • আপডেট সময়: ১১:১৫:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
  • 3

ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ‘বাস্তব পদক্ষেপ’ ঘোষণা করতে বিশ্বের ২০টিরও বেশি দেশ আজ জরুরি সম্মেলনে বসছে কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায়।

কূটনীতিকরা ‘মিডল ইস্ট আই’-কে এ খবর জানিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ১৫ জুলাই শুরু হচ্ছে দুই দিনের এ সম্মেলন। ‘দ্য হেগ’ গ্রুপের সহ-সভাপতি হিসেবে কলম্বিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা যৌথভাবে সম্মেলন আয়োজন করছে।

ইসরায়েল ও এর প্রভাবশালী মিত্রদের সৃষ্ট ‘দায়মুক্তির পরিবেশ’ মোকাবেলায় সমন্বিতভাবে আইনি ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়াই এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য।

হেগ গ্রুপ বর্তমানে ৮টি রাষ্ট্রের একটি জোট। গত ৩১ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে এটি গঠিত হয়। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় ইসরায়েলকে জবাবদিহি করার লক্ষ্য নিয়ে গ্রুপটি গঠিত হয়েছিল।

দক্ষিণ আফ্রিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী রোল্যান্ড লামোলা ‘মিডল ইস্ট আই’-কে বলেন, জানুয়ারিতে হেগ গ্রুপের গঠন ব্যতিক্রমবাদ ও আন্তর্জাতিক আইনের ব্যাপক ক্ষয়রোধে বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়ায় এক মোড় পরিবর্তনের সূচনা করেছে।

তিনি আরও বলেন, একই স্পৃহা মঙ্গলবার বোগোটা সম্মেলনে প্রাণসঞ্চার করবে। সেখানে জড়ো হওয়া দেশগুলো এই স্পষ্ট বার্তাই দেবে যে, কোনও জাতি আইনের ঊর্ধ্বে নয় এবং কোনও অপরাধের জবাবদিহি না হয়ে যাবে না।

আমরা একযোগে সুনির্দিষ্ট আইনি, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নিতে কাজ করব, যাতে জরুরি ভিত্তিতে ইসরায়েলের ফিলিস্তিন ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করা যায়।

হেগ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ৮টি দেশ হল- বলিভিয়া, কলম্বিয়া, কিউবা, হন্ডুরাস, মালয়েশিয়া, নামিবিয়া, সেনেগাল ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

সম্মেলনে অংশ নেবে- আলজেরিয়া, বলিভিয়া, ব্রাজিল, চিলি, চীন, কিউবা, জিবুতি, হন্ডুরাস, ইন্দোনেশিয়া, আয়ারল্যান্ড, লেবানন, মালয়েশিয়া, নামিবিয়া, নিকারাগুয়া, ওমান, পর্তুগাল, স্পেন, কাতার, তুরস্ক, সেন্ট ভিনসেন্ট, গ্রেনাডাইনস, উরুগুয়ে ও ফিলিস্তিন।

সম্মেলনে যেসব কর্মকর্তারা অংশ নেবেন তাদের মধ্যে আছেন- ফিলিস্তিনের জন্য জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘ সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজারিনি, স্বাস্থ্য অধিকার বিষয়ক বিশেষ জাতিসংঘ দূত তলালং মোফোকেনগ, নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিষয়ক জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপের চেয়ারম্যান লরা নাইরিনকিন্দি এবং জাতিসংঘের ভাড়াটে সেনা ওয়ার্কিং গ্রুপের ম্যান্ডেট হোল্ডার আন্দ্রেস ম্যাকিয়াস তোলোসা।

গাজায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের শুরু করা যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং ভূখণ্ডটির প্রায় পুরো জনসংখ্যাই বাস্তুচ্যুত হয়েছে। চলছে খাবার, জ্বালানি, চিকিৎসাসরঞ্জামসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য জিনিসের সংকট।

গত কয়েক মাসে দ্য হেগ গ্রুপের সদস্যরা আন্তর্জাতিক আইন রক্ষা ও প্রয়োগে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে।

যেমন, দক্ষিণ আফ্রিকা গাজায় গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

গ্রুপটির আরও কয়েকটি দেশ পরে আইসিজে’র ওই মামলায় যোগ দেয়। এই দেশগুলোর মধ্যে আছে- বলিভিয়া, কলম্বিয়া এবং নামিবিয়াও। ফলে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে মামলাটি আরও শক্তিশালী হয়।

তাছাড়া নামিবিয়া ও মালয়েশিয়া তাদের দেশের বন্দরে ইসরায়েলের জন্য অস্ত্রবাহী জাহাজ ভিড়তে দেয়নি। ওদিকে, ইসরায়েল সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে কলম্বিয়া।

জোটের দেশগুলো এ পর্যন্ত নিজেদের মতো করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে এখন দ্য হেগ গ্রুপের সদস্য দেশগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরও জোরাল পদক্ষেপ নিতে একযোগে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্য নিয়েছে।

 

উত্তরাধুনিক

Writer, Singer & Environmentalist

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ২০ দেশের জরুরি সম্মেলন

আপডেট সময়: ১১:১৫:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ‘বাস্তব পদক্ষেপ’ ঘোষণা করতে বিশ্বের ২০টিরও বেশি দেশ আজ জরুরি সম্মেলনে বসছে কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায়।

কূটনীতিকরা ‘মিডল ইস্ট আই’-কে এ খবর জানিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ১৫ জুলাই শুরু হচ্ছে দুই দিনের এ সম্মেলন। ‘দ্য হেগ’ গ্রুপের সহ-সভাপতি হিসেবে কলম্বিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা যৌথভাবে সম্মেলন আয়োজন করছে।

ইসরায়েল ও এর প্রভাবশালী মিত্রদের সৃষ্ট ‘দায়মুক্তির পরিবেশ’ মোকাবেলায় সমন্বিতভাবে আইনি ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়াই এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য।

হেগ গ্রুপ বর্তমানে ৮টি রাষ্ট্রের একটি জোট। গত ৩১ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে এটি গঠিত হয়। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় ইসরায়েলকে জবাবদিহি করার লক্ষ্য নিয়ে গ্রুপটি গঠিত হয়েছিল।

দক্ষিণ আফ্রিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী রোল্যান্ড লামোলা ‘মিডল ইস্ট আই’-কে বলেন, জানুয়ারিতে হেগ গ্রুপের গঠন ব্যতিক্রমবাদ ও আন্তর্জাতিক আইনের ব্যাপক ক্ষয়রোধে বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়ায় এক মোড় পরিবর্তনের সূচনা করেছে।

তিনি আরও বলেন, একই স্পৃহা মঙ্গলবার বোগোটা সম্মেলনে প্রাণসঞ্চার করবে। সেখানে জড়ো হওয়া দেশগুলো এই স্পষ্ট বার্তাই দেবে যে, কোনও জাতি আইনের ঊর্ধ্বে নয় এবং কোনও অপরাধের জবাবদিহি না হয়ে যাবে না।

আমরা একযোগে সুনির্দিষ্ট আইনি, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নিতে কাজ করব, যাতে জরুরি ভিত্তিতে ইসরায়েলের ফিলিস্তিন ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করা যায়।

হেগ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ৮টি দেশ হল- বলিভিয়া, কলম্বিয়া, কিউবা, হন্ডুরাস, মালয়েশিয়া, নামিবিয়া, সেনেগাল ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

সম্মেলনে অংশ নেবে- আলজেরিয়া, বলিভিয়া, ব্রাজিল, চিলি, চীন, কিউবা, জিবুতি, হন্ডুরাস, ইন্দোনেশিয়া, আয়ারল্যান্ড, লেবানন, মালয়েশিয়া, নামিবিয়া, নিকারাগুয়া, ওমান, পর্তুগাল, স্পেন, কাতার, তুরস্ক, সেন্ট ভিনসেন্ট, গ্রেনাডাইনস, উরুগুয়ে ও ফিলিস্তিন।

সম্মেলনে যেসব কর্মকর্তারা অংশ নেবেন তাদের মধ্যে আছেন- ফিলিস্তিনের জন্য জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘ সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজারিনি, স্বাস্থ্য অধিকার বিষয়ক বিশেষ জাতিসংঘ দূত তলালং মোফোকেনগ, নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিষয়ক জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপের চেয়ারম্যান লরা নাইরিনকিন্দি এবং জাতিসংঘের ভাড়াটে সেনা ওয়ার্কিং গ্রুপের ম্যান্ডেট হোল্ডার আন্দ্রেস ম্যাকিয়াস তোলোসা।

গাজায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের শুরু করা যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং ভূখণ্ডটির প্রায় পুরো জনসংখ্যাই বাস্তুচ্যুত হয়েছে। চলছে খাবার, জ্বালানি, চিকিৎসাসরঞ্জামসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য জিনিসের সংকট।

গত কয়েক মাসে দ্য হেগ গ্রুপের সদস্যরা আন্তর্জাতিক আইন রক্ষা ও প্রয়োগে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে।

যেমন, দক্ষিণ আফ্রিকা গাজায় গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

গ্রুপটির আরও কয়েকটি দেশ পরে আইসিজে’র ওই মামলায় যোগ দেয়। এই দেশগুলোর মধ্যে আছে- বলিভিয়া, কলম্বিয়া এবং নামিবিয়াও। ফলে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে মামলাটি আরও শক্তিশালী হয়।

তাছাড়া নামিবিয়া ও মালয়েশিয়া তাদের দেশের বন্দরে ইসরায়েলের জন্য অস্ত্রবাহী জাহাজ ভিড়তে দেয়নি। ওদিকে, ইসরায়েল সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে কলম্বিয়া।

জোটের দেশগুলো এ পর্যন্ত নিজেদের মতো করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে এখন দ্য হেগ গ্রুপের সদস্য দেশগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরও জোরাল পদক্ষেপ নিতে একযোগে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্য নিয়েছে।