
বৃষ্টি মানেই ভেজা পথঘাট, কাদা ও জমে থাকা পানি। কিন্তু বর্ষাকাল শুধু পরিবেশ ঠান্ডা করে না, একই সঙ্গে বাড়িয়ে তোলে এক ভয়ংকর শঙ্কাও সাপের উপদ্রব। প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাপে কাটার ঘটনা বাড়ে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে, নিচু জমি বা ঘাসের জমিতে এ সময় সাপের চলাচল বেড়ে যায়। অনেক সময় শহরাঞ্চলেও এই বিপদের মুখে পড়েন মানুষ। তবে কিছু সতর্কতা মেনে চললেই নিজেকে ও পরিবারকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।
কেন বাড়ে বর্ষায় সাপের চলাচল?
বন্যার পানি বা জমে থাকা পানিতে সাপের গর্ত ডুবে যায়। ফলে তারা আশ্রয় খুঁজতে মানুষের বাড়ির কাছাকাছি উঠে আসে।
খাদ্যের সন্ধানে বের হয়
ব্যাঙ, ইঁদুর, পোকামাকড়ের খোঁজে সাপ বাইরে আসে।
ঠান্ডা ও আর্দ্র পরিবেশে সাপ বেশি সক্রিয় হয়
বাড়ির আশপাশ নিরাপদ রাখতে করণীয়
বাড়ির চারপাশের ঝোপঝাড় ও ঘাস পরিষ্কার রাখুন
ময়লা আবর্জনা, কাঠ বা ইটের স্তূপ সরিয়ে ফেলুন
ড্রেন, পায়খানা বা টয়লেটের চারপাশে জীবাণুনাশক ও ফিনাইল ব্যবহার করুন
রাতে ঘরের দরজা-জানালা ভালোভাবে বন্ধ রাখুন
আলো কম যায় এমন জায়গায় টর্চ দিয়ে আগে দেখে নিন, তারপর যান
ঘরে ঘুমানোর সময় সচেতনতা
বিছানা মাটি থেকে একটু ওপরে রাখুন
মশারি ব্যবহার করুন
ঘুমানোর আগে বিছানা ভালোভাবে ঝেড়ে নিন
মেঝেতে ছেলেমেয়েদের ঘুমানো এড়িয়ে চলুন
রাস্তায় বা মাঠে চলাফেরা করলে করণীয়
স্যান্ডেল বা খোলা জুতা না পরে ভালো গ্রিপযুক্ত জুতা পরুন
রাতে চলাফেরায় টর্চ বা লাইট ব্যবহার করুন
ধানক্ষেত, জঙ্গল বা জলাবদ্ধ জায়গায় পা ফেলার আগে লাঠি দিয়ে ঠুকে নিন
ঝড়-বৃষ্টি থামার পরপরই নিচু জায়গায় একা একা না যাওয়া ভালো
সাপে কাটলে যা করবেন, যা করবেন না
কাটা স্থানে শক্ত করে কাপড় বেঁধে দিন (আংশিক চেপে ধীর গতিতে বিষ ছড়ানো কমানো যায়)
রোগীকে শান্ত রাখুন, কম নড়াচড়া করতে বলুন
দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান
সম্ভব হলে সাপটিকে চিনে রাখুন (চিহ্ন দেখে চিকিৎসা সহজ হয়)
কখনই কাটার জায়গা কেটে রক্ত বার করবেন না
দুধ, তেল বা অন্য কিছু খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না
ঝাড়ফুঁক বা স্থানীয় ওঝার কাছে সময় নষ্ট করবেন না
বৃষ্টি যেমন প্রকৃতিকে করে সতেজ, তেমনই তৈরি করে কিছু অদৃশ্য ঝুঁকিও। তার মধ্যে অন্যতম হলো সাপের উপদ্রব। তবে আতঙ্ক নয়, সচেতনতা এবং প্রাথমিক প্রস্তুতিই হতে পারে বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়। তাই বর্ষার দিনে বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখুন, সতর্ক থাকুন—সুরক্ষিত থাকুন।