গাজা উপত্যকায় বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের ‘অমানবিক হত্যাকাণ্ডের’ নিন্দা এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানসহ ২৫টি দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে ২৫টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইইউ কমিশনার ফর ইকুয়ালিটি, প্রিপেয়ার্ডনেস অ্যান্ড ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট বলেছেন, ‘আমরা, স্বাক্ষরকারীরা একটি সহজ, জরুরি বার্তা নিয়ে একত্রিত হয়েছি: গাজার যুদ্ধ এখনই শেষ করতে হবে। গাজার বেসামরিক নাগরিকদের দুর্ভোগ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইসরায়েলি সরকারের ত্রাণ বিতরণ মডেল গাজার পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক, অস্থিতিশীল করে তুলেছে এবং ফিলিস্তিনিদের মানবিক মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করছে।’
এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা নামমাত্র ত্রাণ সরবরাহ এবং শিশুসহ বেসামরিক নাগরিকদের অমানবিক হত্যার নিন্দা জানাই, যারা তাদের সবচেয়ে মৌলিক চাহিদা যেমন- পানি ও খাবার নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে।’
বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল পরিচালিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে ত্রাণ নিতে গিয়ে ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যার ঘটনাকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছে দেশগুলো।
বেসামরিক জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা প্রদানে ইসরায়েলি সরকারের অস্বীকৃতি ‘অগ্রহণযোগ্য’ উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা ইসরায়েলি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যে তারা যেন অবিলম্বে ত্রাণ সরবরাহের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় এবং জাতিসংঘ এবং মানবিক সংস্থাগুলোকে তাদের কার্যক্রম চালাতে সহায়তা করে।
আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের বাধ্যবাধকতা মেনে চলার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীকে তথাকথিত ‘মানবিক শহরে’ স্থানান্তরের পরিকল্পনা সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য। স্থায়ীভাবে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের লঙ্ঘন। আমরা অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আঞ্চলিক বা জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের দিকে যেকোনো পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করি।
এতে আরও বলা হয়, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে তাৎক্ষণিক, নিঃশর্ত এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিশরের প্রচেষ্টার প্রতি আমরা ‘পূর্ণ সমর্থন’ জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন: অস্ট্রেলিয়া , অস্ট্রিয়া , বেলজিয়াম , কানাডা , ডেনমার্ক , এস্তোনিয়া , ফিনল্যান্ড , ফ্রান্স , আইসল্যান্ড , আয়ারল্যান্ড , ইতালি , জাপান , লাটভিয়া , লিথুয়ানিয়া , লুক্সেমবার্গ , নেদারল্যান্ডস , নিউজিল্যান্ড , নরওয়ে , পোল্যান্ড , পর্তুগাল , স্লোভেনিয়া , স্পেন , সুইডেন , সুইজারল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। এছাড়াও ইইউ কমিশনার ফর ইকুয়ালিটি , প্রিপ্রেডেনসি অ্যান্ড ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট হাদজা লাহবিবও এতে সই করেছেন।