পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা, ভূমিধসে গত ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়েছেন। এতে দেশটিতে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪২ জনে দাঁড়িয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) এ বিবৃতিতে জানিয়েছে, আকস্মিক বন্যা, ঘরবাড়ি ধসে পড়া, ডুবে যাওয়া, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া, বজ্রপাত এবং ভূমিধসের কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২১ জনের মধ্যে ছয়জন পুরুষ, তিনজন নারী এবং ১২ জন শিশু।
বিবৃতি বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় খাইবার পাখতুনখোয়ায় ১০ জন নিহত এবং দুজন আহত হয়েছেন, ইসলামাবাদে পাঁচজন মারা গেছেন এবং একজন আহত হয়েছেন, সিন্ধুতে দুজন মারা গেছেন, গিলগিট-বালতিস্তানে তিনজন মারা গেছেন এবং একজন আহত হয়েছেন এবং আজাদ কাশ্মীরে একজন মারা গেছেন এবং দুজন আহত হয়েছেন।
এনডিএমএ আরও জানিয়েছে, বর্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪২ জনে দাঁড়িয়েছে, এবং ৫৯৮ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৮৩ জন পুরুষ, ৪৩ জন নারী এবং ১১৬ জন শিশু রয়েছে। আহতদের মধ্যে ২৩২ জন পুরুষ, ১৬৭ জন মহিলা এবং ১৯৯ জন শিশু।
আরো পড়ুন
শনিবার পাকিস্তান যাচ্ছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট
এনডিএমএ-এর পরিসংখ্যান অনুসারে, পাঞ্জাবে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ১৩৫ জন নিহত এবং ৪৭০ জন আহত হয়েছেন। খাইবার পাখতুনখোয়ায় ৫৬ জনের মৃত্যু এবং ৭১ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, এরপর সিন্ধুতে ২৪ জন নিহত এবং ৪০ জন আহত হয়েছে।
এছাড়া বেলুচিস্তানে ১৬ জন মারা গেছেন এবং চারজন আহত হয়েছেন, গিলগিট-বালতিস্তানে তিনজন মারা গেছেন এবং চারজন আহত হয়েছেন, আজাদ কাশ্মীরে দুইজন মারা গেছেন এবং আটজন আহত হয়েছেন, আর ইসলামাবাদে এখন পর্যন্ত ছয়জন মারা গেছেন এবং একজন আহত হয়েছেন।
এনডিএমএ জানিয়েছে, বৃষ্টির সময় ঘরবাড়ি ধসে পড়ার কারণে বেশিরভাগ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও বন্যার পানিতে ডুবে, বজ্রপাত, আকস্মিক বন্যা, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এবং ভূমিধসেও প্রাণ হারিয়েছে অনেক মানুষ।
এদিকে মঙ্গলবার দেশটির প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এবং প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ উদ্ধার ও পুনর্বাসন প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা জারি করেছেন।
পৃথক বিবৃতিতে তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত এবং বন্যার কারণে মূল্যবান প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে এনডিএমএকে প্রদেশ এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ বজায় রাখতে এবং তাদের প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানে প্রতি বছর জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৌসুমি বৃষ্টিপাত হয়। ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে প্রায় প্রতিবছরই মারাত্মক বন্যা, ভূমিধসের ঘটনা ঘটে, বিশেষ করে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়। ২০২২ সালের ভয়াবহ দেশটির এক তৃতীয়াংশ প্লাবিত হয়েছিল। এতে ১ হাজার ৭৩৭ জনের মৃত্যু এবং অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
সূত্র: জিও নিউজ, ডন