সংগৃহীত ছবি
মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু, এরপর অভিনয়ের মধ্য দিয়ে নাটকে থিতু হন তানিয়া বৃষ্টি। ২০১৫ সালে চলচ্চিত্রে অভিষেক হলেও নিজেকে আবদ্ধ করে রেখেছেন ছোট পর্দাতেই। মাসের ৩০ দিনই শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকেন এই ভিট সুন্দরী। নাটক, সিনেমা ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন ইমরুল নূর।
কিছুদিন পরপরই শোনা যায়, আপনি নাকি অভিনয় ছেড়ে দিচ্ছেন। বিষয়টা একটু পরিষ্কার করবেন...
আসলে আমি এখন অভিনয় ছাড়ছি না। কথা প্রসঙ্গে বলেছিলাম যে বিয়ের পর হয়তো অভিনয় করা হবে না। কারণ তখন আমি সংসারে মনোযোগ দেব।
ওই সময়ে একই সঙ্গে দুটো দিক সামলানো হবে না আমার। তাই বিয়ের পর অভিনয় ছেড়ে দিতে পারি। এই কথাটাই হয়তো বারবার ঘুরেফিরে বিভিন্নভাবে সংবাদে আসে, যার কারণে এ রকমটা হয়েছে।
তাহলে এখন বিরতি নিচ্ছেন না?
একদমই না।
মাসের প্রায় ৩০ দিনই শুটিং করা হচ্ছে আমার। যদি একদমই নিজে না চাই তাহলে হয়তো কয়েক দিন গ্যাপ যায় বা একটু বিশ্রাম নিই, নয়তো পুরো মাসই শুটিং করা হয়। নিজেকে নিয়ে এখন আগের চেয়ে আরো অনেক বেশি সিরিয়াস হয়েছি, ভিন্নধর্মী গল্পে কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি যার কারণে এখন আর অভিনয় থেকে কোনো বিরতি নিচ্ছি না।
মোশাররফ করিম, নিলয় আলমগীর কিংবা শামীম হাসান সরকার—তাদের সঙ্গেই আপনাকে বেশি দেখা যায় এবং সেটা বেশ অনেক বছর ধরেই। এটা কেন?
এটা সত্য তাদের তিনজনের সঙ্গে আমার অনেক কাজ হয়েছে, এমনকি এখনো হয়।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আমি কিন্তু এখনকার অনেক শিল্পীর সঙ্গেই কাজ করেছি বা করছি। পার্থ শেখের সঙ্গে কাজ করেছি, প্রান্তর দস্তিদারের সঙ্গেও কাজ করেছি। এদিক থেকে আমার কোনো ধরাবাধা নিয়ম নেই যে অন্য কারো সঙ্গে কাজ করব না। আমি সবার সঙ্গেই কাজ করতে চাই।
ঈদের পর অনেক শিল্পী কিংবা নির্মাতারাই বলছেন কাজ সংকট, অনেকেই কাজ পাচ্ছেন না। সেদিক থেকে আপনি বলছেন, মাসের ৩০ দিনই কাজ করছেন...
অন্যদের বিষয়ে বলতে পারব না, কিন্তু আমি তো কাজ করছি। আমি যাদের সঙ্গে কাজ করছি তারাও করছেন। এখন তারা যদি না করতেন তাহলে হয়তো আমারও কাজ বন্ধ থাকত, কিন্তু সেটা তো হচ্ছে না। আমি টানা শুটিং করে যাচ্ছি। এই যে এখনো একটা শুটিং সেট থেকেই কথা বলছি।
১০ বছর আগেই আপনার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়েছে, কিন্তু এরপর আর আপনাকে সিনেমায় পাওয়া যায়নি কেন?
আমার কাছে সেভাবে চলচ্চিত্রের প্রস্তাব আসেনি, এমনকি এখনো আসে না। সত্যি বলতে, আমি এখন সিনেমা নিয়ে ভাবছি না। এখন নাটকেই সময় দিতে চাই। সিনেমার জন্য আলাদা প্রস্তুতির দরকার। পর্দায় অভিনয় কমিয়ে, বিরতি দিয়ে নিজেকে নতুনভাবে প্রস্তুত করে তবেই সিনেমায় আসা উচিত। মেহজাবীন আপু, সাবিলা নূরের কথা যদি বলি, তারা কিন্তু সিনেমা করার আগে বিরতি দিয়েছেন তারপর সিনেমা করেছেন। হুট করে সিনেমা করা আমার কাছে মোটেও ঠিক মনে হয় না। ভালো গল্প, পরিচালক পেলে এবং যদি আমার মনে হয় যে, হ্যাঁ, এটা হাতছাড়া করা যাবে না, তখন হয়তো আমি ভাবব। নাটক থেকে বিরতি নিয়ে নিজেকে সিনেমার জন্য প্রস্তুত করব। তার আগে নয়।
এক যুগেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ার আপনার। এই সময়ে এসে কখনো কি মনে হয়, যা চেয়েছিলেন তা পেয়েছেন?
না, আমি যা চেয়েছিলাম তা এখনো পাইনি। এর জন্য আমাকে আরো অনেক পরিশ্রম করতে হবে, কাজ করে যেতে হবে। নিজেকে একজন ভার্সেটাইল অভিনেত্রী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে আমার অভিনয় দর্শক মনে রাখবে এমন কিছু করার ইচ্ছে এখনো রয়ে গেছে। তবে আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি।
সাম্প্রতিক কাজ নিয়ে কিছু বলুন...
এখন গৌতম কৈরীর একটি নাটকের শুটিং করছি। এর বাইরে আগামীকাল (সোমবার) নতুন একটা নাটক রিলিজ হবে যেটার নাম ‘জয়িতার দিনরাত্রি’। এটা নারীপ্রধান গল্পের একটি কাজ, এই কাজটা নিয়ে আমি অনেক বেশি এক্সাইটেড। আমার জন্য একটা চ্যালেঞ্জও বটে। আমি সবসময়ই নারী প্রধান গল্পে কাজ করতে চেয়েছি। গল্পটা আমাকে ঘিরে, আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি এখন বাকিটা হয়তো দর্শক বলতে পারবেন যে, কেমন করেছি।
যেখান থেকে শুরু করেছিলাম সেখানেই শেষ করতে চাই। বিয়ের পর অভিনয় ছেড়ে দেবেন বললেন, তা বিয়েটা কবে করছেন?
হাহাহা। আমি এখন প্রেমে নেই, কারো সঙ্গে কোনো সম্পর্কেও নেই। আমি এখন সিঙ্গেল। তাই আপাতত বিয়ে নিয়ে মাথায় কোনো চিন্তা-ভাবনাও নেই। চার-পাঁচ বছরের আগে বিয়ে করছি না। এখন পুরো মনোযোগ দিয়ে শুধু কাজটা করে যেতে চাই।