
এম হারুন-অর-রশিদ। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান লে. জেনারেল (অব.) এম হারুন-অর-রশিদ মরণোত্তর চক্ষু দান করে গেছেন। তবে তার দানের চোখ নেওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেলে হারুনের চোখের কর্ণিয়া সংগ্রহের জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সন্ধানীর একটি দল যায়। কিন্তু দেরি হয়ে যাওয়ায় কর্ণিয়া কার্যকর নেই দেখে আর তা সংগ্রহ করেনি তারা।
এদিকে পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে ময়নাতদন্ত হয়নি সাবেক এই সেনাপ্রধানের। ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাকে দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে। দাফনের আগে গার্ড অব অনার দেওয়া হচ্ছে বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন-অর-রশিদকে।
আজ সোমবার সকালে চট্টগ্রাম নগরের চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসের ৩০৮ নম্বর কক্ষ থেকে হারুন-অর-রশিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সকালে অনেক ডাকাডাকির পর তার সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে বিছানায় তার নিথর দেহ দেখতে পান গেস্টহাউসের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম আদালতে ডেসটিনির একটি মামলাসংক্রান্ত কাজে রবিবার হারুন-অর-রশিদ চট্টগ্রাম আসেন। এরপর রাতযাপন করতে চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্টহাউসে যান তিনি। তবে রাতের খাবার বাইরে খান।
সকালে নাশতার সময় জেনে নিয়েছিলেন ক্লাবের অভ্যর্থনায় দায়িত্বরতদের কাছ থেকে। সোমবার সকালে চট্টগ্রাম আদালতে নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত না হওয়ায় তাকে খোঁজ করেন সংশ্লিষ্টরা। তখন চট্টগ্রাম ক্লাব কর্তৃপক্ষ ডাকাডাকি করেও সাড়া পাননি তার।
জেনারেল হারুনের ফুফাতো ভাই চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শামসুল হক হায়দরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আজ (সোমবার) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জেনারেল হারুনের মরদেহ সিএমএইচে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার পর রাত ১০টায় জানাজা শেষে হাটহাজারীতে তার লাশ দাফন করা হবে।’
২০০৬ সালে হারুন-অর-রশিদ বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান ডেসটিনির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন। ডেসটিনির আর্থিক অনিয়মের কারণে তাকে ২০১২ সালে কারাবরণ করতে হয়েছিল।
১৯৪৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে জন্মগ্রহণকারী হারুন-অর-রশিদ ২০০০ সালের ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২০০২ সালের ১৬ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতাযুদ্ধে সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীরপ্রতীক উপাধিতে ভূষিত করে। সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি রাষ্ট্রদূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।