ক্যালসিয়াম শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। রোজকার ডায়েটে নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যালসিয়াম রাখা জরুরি। যেসব ব্যক্তিরা দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খেতে পারেন না, অনেক ক্ষেত্রে তারা ক্যালসিয়ামের অভাবে ভোগেন। আর এই অভাব দূর করতে কেউ কেউ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই নিয়মিত ক্যালসিয়ামের ওষুধ সেবন শুরু করেন।
চিকিৎসকদের মতে, এমন অভ্যাস উদ্বেগজনক হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত ওষুধ খেলে পেট ব্যথা, বমি ভাব, অবসাদ, এমনকি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বাড়ে। মাত্রাতিরিক্ত ক্যালসিয়াম শরীরে প্রবেশ করলে তা থেকে ক্যালসিয়াম ডিপোজিটও হতে পারে। শরীরে ক্যালসিয়াম জমতে শুরু করলে কী কী ক্ষতি হতে পারে, চলুন জেনে নিই-
১. কিডনিতে স্টোন:
শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা, হাড়ের ঘনত্ব ইত্যাদি ভালো করে জেনে ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট খাওয়া উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ইচ্ছামতো সাপ্লিমেন্ট খেলে কিডনি স্টোনের ঝুঁকি বাড়ে। মাত্রা অতিরিক্ত হলে কিডনি বিকল হওয়ারও ঝুঁকি বাড়ে।
২. শরীরের নানা স্থানে ব্যথা:
রক্তে মিশে থাকা ক্যালসিয়াম স্নায়ুতে সঙ্কেত পাঠানো, হরমোনের ক্ষরণ ও মাংসপেশির সঙ্কোচন-প্রসারণে সাহায্য করে। হাড় ও দাঁত সুস্থ রাখতেও প্রয়োজন ক্যালসিয়াম। কিন্তু শরীরে অধিক মাত্রায় ক্যালসিয়াম প্রবেশ করলে তা পেশির সঙ্কোচনে বাধা দেয়। ফলে শরীরের নানা জায়গায় ব্যথা হয়।
৩. মানসিক অবসাদ:
নিয়মিত ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট খান, এমন নারী ও পুরুষদের মানসিক অবসাদ ও উদ্বেগের প্রবণতা অনেক বেশি। তাই প্রয়োজনে ক্যালসিয়ামের সাপ্লিমেন্ট খেতে হবে তবে নিয়ম মেনে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে।
৪. অন্য ওষুধের কার্যকারিতা হ্রাস:
অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট বাড়িয়ে দেয় হাইপার ক্যালসিমিয়ার ঝুঁকি। এতে অন্যান্য ট্যাবলেট ও সাপ্লিমেন্টের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্টের সঙ্গে কেউ যদি নিয়মিত হার্টের অসুখের ট্যাবলেট বা আয়রন ট্যাবলেট খেতে শুরু করেন, তাহলে হৃদরোগের আশঙ্কা বাড়ে। এক্ষেত্রে হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাবের মতো উপসর্গ দেখা যায়।
৫. কোষ্ঠকাঠিন্য:
মাত্রাতিরিক্ত ক্যালসিয়াম শরীরে জমলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়ে। তাই যাদের এই সমস্যা আছে, তাদের বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে।
শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব হলে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন। তবে সেটি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে। নিজে থেকে ক্যালসিয়াম ওষুধ খাওয়া শুরু করবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।