০২:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫

পাকিস্তান-ভারত সংঘাত: আবারও নিজের কৃতিত্ব জাহির করলেন ট্রাম্প

  • আপডেট সময়: ০৯:২৭:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫
  • 3

পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যকার সংঘাত নিরসনে ফের নিজের ভূমিকার কথা সামনে এনেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, তার মধ্যস্থতায়ই পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সংঘাত মিটেছে।

একইসঙ্গে দুই দেশকে যুদ্ধ নয়, বরং বাণিজ্যে মনোযোগ দিতে তিনি উৎসাহিত করেছিলেন বলেও জানিয়েছেন মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট। শনিবার (৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

হোয়াইট হাউসে গত শুক্রবার আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার নেতাদের নিয়ে এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে ট্রাম্প এ কথা বলেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, বাণিজ্যের মাধ্যমেই আমি ভারত-পাকিস্তানের সংঘাতের বিষয়টা মিটিয়ে ফেলেছি। আমার মনে হয় বাণিজ্যই সবচেয়ে বড় কারণ ছিল। এভাবেই আমি এতে যুক্ত হয়েছিলাম।

বৈঠকের পর আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করে, আর সেখানেও ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের যোগ্য বলে প্রশংসা করা হয়। মূলত এই পুরস্কারের ব্যাপারে তিনি নিজেও প্রকাশ্যে আগ্রহী।

ট্রাম্প জানান, গত মে মাসে তিনি পাকিস্তান ও ভারতের নেতাদের ফোন করে বলেছিলেন, তিনি এমন দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করতে চান না, যারা নিজেদের এবং হয়তো বিশ্বকেও ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি বলেন, ওরা পারমাণবিক শক্তিধর দেশ।

পাকিস্তান-ভারত সংঘাত মেটানোকে তিনি “বড় সাফল্য” বলেও উল্লেখ করেন। ট্রাম্প বলেন, ওরা তখন একে অপরের বিমান ভূপাতিত করছিল, পাঁচ-ছয়টা বিমান গুলি করে নামানো হয়েছিল। পরিস্থিতি সেখান থেকে ভয়াবহ রূপ নিতে পারত।

গত মে মাসে চার দিনের পারস্পরিক ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও যুদ্ধবিমান নিয়ে হামলায় অন্তত ৬০ জন নিহত এবং হাজারো মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার পর দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।

আর এই যুদ্ধবিরতি ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন। প্রায় তিন দশকের মধ্যে এটিই ছিল ভারত পাকিস্তানের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত।

পাকিস্তান দাবি করে, তারা অন্তত পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি রাফাল ফাইটার জেট ছিল। এই যুদ্ধে প্রায় ৩০টি পাকিস্তানি ও ৭০টি ভারতীয় বিমান অংশ নেয়।

প্রথমে ভারত বিমান হারানোর কথা অস্বীকার করলেও পরে তারা স্বীকার করে যে পাকিস্তান কিছু যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে।

ট্রাম্প বারবার তার প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে পাকিস্তান ও ভারতকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানোর জন্য দুই দেশের নেতাদের প্রশংসা করেছেন। কিন্তু নয়াদিল্লি ট্রাম্পের কোনও ভূমিকা অস্বীকার করেছে।

ইসলামাবাদ অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে কৃতিত্ব দিয়ে তাকে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছে।

সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংসদে বলেছেন, পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধবিরতিতে ট্রাম্পের কোনও ভূমিকা ছিল না। বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী তাকে চ্যালেঞ্জ জানালে মোদি বলেন, কোনও বিশ্বনেতা আমাদের অভিযান থামাতে বলেননি।

এছাড়া ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং গত মাসে সংসদে বলেন, চাপের কারণে সামরিক অভিযান থেমেছে—এমন দাবি সম্পূর্ণ ভুল ও ভিত্তিহীন।

ট্রাম্প ও তার প্রশাসন ৩০ বারের বেশি দাবি করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি করিয়েছে। বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওও একই দাবি করে বলেন, আমরা সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছিলাম, আর প্রেসিডেন্ট শান্তি নিশ্চিত করতে পেরেছেন।

তিনি ট্রাম্পকে “শান্তির প্রেসিডেন্ট” আখ্যা দিয়ে বলেন, তার নেতৃত্বে কম্বোডিয়া-থাইল্যান্ড, আর্মেনিয়া-আজারবাইজান ও কঙ্গো-রুয়ান্ডা সংঘাতেও কূটনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে।

 

উত্তরাধুনিক

Writer, Singer & Environmentalist

পাকিস্তান-ভারত সংঘাত: আবারও নিজের কৃতিত্ব জাহির করলেন ট্রাম্প

আপডেট সময়: ০৯:২৭:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫

পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যকার সংঘাত নিরসনে ফের নিজের ভূমিকার কথা সামনে এনেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, তার মধ্যস্থতায়ই পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সংঘাত মিটেছে।

একইসঙ্গে দুই দেশকে যুদ্ধ নয়, বরং বাণিজ্যে মনোযোগ দিতে তিনি উৎসাহিত করেছিলেন বলেও জানিয়েছেন মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট। শনিবার (৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

হোয়াইট হাউসে গত শুক্রবার আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার নেতাদের নিয়ে এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে ট্রাম্প এ কথা বলেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, বাণিজ্যের মাধ্যমেই আমি ভারত-পাকিস্তানের সংঘাতের বিষয়টা মিটিয়ে ফেলেছি। আমার মনে হয় বাণিজ্যই সবচেয়ে বড় কারণ ছিল। এভাবেই আমি এতে যুক্ত হয়েছিলাম।

বৈঠকের পর আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করে, আর সেখানেও ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের যোগ্য বলে প্রশংসা করা হয়। মূলত এই পুরস্কারের ব্যাপারে তিনি নিজেও প্রকাশ্যে আগ্রহী।

ট্রাম্প জানান, গত মে মাসে তিনি পাকিস্তান ও ভারতের নেতাদের ফোন করে বলেছিলেন, তিনি এমন দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করতে চান না, যারা নিজেদের এবং হয়তো বিশ্বকেও ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি বলেন, ওরা পারমাণবিক শক্তিধর দেশ।

পাকিস্তান-ভারত সংঘাত মেটানোকে তিনি “বড় সাফল্য” বলেও উল্লেখ করেন। ট্রাম্প বলেন, ওরা তখন একে অপরের বিমান ভূপাতিত করছিল, পাঁচ-ছয়টা বিমান গুলি করে নামানো হয়েছিল। পরিস্থিতি সেখান থেকে ভয়াবহ রূপ নিতে পারত।

গত মে মাসে চার দিনের পারস্পরিক ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও যুদ্ধবিমান নিয়ে হামলায় অন্তত ৬০ জন নিহত এবং হাজারো মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার পর দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।

আর এই যুদ্ধবিরতি ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন। প্রায় তিন দশকের মধ্যে এটিই ছিল ভারত পাকিস্তানের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত।

পাকিস্তান দাবি করে, তারা অন্তত পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি রাফাল ফাইটার জেট ছিল। এই যুদ্ধে প্রায় ৩০টি পাকিস্তানি ও ৭০টি ভারতীয় বিমান অংশ নেয়।

প্রথমে ভারত বিমান হারানোর কথা অস্বীকার করলেও পরে তারা স্বীকার করে যে পাকিস্তান কিছু যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে।

ট্রাম্প বারবার তার প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে পাকিস্তান ও ভারতকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানোর জন্য দুই দেশের নেতাদের প্রশংসা করেছেন। কিন্তু নয়াদিল্লি ট্রাম্পের কোনও ভূমিকা অস্বীকার করেছে।

ইসলামাবাদ অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে কৃতিত্ব দিয়ে তাকে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছে।

সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংসদে বলেছেন, পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধবিরতিতে ট্রাম্পের কোনও ভূমিকা ছিল না। বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী তাকে চ্যালেঞ্জ জানালে মোদি বলেন, কোনও বিশ্বনেতা আমাদের অভিযান থামাতে বলেননি।

এছাড়া ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং গত মাসে সংসদে বলেন, চাপের কারণে সামরিক অভিযান থেমেছে—এমন দাবি সম্পূর্ণ ভুল ও ভিত্তিহীন।

ট্রাম্প ও তার প্রশাসন ৩০ বারের বেশি দাবি করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি করিয়েছে। বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওও একই দাবি করে বলেন, আমরা সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছিলাম, আর প্রেসিডেন্ট শান্তি নিশ্চিত করতে পেরেছেন।

তিনি ট্রাম্পকে “শান্তির প্রেসিডেন্ট” আখ্যা দিয়ে বলেন, তার নেতৃত্বে কম্বোডিয়া-থাইল্যান্ড, আর্মেনিয়া-আজারবাইজান ও কঙ্গো-রুয়ান্ডা সংঘাতেও কূটনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে।