
১৯৮৩ সালে প্রকাশিত ‘কফি হাউজের আড্ডাটা আজ আর নেই’ গানটি এখনও শ্রোতাদের মুখে মুখে ফেরে। কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী মান্না দের নাম মনে এলে স্মৃতিতে নাড়া দেয় জনপ্রিয় এ গান। গানটি ঘিরে সংগীতপ্রেমীদের কৌতূহলের অন্ত নেই। তবে গানটি প্রকাশিত হওয়ার আগে গীতিকার, সুরকার এবং সংগীত পরিচালক, তিনজনের কেউ কফি হাউজে যাননি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে গানটির সংগীত সুরকার সুপর্ণ কান্তি ঘোষ এ কথা জানিয়েছেন।
‘কফি হাউজের আড্ডাটা আজ আর নেই’- এর সুরকার সুপর্ণ কান্তি ঘোষের কথায়, ‘গানটি জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগে কখনও কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের কফি হাউজে যাননি। শুধু আমি না গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার ও মান্না দে কেউ সেখানে আড্ডা যায়নি। চার দশক আগে যখন গানটি মানুষের মুখে মুখে ফিরছিল তখন কলকাতার কলেজে রক্তদান শিবিরে অংশ নিতে প্রথমবার কফি হাউজে যাওয়া।’
মান্না দে
তিনি যোগ করেন, “১৯৮০ সালে ‘সারা জীবনের গান’ অ্যালমাবের কাজ করলাম। ওই বছর ‘খেলা ফুটবল খেলা’ মান্না দের কণ্ঠে সুপারহিট হয়েছিল। তখন আমার মনে হতে লাগলো মানুষটা (মান্না দে) আমাকে এতো কিছু দিল। আমি তাঁকে একটা গুরুদক্ষিণা দিতে পারি নাকি? আমার মনে মধ্যে খচ খচ করত। মনের ভেতর ভীষণ কষ্ঠ হতো। একদিন গৌরী কাকুকে বললাম আড্ডা নিয়ে একটা লিখে দিতে। তিনি এই গানটি রচনা করে দিলেন। যার একটি শব্দও কাটছাঁট করতে হয়নি। ‘কফি হাউজের আড্ডাটা আজ আর নেই’-গানটি ছিল মান্না দে জন্য আমার গুরুদক্ষিণা।”
এছাড়া শিল্পী মান্না দে-ও তাঁর আত্মজীবনীতে লিখে গেছেন, তিনিও গান প্রকাশের আগে কফি হাউজে কখনও আড্ডা দেননি।
এই গানের সাতটি চরিত্রই কাল্পনিক। তবে অনেকেই নিজের সঙ্গে মিল খুঁজে পান। এই যেমন দেশের শ্রোতাদের কাছে কাগজের রিপোর্টার মঈদুল হিসেবে প্রয়াত ক্রীড়ালেখক ও সাংবাদিক নূর আহমেদ মঈদুলকে আলোচনায় তুলে আনা হয়েছে। তবে গানটির সুরস্রষ্টা সুপর্ণকান্তি ঘোষ বলছেন, শুধু মঈদুল নয়, গানের কোনো চরিত্রের সঙ্গেই বাস্তবের কারও মিল নেই।