
ছবি: সংগৃহীত
উত্তরাধুনিক ডেস্ক: ভৈরবে সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত আলহাজ্ব মো. জিল্লুর রহমানের নামে সরকারি জিল্লুর রহমান মহিলা কলেজের নাম পরিবর্তন করে ভৈরব সরকারি মহিলা কলেজ নামকরণ করা হয়েছে। এতে নেটিজেনদের মাঝে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। এদিকে কলেজের নাম পরিবর্তনে প্রজ্ঞাপনটি হাতে পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ আবু হানিফা।
এবিষয়ে অধ্যক্ষ আবু হানিফা বলেন, মঙ্গলবার (৫ আগস্ট, ২০২৫) বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবালয়ে সরকারি কলেজ-৪ শাখা এর একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নাম পরিবর্তনের চিঠিটি কলেজে আসে।
২০১৩ সালে কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়। তখনও কলেজটি জিল্লুর রহমান এর নামেই ছিলো। আবু হানিফা বলেন, ‘আমি যতটুকু জেনেছি কলেজটি প্রতিষ্ঠাকালিন ভৈরব মহিলা কলেজ নামে ছিলো। পরবর্তীতে জিল্লুর রহমান এর নামে নামকরণ করা হয়।’
কিশোরগঞ্জ জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূখ্য সংগঠক শরীফুল হক জয় তার ফেসবুকে প্রয়াত রাষ্ট্রপতিকে সম্মান জানিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন, সেখানে তিনি লিখেন, ‘জিল্লুর রহমান আদতে ভৈরবের জন্য তেমন কিছু না করলেও ৭১, ৯০ আর ওয়ান ইলেভেনের সময় তার ভুমিকা ছিল যথেষ্ট দ্বায়িত্বশীল, পরিপক্ব ও সাহসী। ৫ আগস্টের পরপরই দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হচ্ছিল, তখন কলেজের নাম পরিবর্তনের জন্য আমাদের প্রশাসন বরাবর আবেদন বা বলার জন্য অনেকে বলেছিলেন। কিন্তু আমরা তখন না করেছিলাম, কারণটা খুব স্পষ্ট। তার জীবদ্দশায় স্বৈরাচারী ভূমিকায় অবতীর্ণ হননি তিনি। তিনি ছিলেন পুরো দেশের কাছে নন্দিত। তিনি দুর্নীতি, অনিয়ম করেছেন, এরকম নজিরও কম।’
বিভিন্ন নেটিজেন ও সুশীল সমাজের লোকজন মরহুম জিল্লুর রহমানের গুণকীর্তন করে ফেসবুকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে পোস্ট করেছেন। অনেকে নাম পরিবর্তনে খুশি হয়েছেন এমনও পোস্ট ফেসবুকে রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ প্রতিষ্ঠার সময়ের এক সদস্য জানান, ‘কলেজটি ভৈরববাসী মিলে ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন। তখন প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালন করেন অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন। পরে অর্থনৈতিক দৈন্যদশা ও ভাড়া ভবনে থাকায় গভর্নিংবডির সদস্যরা হতাশায় পড়ে ১৯৯৭ সালে তৎকালীন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জিল্লুর রহমান এর শরণাপন্ন হন। জিল্লুর রহমান ২৫ লক্ষ টাকা দিয়ে জায়গা ক্রয় করে কলেজকে দান করেন। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠাকালিন সদস্যরা কলেজটি তার নামে কলেজের নামকরণ করেন ও তৎকালীন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এস.কে সাদেক কলেজটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। পরে তিনি রাষ্ট্রপতি হলে কলেজটি সরকারিকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। ২০১৩ সালে সরকারি করা হয়।’
সময়ের পরিবর্তনে বা সরকার পরিবর্তনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বিমানবন্দর বা অন্যান্য সরকারি কিংবা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন হয়। এরকম ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে।
ভৈরব মহিলা কলেজের নাম দুইবার পরিবর্তন হলো। একবার এর সংস্কার কাজে অর্থ ও জমি প্রদান করে তৎকালিন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী (পররবর্তীতে রাষ্ট্রপ্রধান) জিল্লুর রহমান সুশীল সমাজের রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট কতিপয় সদস্য ও ম্যানেজিং কমিটির ব্যক্তিদের পরামর্শে কলেজের নাম বদলে ‘জিল্লুর রহমান মহিলা কলেজ’ নামকরণে সম্মত হন।
কিন্তু তখন এই বিষয়ে কোনো জনমত জরিপ করা হয়নি। সূত্রমতে, সে সময় অনেকেই ফুঁসছিলেন নাম বদলবার কারণে। এরকম ক্ষোভের প্রকাশ হয় মূলত জনগণের অংশগ্রহণ ও মতামত না নিয়ে কোনো জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করলে। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জনগণের প্রতিষ্ঠান। সবার অধিকার এখানে আছে।
যাইহোক, বর্তমান সরকারের এই নাম পরিবর্তন নিয়ে বন্দরনগরী ভৈরবে নেটিজেন ও সুশীলসমাজ, এমনকি সাধারণ মানুষের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ এই মহিলা কলেজের নাম পরিবর্তন নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করছেন, কেউ বা এই পরিবর্তনকে যুক্তিযুক্ত বলছেন। মোটা দাগে বলতে গেলে, এই নাম বদলানোর পেছনে সামাজিক মাধ্যমে নাম বদলের পক্ষে-বিপক্ষে অনেক কথা উঠে এসেছে।
রফিকুল ইসলাম মহিলা মহাবিদ্যালয়। ছবি: উত্তরাধুনিক
একটু পেছনে ফিরে তাকানো যাক। ভৈরব একটি সমৃদ্ধ বন্দরনগরী। মুক্তিযুদ্ধে ভৈরবের অবদান সবার আগে উঠে আসে। ভৈরবই একমাত্র নগরী, যা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সবার পরে স্বাধীন হয়। এটি এমন একটি বন্দরনগরী, যা দখলদার পাকিস্তানি বাহিনির কাছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থান হয়ে ওঠে। আর সে কারণেই এখানেই অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজস্ব রূপ ধারণ করেন, আর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে। অনেক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন, অনেকেই প্রাণ হাতে নিয়ে সম্মুখযুদ্ধে অবতীর্ণ হন। তাদের আত্মত্যাগ আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।
স্বাধীনতা লাভের পর ভৈরব গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে। তখন ভৈরবে একমাত্র সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ছিলো হাজী আসমত কলেজ।
ঐতিহ্যবাহী হাজী আসমত কলেজটি ১৯৪৭ সালে ভৈরবের দানবীর মরহুম হাজী আসমত আলী বেপারী এবং অন্যান্য শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ভৈরবের কেন্দ্রস্থলে প্রতিষ্ঠিত হয়। সেসময়ে কলেজের জন্য মরহুম হাজী আসমত আলী মুক্তহস্তে ৩৫ হাজার রুপি নিঃশর্ত দান করে অভূতপূর্ব ইতিহাস স্থাপন করেন। তৎকালীন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কলেজটির অনুমোদন দিয়েছিলেন। তদানীন্তন অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী জনাব হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর উপস্থিতিতে এই কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তদানীন্তন শিক্ষা মন্ত্রী সৈয়দ মোয়াজ্জেম উদ্দিন হোসাইন।
৩৯ বিঘা (১২.৮৫ একর) জমির ওপর এই কলেজটি নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে এর পরিধি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। কলেজটি গোটা কিশোরগঞ্জ জেলায় এক অনন্যসাধারণ বিদ্যাপীঠে পরিণত হয়েছে তা সর্বজনবিদিত ও স্বীকৃত।
বিভাগোত্তর সময়ে ভৈরবে মহিলা কলেজ বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাব অনুভূত হয়ে আসছিলো। বাঙালি মুসলমানেরা শিক্ষাদীক্ষায় পিছিয়ে ছিলেন বলে তাদের ভৈরবের কোনো হিন্দুদের আড়ত বা গদিতে চেয়ারে বসতে দেয়া হতো না, সেই মুসলমান বাঙালিরা শিক্ষায় এগিয়ে যেতে লাগলেন।
আশির দশকে এসে মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা অনিবার্য হয়ে উঠলো। উচ্চ শ্রেণিতে পড়তে গেলে মেয়েদেরকে কাছাকাছি অন্য জেলায় বা ঢাকায় গিয়ে পড়তে হতো। এইসময় ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় একটি মহিলা কলেজ। অনেকেই এই কলেজের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন, অনেক সুশীলসমাজ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে বা তাদের অপারগতায় রাজনৈতিক চাল চেলে কলেজ প্রতিষ্ঠার কাজে পদে পদে বাধা প্রদান করেন। প্রায় যুবাবয়সি প্রতিষ্ঠাতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সমাজসেবী এই প্রতিষ্ঠাতা কারুর কাছে মাথা নত করেননি। তার সমাজসেবা, পরোপকারী মনোভাব, তার উদারতা ও গতিশীল নেতৃত্বে তথাকথিত সুশীল সমাজের একাংশ ইর্ষাপরায়ণ হয়ে ওঠেন। এই প্রতিষ্ঠাতাই ভৈরবে প্রথম কিন্ডারগার্টেন স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। প্রাইমারি স্কুল স্থাপন করেন, মহিলা মাদরাসা গড়ে তোলেন এবং মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন।
অন্যপক্ষের গাত্রদাহ আরো বেড়ে গেলো। তারা আদাজল খেয়ে লাগলেন। পরিকল্পনা করলেন আরেকটি মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করার। ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হলো ভৈরব মহিলা কলেজ। সরকারের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিষয়ক নীতিমালা উপেক্ষা করে মাত্র দুই কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে তারা কলেজ স্থাপন করলেন। সরকারের নীতিমালায় একটি কলেজ থেকে আরেকটি কলেজের দূরত্ব অন্তত ৪-৫ কি.মি. দূরত্বে থাকবার কথা।
কিন্তু ইর্ষার আগুন তো সহজে নেভে না। এই নতুন মহিলা কলেজ স্থাপনে রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজের কী ক্ষতিবৃদ্ধি হলো, তা যারা ভৈরব মহিলা কলেজ স্থাপন করেছেন, তারাই ভালো বলতে পারবেন। কিন্তু সাধারণ জনগণ কথা বলতে জানেন। অভিভাবক, ছাত্রী, শিক্ষাবোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের কাছে রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজই শ্রেষ্ঠ হয়ে উঠলো।
রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজ যখন এর শৈশব থেকে ধীরে ধীরে বড়ো হয়ে উঠছিলো, তখন এর ছাত্রীর সংখ্যা ও কলেজের কলেবর বাড়ছিলো, সেই সময় ভৈরবেই মাত্র দুই কি. মি. এরও কম দূরত্বে আরেকটি মহিলা কলেজ স্থাপনের কোনো প্রয়োজনীয়তা ও যুক্তি ছিলো না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভৈরবের দুয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে যে, রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠার পর এই কলেজ ধীরে ধীরে এগুতে লাগলো তখন এই কলেজকে দাবিয়ে রাখার জন্য কতিপয় বিশিষ্ট ব্যক্তি ভৈরব মহিলা কলেজ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন, এবং প্রচার করেন যে, ‘ব্যক্তির নামে নয়, অঞ্চলের নামে কলেজ’ হবে। এই স্লোগানকে উপজীব্য করে তারা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজ। তখন এই কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও কমিটির ব্যক্তিগণ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্রী জোগাড় করতে লাগলেন। যেখানে এই কলেজের শৈশব অবস্থা ও ছাত্রী পাওয়া যাচ্ছিলো না, তখন মাত্র সাত বছরের ব্যবধানে ভৈরবে আরেকটি মহিলা কলেজ স্থাপনের আদৌ কোনো যৌক্তিকতা ছিলো কিনা, সেটা ভেবে দেখার বিষয়। বিশিষ্টজনদের ভাষ্যে এটা পরিস্কার যে, যারা সরকারি নিয়ম ভঙ্গ করে দুই কি.মি. এর কম দূরত্বে আরেকটি মহিলা কলেজ করছেন, সেখানে তাদের উদ্দেশ্য হলো ইতোমধ্যে স্থাপিত এবং ক্রম অগ্রসরমান রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজের ইমেজ নষ্ট করা বা এর ক্ষতিসাধনই এখানে মূল উদ্দেশ্য।
ভৈরব মহিলা কলেজ স্থাপিত হলো। তবে এর ভিত মজবুত ছিলো না। একটা সময় এসে গেলো যখন ভৈরব মহিলা কলেজ রসদ ও অর্থাভাবে ধুঁকতে লাগলো। কলেজটির নিজস্ব জায়গা ছিলো না। ছাত্রী স্বল্পতা ও অর্থাভাবে শিক্ষকদের বেতনাদি বন্ধ হয়ে গেলো। কলেজটিকে এমপিওভুক্ত করা হয়নি, বা করতে গিয়ে সেই ‘সুশীল সমাজ’ চরমভাবে ব্যর্থ হলেন।
যেটা তাদের করা উচিত ছিলো, তা তারা করেননি। তারা জনদরদী ও শিক্ষানুরাগী হিসেবে বরং রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারতেন। সেই মানসিকতা তারা ধারণ করতেন না, এটা সুস্পষ্ট।
তারা পরবর্তীতে যেটা করলেন, সেটাকে ব্যাক্তিপুজার পর্যায়ে ধরা যায়। তারা তৎকালিন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মরহুম জিল্লুর রহমানের দ্বারস্থ হলেন। জিল্লুর রহমান জায়গা দান করলেন এবং অর্থের যোগান দিলেন। সুশীল সমাজ জিল্লুর রহমানের নামে কলেজের নতুন নামকরণ করলেন। সেই ক্রান্তিকালে কথিত সুশীল সমাজ কলেজটিকে বাঁচাবার জন্য এর নামকরণ জিল্লুর রহমান মহিলা কলেজ করেন। পরবর্তীতে জনাব জিল্লুর রহমান রাষ্ট্রপতি হয়ে কলেজটিকে সরকারিকরণ করলেন। অথচ ঐতিহ্যবাহী হাজী আসমত কলেজ কিন্তু বহু পূর্ব থেকেই সরকারি কলেজে রূপান্তরিত হওয়ার দাবিদার ছিলো।
অন্যদিকে রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের একান্ত প্রচেষ্টা ও শ্রমে রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজটি দাঁড়িয়ে যায়। শুধু দাঁড়ানোই নয়, এটি কিশোরগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ মহিলা কলেজ এবং বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কলেজের মর্যাদা পায়।
এখন জিল্লুর রহমান মহিলা কলেজের নাম পরিবর্তনে কেউ কেউ অসন্তুষ্ট হলেও ফেসবুকের মন্তব্যে বা অন্য কোনো সোশাল মিডিয়াতে এই পরিবর্তনে কোনো প্রবল নিন্দা বা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনো বিক্ষোভও হয়নি।
জিল্লুর রহমান সর্বজন শ্রদ্ধেয় একজন নেতা ও ভৈরবের গর্ব ছিলেন। সুশীল সমাজ সেজে যে কতিপয় ব্যক্তিরা চাটুকারিতার মাধ্যমে তাকে প্ররোচিত করেছিলো ভৈরব মহিলা কলেজের আগে জিল্লুর রহমানের নাম বসাতে, তারা কি আজ বুঝতে পারছেন যে, জিল্লুর রহমানের নাম একটি বিদ্যাপীঠ থেকে মুছে গেলো মাত্র একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে?
পরিশেষে বলা যায়, ভৈরবের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে নোংরা রাজনীতি করাটা ভৈরবের জন্য অকল্যাণ বয়ে আনতে পারে। ইতিবাচক অর্থে বলতে গেলে বলতে হয় যে, ভালো কাজে, বিশেষত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন বা উন্নয়নে সুশীল সমাজের কতিপয় ব্যক্তিকে ইর্ষা বা বিদ্বেষমূলক মনোভাব পরিহার করে, ভৈরবের উন্নয়নে একযোগে কাজ করার মানসিকতা অর্জন করতে হবে।