
সংগৃহীত ছবি
বছর দুয়েক আগে এক শুটিং হাউসে বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়েছিলেন শারমিন আঁখি। শরীরের ৩৫ শতাংশ পুড়ে যায়। সেই ক্ষত ঢেকে তিনি আবারও ফিরেছেন তার চিরচেনা লাইট, ক্যামেরা ও অ্যাকশন জগতে। অন্তর্জালে উন্মুক্ত হয়েছে তার নাটক ‘ফাইভ গো ওয়াইল্ড’-এর আইটেম গান ‘মধু কই কই ২.০)’।
কাজ ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন ইমরুল নূর।
আইটেম গানে কি এই প্রথম পারফরম করলেন?
হ্যাঁ, আইটেম গানের পারফরম করার এটাই প্রথম অভিজ্ঞতা।
কেমন এক্সপেরিয়েন্স হলো?
এটা আমার জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, কারণ সুস্থ হওয়ার পর অভিনয়টা করে গিয়েছি কিন্তু শারীরিকভাবে আইটেম সং করার মতো স্ট্রেন্থ আমার ছিল না। অভিজ্ঞতা দারুণ, কিন্তু অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে।
আর ‘আইটেম গার্ল’ টার্মটা নিয়ে আপনার ব্যাখ্যা কেমন?
আইটেম গার্ল বলতে আমি বুঝি যে, কোনো গল্পে শুধু বিনোদনের জন্য উপলক্ষ্য তৈরি করে। গল্পে যার কোনো ভূমিকা থাকে না।
ভারী মেকআপ ও লাইটের আলোয় শুটিং করা কঠিন ছিল বলেছিলেন আগের সাক্ষাৎকারে, ‘ফাইভ গো ওয়াইল্ড’ বা এই আইটেম গানের শুটিংয়ে সেটা কিভাবে সামলে নিয়েছিলেন?
অনেক কষ্ট হয়েছে। অ্যাক্টিংয়ের সিনগুলোতে খুব একটা রিটাচ না করলেও গানের ক্ষেত্রে অনেক ভারী মেকআপ নিতে হয়েছে।
বারবার রিটাচ করে মেকআপ কারেকশন করতে হয়েছে। কষ্ট হলেও সামলাতে হয়েছে, এটার জন্য বাড়তি সময় পেয়েছিলাম।
আগুন অধ্যায় থেকে কতখানি রিকভার করলেন?
মানসিকভাবে পুরোপুরি রিকভার করতে পেরেছি। শারীরিক সুস্থতা খুব ধীর গতিতে হচ্ছে, বার্ন রিকভারি সিস্টেমটাই এমন, একটু স্লো। ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছি সম্পূর্ণ সুস্থতার জন্য।
ধৈর্যের ফল তো সব সময় সুমিষ্ট হয়।
ওই ঘটনার পর কি ‘ফাইভ গো ওয়াইল্ড’ আপনার বড় পরিসরে প্রথম কাজ?
হ্যাঁ! সেটা বলতে পারি, কারণ কাজটার আগ থেকেই নাচের প্রিপারেশন নিতে হয়েছে, রিহার্সাল করতে হয়েছে দুই সপ্তাহ, শুটিং সেটে সিনসিয়ার থাকতে হয়েছে আর সব কাজের তুলনায়।
কিছুদিন আগে মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি আমাদের সবাইকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছিল। আপনার ওপর এ ঘটনার প্রভাব নিশ্চয়ই বেশি?
অনেক বেশি। ঘটনার দিন থেকেই বারবার মনে পড়ছিল হাসপাতালে দুই মাস কী নিদারুণ যন্ত্রণার মধ্যে দিন কাটিয়েছি। আমি তো বড়, আমার সহ্য করতেই অনেক কষ্ট হয়েছে, বাচ্চাদের কষ্টগুলো বাসায় বসেই ফিল করছিলাম। আমি তো এটার প্রত্যক্ষদর্শী, প্রথম তিন দিন বাচ্চাদের সাথেই আমাকে রাখা হয়েছিল। বাচ্চাদের ওই আর্তনাদ কখনো ভুলতে পারব না।
সে সময় আপনি কিছু পরামর্শও দিয়েছিলেন, সেগুলো অনেকেই শেয়ার করেছিল…
হ্যাঁ! প্রচুর মানুষ যাচ্ছিল হাসপাতালে, কেউ হুজুগে কেউ ভিডিও করতে, আবার কেউ ফলফলাদি নিয়ে। শরীরের চামড়াও যদি না থাকে তখন জার্ম অনেক সহজে পেশেন্টকে কাবু করে ফেলে এবং এটাই বার্ন পেশেন্টের মৃত্যুর অন্যতম কারণ। ওখানে কেউ হাইজেনিক হয়ে যাচ্ছিল না।
নতুন আর কী কী কাজ করলেন? নাটক, ওটিটি অথবা চলচ্চিত্র; সবগুলো প্রসঙ্গে একটু বলুন…
নতুন কিছুই না। নাটক তো ওইভাবে করা হয় না। নির্মাতারা আমাকে নিয়ে অনেক বেশি ভাবছে মনে হয়, মেকআপে এর জন্য বাড়তি সময় দিয়ে আমাকে নিয়মিতভাবে কাজে নেবে, এত প্যারা কোন নির্মাতা নেবে? এটা পেশাদার জায়গা। কিন্তু জীবন তো থেমে থাকে না, আমি আমার মতো করে যাচ্ছি। নিজেকে ভালো রাখছি।
আপনার বেশ কিছু কাজের নির্মাতা আপনারই জীবনসঙ্গী। এ ক্ষেত্রে কাজটা কি সহজতর হয়? নাকি কোনো চ্যালেঞ্জও থাকে?
একদিক দিয়ে সহজ, আরেক দিক দিয়ে চ্যালেঞ্জ। সহজ এ জন্য, রাহাতকে আমি বুঝি ও কিভাবে চায় কাজটা, আবার রাহাতও বুঝে শুটিং সেটে কিভাবে আমাকে রেস্ট দিয়ে দিয়ে কাজটা করিয়ে নিতে হবে। আর চ্যালেঞ্জ সব সময় একটাই থাকে কাজটা ভালোভাবে করতে হবে, যদিও কখনোই রাহাতের সন্তুষ্টি আসেনা।
মঞ্চে কি ফিরেছেন? সেখানকার ব্যস্ততা জানাবেন…
মঞ্চ দিয়েই তো আমার দ্বিতীয় জীবনের অভিনয়ের পথচলা শুরু হয়েছে। আমার দল অরিন্দম এর নিয়মিত প্রযোজনা তারাশঙ্করের কবি নাটকের বসন চরিত্রটা নিয়মিত করে যাচ্ছি। আগামী সেপ্টেম্বরেই মঞ্চে শো রয়েছে। ইমরুল নূর, কালের কন্ঠ