ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
গত সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গে মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই অনুষ্ঠানে ভাষণে মোদি রাজ্যের তৃণমূল সরকারের উদ্দেশ্যে একাধিকবার ‘চুরি’, ‘চোর’ শব্দগুলো বলতে শোনা যায়। এবার তার সেসব ‘বিশেষণ’ নিয়ে কড়া নিন্দা জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে ‘মোদি নিজেই চোরের সর্দারদের নিয়ে মিটিং করেন’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার দুপুরে বর্ধমান শহরের মিউনিসিপ্যাল বয়েজ হাইস্কুলের মাঠে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এই মন্তব্য করেন মমতা।
পশ্চিমবঙ্গের দুর্নীতি নিয়ে মোদির ভাষণের প্রসঙ্গও টেনে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এ ধরনের কথা আশা করিনি। আমি তার চেয়ারকে সম্মান করি, তার উচিত আমাদের চেয়ারগুলোকে সম্মান করা। তিনি কেন বললেন, বাংলায় চোর আছে তাই টাকা বন্ধ করেছেন? সবচেয়ে বড় চোর তো উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, বিহার, যেখানে ডাবল ইঞ্জিন সরকার আছে!’
মোদিকে কটাক্ষ করে মমতা আরও বলেন, ‘নিজে চোরেদের সর্দারদের নিয়ে মিটিং করে বাংলাকে চোর বলতে লজ্জা করে না। বাংলা মাকে অসম্মান করলে আমি ছেড়ে কথা বলব না । বাংলায় সবাই চোর কেন বলবেন?’
সম্প্রতি মোদির পশ্চিমবঙ্গ সফর নিয়েও তাকে আক্রমণ করেন মমতা ৷ তার কথায়, ‘ভোট এলেই পরিযায়ী পাখির মতো বারবার বাংলায় উড়ে আসেন তিনি। প্রয়োজনে ৩৬৫ দিনই প্রধানমন্ত্রী আসতে পারেন। কারণ, তার বিমান খরচ, থাকা খাওয়া সবই বিনামূল্যে।’
মমতা বলেন, ‘মনে রাখবেন, আমি রাজ্যের তহবিল থেকে কিছু নিই না। আমি সাতবার সাংসদ ছিলাম, গত ১৪ বছরে আড়াই লাখ টাকারও বেশি পেনশন নিতে পারতাম, কিন্তু আমি এক পয়সাও নিইনি। কেউ সেটা মনে রাখে না। মুখ্যসচিব এখানে আছেন, আমি যখন কোনো সার্কিট হাউসে থাকি তার সম্পূর্ণ খরচ নিজে দেই।’
একই সঙ্গে দেশের নির্বাচন কমিশনকে তোপ দাগেন মমতা, ‘ভোটের সময় এলেই ওরা (বিজেপি) এনআরসি নিয়ে আসে, ভোটার তালিকা থেকে নাম কেটে দেওয়ার চেষ্টা করে। আমি নির্বাচন কমিশনকে সম্মান করি, কিন্তু অনুরোধ করব বিজেপির ললিপপ হবেন না। ওরা বলে বাংলায় বাংলাদেশি আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ভাষা ও আমাদের ভাষা এক হলে আমরা কী করব? দেশভাগ তো আমরা করিনি। বাংলাকে ওরা (বিজেপি) সহ্য করতে পারে না।’
সূত্র: আনন্দবাজার, সংবাদ প্রতিদিন