বর্তমানে সারা বিশ্বে আড়াই লাখের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা রেডক্রস৷ এটি শুধু রেডক্রসে লিপিবদ্ধ থাকা নিখোঁজদের সংখ্যা৷ এই সংখ্যা গত পাঁচ বছরে প্রায় ৭০ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাপী কাজ করা এই মানবাধিকার সংস্থাটি৷
নিখোঁজ হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে সংস্থাটি বিশ্বের নানা দেশে চলমান সংঘাতকে দায়ী করছে৷ এছাড়া ব্যাপক মাত্রায় অভিবাসন এবং যুদ্ধের সময়ে নিয়ম লঙ্ঘনকেও নিখোঁজ হওয়ার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছে রেডক্রস৷
ইন্টারন্যাশনাল কমিটি ফর রেডক্রসের (আইসিআরসি)-এর মহাপরিচালক পিয়েরে ক্রাহেনবুল বলেন, ‘সুদান থেকে ইউক্রেন, সিরিয়া থেকে কলম্বিয়া সবখানেই প্রবণতাটি পরিষ্কার৷ নিখোঁজদের সংখ্যা বাড়তে থাকার বিষয়টি শক্তশালীভাবে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে, সংঘর্ষে লিপ্ত গোষ্ঠীগুলো এবং যারা তাদেরকে সমর্থন করছে তারা যুদ্ধের সময়ে মানুষকে সুরক্ষা প্রদানে ব্যর্থ৷’
ইন্টারন্যাশনাল কমিটি ফর রেডক্রসের সহযোগী সংগঠন ফ্যামিলি লিংক নেটওয়ার্কে লিপিবদ্ধ তথ্য অনুযাযী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা বিশ্বে দুই লাখ ৮৪ হাজার ৪০০ মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন৷ নিখোঁজ থাকার এই সংখ্যা পাঁচ বছর আগের অর্থাৎ ২০১৯ সালের তুলনায় ৬৮ ভাগ বেশি৷
রেডক্রসের মহাপরিচালক পিয়েরে ক্রাহেনবুল অবশ্য এই সংখ্যাকে খুবই কম বলে মন্তব্য করেছেন৷ তিনি বলেন, প্রকৃত সংখ্যার তুলনায় এটি অত্যন্ত নগণ্য৷ সারাবিশ্বে লাখ লাখ মানুষ বছরের পর বছর কিংবা দশক সময় ধরে তাদের প্রিয়জনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে৷
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি সংখ্যার পেছনে রয়েছে একজন মা, একজন বাবা, একজন শিশু কিংবা ভাই-বোন৷ তাদের অনুপস্থিতির কারণে যেই ক্ষত তৈরি হয় তা পরিসংখ্যান দিয়ে বুঝানো সম্ভব নয়৷’
এদিকে সংঘাতে লিপ্ত রাষ্ট্রগুলোকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ঠেকাতে দায়িত্ব নেওয়ার পর জোর দিয়েছে আইসিআরসি৷
এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, নিখোঁজদের বিষয়ে রাষ্ট্র যেভাবে ভূমিকা রাখে তার ওপর সংঘাত পরবর্তী সময়ে সমাজ গঠন, শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং পরিবারের সাথে পুনর্মিলনের বিষয়টি নির্ভর করছে৷
সংগঠনটি জানায়, আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করলে নিখোঁজের সংখ্যাও কমে আসে৷
উল্লেখ্য, কোনো ব্যক্তির পরিবার যখন এই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেন সেইসময় থেকে ওই ব্যক্তিকে নিখোঁজ বলে গণণা করে সংস্থাটি৷ ব্যক্তির পরিবার তাকে ফিরে পাওয়া বা রেডক্রস বিষয়টিকে সমাপ্তি ঘোষণার আগ পর্যন্ত ওই ব্যক্তি নিখোঁজ বলে সংস্থাটির কাছে বিবেচিত৷
আইসিআরসি জানায়, গত বছর সারাবিশ্বে ১৬ হাজার ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে৷ তাছাড়া ৭০ হাজারের বেশি মানুষ তাদের পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন৷ সংস্থাটির মতে, প্রিয়জনদের কী হয়েছে প্রত্যেকের তা জানার অধিকার রয়েছে৷
সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস