০৪:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

গণঅভ্যুত্থানের ৬৫ হত্যাসহ ১১৩ মামলার তদন্তে সিআইডি

  • আপডেট সময়: ১১:৫৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • 52

ঢাকায় গণঅভ্যুত্থান চলাকালীন সময়ের একটি দৃশ্য। ছবি-সংগৃহীত


দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় দায়ের হওয়া ১১৩টি গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তার মধ্যে রয়েছে ৬৫টি হত্যা মামলা। মামলাগুলোতে মোট আসামি ৩ হাজার ৯১২ জন।

এসব মামলায় শীর্ষ পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রিপরিষদের অধিকাংশ সদস্য, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

গণঅভ্যুত্থান চলাকালীন আন্দোলনকারীদের দিকে বন্দুক তাক করে আছে পুলিশের একজন সদস্য। ছবি- সংগৃহীত

পুলিশ সদর দফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দমনে বর্বর বলপ্রয়োগের অভিযোগে সারাদেশে ১ হাজার ৭৩০টি মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে ৭৩১টি হত্যা মামলা। এসব ঘটনায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান বাসসকে জানান, ‘তদন্তাধীন মামলাগুলোর মধ্যে ঢাকা মহানগর এলাকায় ৬১টি মামলা এবং দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে ৫২টি মামলা রয়েছে। হত্যাকাণ্ড ছাড়াও অস্ত্র-গুলি, ভাঙচুর ও সহিংস হামলার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় বাংলাদেশ দণ্ডবিধি ছাড়াও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।’

গণঅভ্যুত্থান চালাকলীন পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড মারার পর এদিক-ওদিক ছুটছেন আন্দোলনকারীরা। ছবি- সংগৃহীত

তিনি আরও বলেন, ‘তদন্ত প্রক্রিয়ায় সিসিটিভি ফুটেজ, ভিডিও প্রমাণ, প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য এবং গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করা হচ্ছে। আমরা দ্রুত চার্জশিট আদালতে দাখিল করতে চাই, যাতে অপরাধীরা শাস্তি পায় এবং দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।’

পুলিশ সদর দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনায় ইতোমধ্যে ৩৪টি মামলায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৩টি হত্যা মামলা এবং ২১টি অন্যান্য মামলা। হত্যা মামলায় মোট ১ হাজার ৩৯০ জন এবং অন্যান্য মামলায় ৭৭৭ জনকে চার্জশিটে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ দুহাত মেলে দাঁড়িয়ে আছেন পুলিশের বুলেটের সামনে। ছবি-সংগৃহীত।

এক্ষেত্রে শেরপুর, ফেনী, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ঢাকা ও কুড়িগ্রাম জেলায় এবং রাজশাহী ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে সংঘটিত হত্যা মামলাগুলোর চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নওগাঁ, ময়মনসিংহ ও জামালপুর জেলার ২১টি অন্যান্য মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদর দফতর নিশ্চিত করেছে, সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তারা এসব মামলার তদারকি করছেন, যাতে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করা যায়।

আন্দোলনে সরকার পতনের পর গণভবনে গিয়ে ভিড় করেন আন্দোলনকারীরা। ছবি-সংগৃহীত।

এছাড়া তারা বলেছেন, এমন ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে, সে জন্য সমাজের প্রতিটি স্তরে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হবে।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে ঝরে যায় দেড় হাজারের বেশি প্রাণ। আহত হন কয়েক হাজার। যাদের একটা বিরাট অংশ হাত-পা-চোখ হারিয়ে এখনো ধুঁকছেন।

উত্তরাধুনিক

Writer, Singer & Environmentalist

জেমস-আলী আজমতের কনসার্টে পুনম ও মধুবন্তী 

গণঅভ্যুত্থানের ৬৫ হত্যাসহ ১১৩ মামলার তদন্তে সিআইডি

আপডেট সময়: ১১:৫৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঢাকায় গণঅভ্যুত্থান চলাকালীন সময়ের একটি দৃশ্য। ছবি-সংগৃহীত


দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় দায়ের হওয়া ১১৩টি গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তার মধ্যে রয়েছে ৬৫টি হত্যা মামলা। মামলাগুলোতে মোট আসামি ৩ হাজার ৯১২ জন।

এসব মামলায় শীর্ষ পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রিপরিষদের অধিকাংশ সদস্য, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

গণঅভ্যুত্থান চলাকালীন আন্দোলনকারীদের দিকে বন্দুক তাক করে আছে পুলিশের একজন সদস্য। ছবি- সংগৃহীত

পুলিশ সদর দফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দমনে বর্বর বলপ্রয়োগের অভিযোগে সারাদেশে ১ হাজার ৭৩০টি মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে ৭৩১টি হত্যা মামলা। এসব ঘটনায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান বাসসকে জানান, ‘তদন্তাধীন মামলাগুলোর মধ্যে ঢাকা মহানগর এলাকায় ৬১টি মামলা এবং দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে ৫২টি মামলা রয়েছে। হত্যাকাণ্ড ছাড়াও অস্ত্র-গুলি, ভাঙচুর ও সহিংস হামলার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় বাংলাদেশ দণ্ডবিধি ছাড়াও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।’

গণঅভ্যুত্থান চালাকলীন পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড মারার পর এদিক-ওদিক ছুটছেন আন্দোলনকারীরা। ছবি- সংগৃহীত

তিনি আরও বলেন, ‘তদন্ত প্রক্রিয়ায় সিসিটিভি ফুটেজ, ভিডিও প্রমাণ, প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য এবং গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করা হচ্ছে। আমরা দ্রুত চার্জশিট আদালতে দাখিল করতে চাই, যাতে অপরাধীরা শাস্তি পায় এবং দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।’

পুলিশ সদর দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনায় ইতোমধ্যে ৩৪টি মামলায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৩টি হত্যা মামলা এবং ২১টি অন্যান্য মামলা। হত্যা মামলায় মোট ১ হাজার ৩৯০ জন এবং অন্যান্য মামলায় ৭৭৭ জনকে চার্জশিটে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ দুহাত মেলে দাঁড়িয়ে আছেন পুলিশের বুলেটের সামনে। ছবি-সংগৃহীত।

এক্ষেত্রে শেরপুর, ফেনী, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ঢাকা ও কুড়িগ্রাম জেলায় এবং রাজশাহী ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে সংঘটিত হত্যা মামলাগুলোর চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নওগাঁ, ময়মনসিংহ ও জামালপুর জেলার ২১টি অন্যান্য মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদর দফতর নিশ্চিত করেছে, সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তারা এসব মামলার তদারকি করছেন, যাতে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করা যায়।

আন্দোলনে সরকার পতনের পর গণভবনে গিয়ে ভিড় করেন আন্দোলনকারীরা। ছবি-সংগৃহীত।

এছাড়া তারা বলেছেন, এমন ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে, সে জন্য সমাজের প্রতিটি স্তরে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হবে।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে ঝরে যায় দেড় হাজারের বেশি প্রাণ। আহত হন কয়েক হাজার। যাদের একটা বিরাট অংশ হাত-পা-চোখ হারিয়ে এখনো ধুঁকছেন।