ঝিনাইদহে পুলিশ হত্যা মামলার গ্রেফতারকৃত আসামি লিয়াকত শেখ ওরফে লিয়া। ছবি- ঢাকা মেইল
ঝিনাইদহে বহুল আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা এসআই মিরাজুল ইসলাম হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক এক আসামি মো. লিয়াকত শেখ ওরফে লিয়াকে (৪২) গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব।
সোমবার (৭ অক্টোবর) রাতে ঢাকার ধামরাইয়ের চরডাউটিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও ডাকাতি মামলাসহ ছয়টি মামলা রয়েছে।
গ্রেফতার লিয়াকত রাজবাড়ী সদরের নিমতলার রহমত শেখের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১০ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান।
তিনি জানান, ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট রাতে ঝিনাইদহ জেলা শহরের বাস মালিক সমিতি অফিসের সামনে একটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সেখান থেকে একটি পরিত্যক্ত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
পরে জানা যায়, মোটরসাইকেলটি ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিরাজুল ইসলামের। তবে ঘটনাস্থলে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন না এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। যা বিষয়টিকে আরও রহস্যজনক করে তোলে।
এরপর খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওইদিন সন্ধ্যায় ইফতারের পর এসআই মিরাজুল ইসলাম প্রয়োজনীয় দাপ্তরিক কাগজপত্র, সরকারের ইস্যুকৃত পিস্তল, গুলি ও ম্যাগাজিনসহ নিজ মোটরসাইকেলে করে কর্মস্থল ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের উদ্দেশে রওনা হন। কিন্তু কর্মস্থলে তিনি আর পৌঁছাননি। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
পরদিন (২৪ আগস্ট) সকালে ঝিনাইদহ ভেটেরিনারি কলেজের পূর্ব পাশের একটি পানিভর্তি ডোবা থেকে পুলিশ এসআই মিরাজুলের হাত-পা বাঁধা মৃতদেহ উদ্ধার করে। সন্ত্রাসীরা তার কাছে থাকা অস্ত্র, গুলি, মোটরসাইকেল ও অন্যান্য সরকারি মালামাল ছিনতাইয়ের উদ্দেশে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
তিনি আরও জানান, দীর্ঘ তদন্ত ও বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০২৫ সালের ৭ জুলাই ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মামলার রায় ঘোষণা করেন। আদালত মামলার আসামি লিয়াকত শেখ ওরফে লিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেন। কিন্তু তিনি আগে থেকে পলাতক ছিলেন।
গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান।