
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের একটি অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়েছিল হামাস। এরপর গাজা আক্রমণ করে ইসরায়েল। এখনও সেই লড়াই অব্যাহত এবং গত দু’বছরে গাজা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। উত্তর, দক্ষিণ এবং গাজা শহরে লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের হামলায় হামাসের প্রথম সারির অধিকাংশ নেতা নিহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে ২ বছরের লড়াইয়ের পর কতটা শক্তি হারিয়েছে হামাস?
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, গত দু’বছরে হামাসের প্রভূত ক্ষতি হয়েছে। সংগঠন ভেঙে গেছে। নেতৃত্ব ভেঙে পড়েছে। কিন্তু হামাস সম্পূর্ণ ক্ষমতা হারিয়েছে, এমন মনে করার কারণ নেই। যে কোনো সময় হামাস নতুন করে সংঘবদ্ধ হতে পারে। নতুন নেতৃত্ব তৈরি হতে পারে এবং নতুন করে তারা শক্তি সঞ্চয় করতে পারে। তবে ইসরায়েলের হাতে যে অস্ত্র আছে, হামাসের হাতে সেই পরিমাণ অস্ত্র নেই বলেও জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজের ওয়ার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মারিনা মিরন বলেছেন, ‘হামাস প্রচুর ঘাতপ্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে গেছে। কিন্তু নতুন করে সংঘবদ্ধ হওয়ার ক্ষমতা এখনো তাদের আছে। গাজায় তাদের প্রভাবও যথেষ্ট।’
দু’বছর আগে হামাস যখন ইসরায়েলে আক্রমণ চালিয়েছিল এবং প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, তখন তাদের যোদ্ধার সংখ্যা ছিল ২৫ থেকে ৩০ হাজার। গত দু’বছরে ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাসের অন্তত ১৭ থেকে ২৩ হাজার যোদ্ধা নিহত হয়েছে। কিন্তু ইসরায়েল এই দাবির সপক্ষে কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ দেয়নি।
বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, ইসরায়েলের দেওয়া সংখ্যা ঠিক তথ্য নয়। বহু হামাস যোদ্ধা এখনো নিরাপদ আশ্রয় থেকে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
ইসরায়েলের সামরিক তথ্য খতিয়ে দেখে কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, সব মিলিয়ে আট হাজার ৫০০ হামাস যোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। ইসরায়েলের একটি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, ইসরায়েলের সেনা বাহিনীর কাছে ২০২৫ সালের মে মাস পর্যন্ত নথিভুক্ত নিহত হামাস যোদ্ধার নামের সংখ্যা আট হাজার ৯০০।
অন্যদিকে এখনো পর্যন্ত গাজায় মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৬৭ হাজার মানুষের। অর্থাৎ, দেখা যাচ্ছে মোট নিহতের ৮০ শতাংশ মানুষ বেসামরিক নাগরিক। যার মধ্যে নারী এবং শিশুও আছে। এছাড়াও আহত প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার।
সংবাদসংস্থা রয়টার্সের একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গত দু’বছরে হামাস অন্তত ১০ থেকে ১৫ হাজার নতুন যোদ্ধা নিয়োগ করেছে। ফলে হামাস সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে এবং অকেজো হয়ে গেছে, এমনটা মনে করার কারণ নেই বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যদিও যুদ্ধ বন্ধে কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় গতকাল সোমবার থেকে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে যে, এই আলোচনার মধ্য দিয়ে গাজা যুদ্ধের অবসান হবে।
সূত্র: ডয়চে ভেলে























