
বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের মিডল অর্ডার এখন যেন এক অবিরাম ট্র্যাজেডি। শামিম হোসেন পাটোয়ারি, জাকের আলী অনিক কিংবা তাওহীদ হৃদয়, সুযোগের পর সুযোগ পেয়েও কেউই ধারাবাহিক পারফরম্যান্স দেখাতে পারছেন না। ব্যাট হাতে তাদের ব্যর্থতা শুধু দলের স্কোরবোর্ডেই নয়, দর্শকদের ধৈর্যেও কঠিন পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঠের গ্যালারি থেকে উঠছে বিদ্রুপের সুর, সামাজিক মাধ্যমে ঝড় তুলছে সমালোচনা, সবকিছু ঘুরেফিরে এসে পড়ছে এই ব্যাটসম্যানদের ওপর।
সামনেই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ। এর আগে সামাজিক মাধ্যমে দলে পরিবর্তনের দাবি উঠেছে প্রবলভাবে। পুরনো নামগুলো আবার ভেসে উঠছে- মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, সাব্বির রহমানের মতো অভিজ্ঞরা। কেউ কেউ বলছেন তরুণদের কথা, ইয়াসির আলী রাব্বি বা আকবর আলী। কিন্তু নির্বাচকরা কি এই জনপ্রিয় চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন? নাকি আবারও একই মুখ দেখে মাঠে নামবে দল?
এদিকে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের নিয়ম সবার জন্য সমান নয়, এমন অভিযোগ নতুন নয়। শামিম, জাকেররা টানা ব্যর্থ হলেও জায়গা ধরে রাখছেন। তাওহীদ হৃদয়ের ওপর দলের অগাধ ভরসা। অথচ নাঈম শেখ এক ম্যাচ খেলেই বাদ পড়লেন। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন চট্টগ্রামে দলের সঙ্গে গিয়েও হঠাৎ ছিটকে গেলেন। এই সিদ্ধান্তের যুক্তি কী?
নাঈম অনেক দিন ধরে জাতীয় দলে পারফর্ম করছেন না। ওয়ানডেতে টানা পাঁচ ম্যাচও খেলেননি। তাকে এক ম্যাচের জন্য ডেকে আবার বাদ দেওয়ার অর্থ কী? সাইফউদ্দিনও ধারাবাহিক সুযোগ পাননি। এশিয়া কাপে সামান্য সুযোগে বড় কিছু দেখাতে পারেননি। তবু তাকে হঠাৎ ছেঁটে ফেলা বেমানান। একই নিয়ম কেন শামিম, জাকের বা হৃদয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োগ হয় না?
এই অবস্থায় নির্বাচকদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হলো; তাৎক্ষণিক সমাধান নয়, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি করা। এক-দুই ম্যাচের পারফরম্যান্স দেখে কাউকে বাদ বা নেওয়ার সংস্কৃতি বদলাতে হবে। তরুণদের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে দল গঠন প্রক্রিয়াকে আরও স্থায়ী ও ভারসাম্যপূর্ণ করতে না পারলে, বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ব্যাটিংয়ের এই ট্র্যাজেডি হয়তো চলতেই থাকবে।


























