০৩:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

বরগুনায় ভয়াবহ হয়ে উঠছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি, মৃত্যু ২০

  • আপডেট সময়: ০২:০৫:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫
  • 5

বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে। রোগীর সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি হাসপাতালের পরিকাঠামো ও জনবল সংকটে সৃষ্টি হয়েছে দুর্বিষহ অবস্থা। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এরই মধ্যে দুই মাসে বরগুনার ২০ রোগী মারা গেছেন।

এছাড়া ২৫০ শয্যার বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৮৭ জন। অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ক্লিনিকগুলোতে আছেন আরও ৪৫ জন। প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন ৫০-৬০ জন নতুন রোগী।

বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ১০৫ জনে পৌঁছেছে। আর এপ্রিল থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ২০ জন। এরমধ্যে ৫ জন বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে মারা যান। বাকিরা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সময় মৃত্যুবরণ করেন।

শুধু বরগুনা হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪৭ জন। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে আরও ভর্তি রয়েছেন ১০ জন। বরগুনা জেলার হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন ২১৭ জন রোগী।

এবছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৮৮৮ জন। এরমধ্যে শুধু বরগুনা সদর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৭৫৬ জন ডেঙ্গুরোগী।

তবে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে বরগুনার আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে সরকার অতিরিক্ত ১০ জন চিকিৎসক ও ১০ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স পদায়ন করলেও, ১০ দিন পার হলেও যোগদান করেছেন মাত্র ৫ জন চিকিৎসক ও একজন নার্স।


আরো পড়ুন

আরও ২৪৮ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি
https://www.jagonews24.com/health/news/1030102

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডেঙ্গুরোগীর চাপে জায়গা নেই হাসপাতালে। অনেকে মেঝে ও বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রোগীদের এই চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক-নার্সরা। অনেকেই ডেঙ্গুর টেস্টে পজিটিভ হওয়ার পরই আতঙ্কে চলে আসছেন হাসপাতালে। আর রোগীর সঙ্গে গড়ে থাকছেন ৩ জন স্বজন। সবমিলিয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটিতে প্রতিদিন অন্তত ৫০০-৬০০ জন রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

আর এই ৬০০ রোগীর সঙ্গে হাসপাতালে থাকছেন প্রায় দেড় হাজার মানুষ। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি কাজ করছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা।

হাসপাতালের মেডিসিন কনসালটেন্ট ডা. আশিকুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত অনেক রোগীই ভর্তি যোগ্য নয়। অন্য জেলার সঙ্গে এ জেলার পার্থক্য হচ্ছে, এক দিনের জ্বর নিয়েও অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এমনিতেই বরগুনা হটস্পট এবং আক্রান্ত হওয়া রোগীর ভর্তি সংখ্যা বেশি। এ কারণেই আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।

এ বিষয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ জাগো নিউজকে বলেন, রোগীর সংখ্যা কমছে না, বরং বাড়ছে। তবে আমরা সবাইকে বলছি জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে, পাতলা পায়খানা, বমি, মাথাব্যথা বা অন্য জটিলতা দেখা দিলে তবেই হাসপাতালে ভর্তি হতে।

এদিকে বরগুনায় ডেঙ্গু সংক্রমণের কারণ অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।

 

 

উত্তরাধুনিক

Writer, Singer & Environmentalist

বরগুনায় ভয়াবহ হয়ে উঠছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি, মৃত্যু ২০

আপডেট সময়: ০২:০৫:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে। রোগীর সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি হাসপাতালের পরিকাঠামো ও জনবল সংকটে সৃষ্টি হয়েছে দুর্বিষহ অবস্থা। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এরই মধ্যে দুই মাসে বরগুনার ২০ রোগী মারা গেছেন।

এছাড়া ২৫০ শয্যার বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৮৭ জন। অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ক্লিনিকগুলোতে আছেন আরও ৪৫ জন। প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন ৫০-৬০ জন নতুন রোগী।

বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ১০৫ জনে পৌঁছেছে। আর এপ্রিল থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ২০ জন। এরমধ্যে ৫ জন বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে মারা যান। বাকিরা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সময় মৃত্যুবরণ করেন।

শুধু বরগুনা হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪৭ জন। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে আরও ভর্তি রয়েছেন ১০ জন। বরগুনা জেলার হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন ২১৭ জন রোগী।

এবছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৮৮৮ জন। এরমধ্যে শুধু বরগুনা সদর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৭৫৬ জন ডেঙ্গুরোগী।

তবে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে বরগুনার আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে সরকার অতিরিক্ত ১০ জন চিকিৎসক ও ১০ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স পদায়ন করলেও, ১০ দিন পার হলেও যোগদান করেছেন মাত্র ৫ জন চিকিৎসক ও একজন নার্স।


আরো পড়ুন

আরও ২৪৮ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি
https://www.jagonews24.com/health/news/1030102

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডেঙ্গুরোগীর চাপে জায়গা নেই হাসপাতালে। অনেকে মেঝে ও বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রোগীদের এই চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক-নার্সরা। অনেকেই ডেঙ্গুর টেস্টে পজিটিভ হওয়ার পরই আতঙ্কে চলে আসছেন হাসপাতালে। আর রোগীর সঙ্গে গড়ে থাকছেন ৩ জন স্বজন। সবমিলিয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটিতে প্রতিদিন অন্তত ৫০০-৬০০ জন রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

আর এই ৬০০ রোগীর সঙ্গে হাসপাতালে থাকছেন প্রায় দেড় হাজার মানুষ। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি কাজ করছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা।

হাসপাতালের মেডিসিন কনসালটেন্ট ডা. আশিকুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত অনেক রোগীই ভর্তি যোগ্য নয়। অন্য জেলার সঙ্গে এ জেলার পার্থক্য হচ্ছে, এক দিনের জ্বর নিয়েও অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এমনিতেই বরগুনা হটস্পট এবং আক্রান্ত হওয়া রোগীর ভর্তি সংখ্যা বেশি। এ কারণেই আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।

এ বিষয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ জাগো নিউজকে বলেন, রোগীর সংখ্যা কমছে না, বরং বাড়ছে। তবে আমরা সবাইকে বলছি জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে, পাতলা পায়খানা, বমি, মাথাব্যথা বা অন্য জটিলতা দেখা দিলে তবেই হাসপাতালে ভর্তি হতে।

এদিকে বরগুনায় ডেঙ্গু সংক্রমণের কারণ অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।