
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম (৩৬) নিজের জীবন বিপন্ন করে বাঁচিয়েছেন সহকর্মী ও সাধারণ মানুষের প্রাণ।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে নিজের দায়িত্ব পালনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের কাছে বীরের সম্মান পাচ্ছেন দিদারুল ইসলাম। খবর নিউইয়র্ক পোস্টের।
মৃত্যুর আগে তিনি লাস ভেগাসের বাসিন্দা বন্দুকধারী শেন তামুরাকে গুলি করেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই যুবককেকে না থামালে আরও অনেক প্রাণহানি ঘটতো।
এ কারণে নিউইয়র্ক পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ হামলায় নিহত দিদারুল ইসলামকে একজন বীর পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে অভিহিত করেছেন।
নিউইয়র্ক পুলিশও দিদারুলের প্রশংসা করে বিবৃতি দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, দিদারুল ইসলাম পুলিশ বিভাগকে তার সেরা পারফরম্যান্স দিয়েছেন। নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের বাঁচানোর জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।
তার মৃত্যু আমাদেরকে শোকস্তব্ধ করে দিয়েছে। আমরা তার আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং তার উত্তরাধিকারকে আমরা সবসময় সম্মান জানাব।
একইসঙ্গে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস দিদারুলের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এরিক অ্যাডামস বলেছেন, তিনি এই শহরকে ভালবাসতেন এবং আমরা জানতে পেরেছি যে তিনি বিশ্বাসী ছিলেন, ঈশ্বরের প্রতি অনুগত ছিলেন এবং ধর্মনিষ্ঠ জীবনযাপন করতেন।
তিনিই আসলে এই শহরকে সত্যিকার অর্থে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের নিউইয়র্কার, এমন একজন নিউইয়র্কার যিনি সততা ও দায়িত্বের সঙ্গে নিজের পেশাগত কর্তব্য পালনের পাশাপাশি হৃদয় দিয়ে এই শহরকে ভালবাসতেন।
আমি তার পরিবারের সঙ্গে সোমবার রাতেই দেখা করেছি এবং বলেছি যে তিনি একজন বীর ছিলেন এবং আমরা তাকে নিয়ে গর্বিত।
সোমবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে একটি বহুতল ভবনে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করেন শেন ডেভন তামুরা নামের ২৭ বছর বয়সী এক যুবক।
সেসময় নিজ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিহত হন নিউইয়র্ক পুলিশের কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম। এছাড়া আরও ৩ জন নিহত হয়েছেন।
বন্দুকধারী ওই যুবকও নিহত হয়েছেন এবং প্রাথমিকভাবে জানা গেছে যে শেন তামুরা মানসিকভাবে অসুস্থ।
দিদারুল ইসলাম নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে ৪৭ নম্বর প্রিসিংক্ট এলাকার পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। ২০২১ সালে তিনি নিউইয়র্ক পুলিশে যোগ দেন।
দিদারুল ইসলাম বিবাহিত ছিলেন। নিউইয়র্ক সিটি পুলিশের কমিশনার জেসিকা টিস্চ জানিয়েছেন, দিদারুল ও তার স্ত্রীর দুই ছেলে আছে এবং এই দম্পতি তাদের তৃতীয় সন্তানের অপেক্ষায় ছিলেন। দিদারুলের স্ত্রী আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা।