
আলজাজিরার ৫ সাংবাদিককে হত্যার মধ্য দিয়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা সম্পূর্ণ দখলের অভিযান শুরু করেছে বলে দাবি করেছে গাজার সরকারী মিডিয়া অফিস।
সোমবার (১১ আগস্ট) ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে বলছে, ‘আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের হামালার লক্ষ্যবস্তু করার মাধ্যমে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী যুদ্ধবিমানগুলো আরও একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধাপরাধ করল। এই হামলার উদ্দেশ্য গাজায় তাদের গণহত্যার তথ্য ও প্রমাণ বিশ্ববাসীর কাছে গোপন করা। এটি গাজায় তাদের অতীতের গণহত্যা এবং ভবিষ্যতে যে গণহত্যা চালানোর ইচ্ছা রয়েছে তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এই সাংবাদিকদের হত্যার মাধ্যমে গাজা সম্পূর্ণ দখল করার যে দুরভিসন্ধীমূলক পরিকল্পনা দখলদার শক্তি নিয়েছে— সেই পরিকল্পনার বাস্তবায়নও শুরু হয়েছে।’
এদিকে পৃথক বিবৃতিতে আল জাজিরার সাংবাদিকদের হত্যার নিন্দা জানিয়ে, এটিকে ফ্যাসিবাদ ও অপরাধের সকল সীমা অতিক্রমকারী নৃশংস অপরাধ বলে অভিহিত করেছে হামাস।
গাজা উপত্যকায় সাংবাদিকদের ওপর ইসরায়েলের ক্রমাগত হামলাকে ‘আন্তর্জাতিক মূল্যবোধ এবং আইনের সম্পূর্ণ পতনের ইঙ্গিত’ বলে উল্লেখ করেছে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী আরও বলছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে নীরবতা ইসরায়েলি দখলদারিত্বকে কোনো ধরনের বাধা বা জবাবদিহিতা ছাড়াই সাংবাদিকদের হত্যা চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করেছে।
গত শুক্রবার গাজা শহর দখলের নেওয়ার জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পরিকল্পনায় অনুমোদন করেছে দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা। তবে নেতানিয়াহুর এই পরিকল্পনা প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক বিশ্বে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং ইউরোপের ২৭টি দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) কঠোর সমালোচনার পাশাপাশি নেতানিয়াহুকে এই পরিকল্পনা স্থগিতের আহ্বান জানায়। কিন্তু এসব আহ্বানকে উপেক্ষা করে গাজায় ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।
এর মধ্যেই রোববার ইসরায়েলের চালানো বোমা হামলায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার পাঁচ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল শিফার প্রধান ফটকের সামনে একটি তাঁবুতে বসে কাজ করছিলেন তারা।
আল জাজিরা জানিয়েছে, নিহত সাংবাদিকরা হলেন— আনাস আল শরীফ (২৮), মোহাম্মদ ক্রিকেহ (সংবাদদাতা), ইব্রাহিম জাহের (ক্যামেরা অপারেটর), মোহাম্মদ নওফাল ও মোমেন আলিওয়া। তাদের মধ্যে আনাস আল শরীফ সবচেয়ে বেশি পরিচিত ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি উত্তর গাজা থেকে রিপোর্টিং করে আসছিলেন। নিহত হওয়ার কিছু সময় আগেই তিনি সামাজিকমাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করেছিলেন, যেখানে গাজার পূর্ব ও দক্ষিণাংশে তীব্র বোমাবর্ষণের কথা উল্লেখ করেন।
সূত্র: আনাদোলু























