০৫:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

ইসরায়েলি চলচ্চিত্রশিল্প বয়কটের ডাক বিশ্বের ১৮০০ শিল্পী-নির্মাতার

  • আপডেট সময়: ০৪:২২:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • 57

ছবিতে বাঁ থেকে মার্ক রাফেলো, এমা স্টোন, জেভিয়ার বারডেম ও অলিভিয়া কোলম্যান


গত দুই বছর ধরে গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রতিবাদে বিশ্ব চলচ্চিত্র শিল্পের ১,৮০০-এরও বেশি অভিনেতা, পরিচালক ও শিল্পী ইসরায়েলি চলচ্চিত্রশিল্পকে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন।

তাদের দাবি—গণহত্যা ও বর্ণবাদের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোকে আর কোনো সহযোগিতা নয়।

সম্প্রতি ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক খোলা চিঠিতে তারা এ ঘোষণা দেন।

সেই চিঠিতে বলা হয়, ‘আমরা প্রতিজ্ঞা করছি, ইসরায়েলি সরকার-সমর্থিত বা গণহত্যা ও বর্ণবাদের সঙ্গে জড়িত কোনো চলচ্চিত্র উৎসব, সিনেমা হল, সম্প্রচারমাধ্যম বা প্রযোজনা সংস্থার সাথে কাজ করব না, সেখানে আমাদের চলচ্চিত্র প্রদর্শন করব না বা কোনো ধরনের সহযোগিতায় যুক্ত হবো না।’

চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, এ বয়কটের লক্ষ্য কোনো ব্যক্তিগত শিল্পী নন, বরং যেসব প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলি সরকারের সঙ্গে জড়িত বা তাদের কর্মকাণ্ডকে ‘সাদা ধোঁয়া’ দেয়, কেবল সেসব প্রতিষ্ঠান।

এর আগে ইতালির চলচ্চিত্রকর্মীরা ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভাল বয়কটের আহ্বান জানিয়েছিলেন। ২০০ জনের বেশি ব্রিটিশ ও আইরিশ লেখকও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একই দাবি জানিয়েছেন।

এর ফলে জেরুজালেম ফিল্ম ফেস্টিভাল, হাইফা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভাল, ডোকাভিভ, তেল আবিব ইন্টারন্যাশনাল ডকুমেন্টারি ফিল্ম ফেস্টিভাল এবং টিএলভি ফেস্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ আসরে থাকবে না তাদের সিনেমা বা উপস্থিতি।

‘ফিল্ম ওয়ার্কার্স ফর প্যালেস্টাইন’-এর বিবৃতিতে বলা হয়েছে—এমন এক সংকটময় মুহূর্তে যখন বিশ্বের বহু সরকার গণহত্যাকে সমর্থন দিয়ে চলেছে, তখন এই ভয়াবহতাকে রুখে দিতে আমাদের সবকিছু করতে হবে। ইসরায়েলি সিনেমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান, পরিবেশক বা বিক্রয় এজেন্ট—কেউই কখনো ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকারের পক্ষে দাঁড়ায়নি।

বয়কটের ডাক দেওয়া তারকাদের তালিকায় রয়েছে—মার্কিন তারকা এমা স্টোন, মার্ক রাফালো, আয়ো এডেবিরি, সিনথিয়া নিকসন; ব্রিটিশ অভিনেত্রী অলিভিয়া কোলম্যান, রিজ আহমেদ, টিল্ডা সুইনটন, জো অ্যালউইন; স্প্যানিশ অভিনেতা জেভিয়ার বারডেম; এ ছাড়া আরো রয়েছেন লিলি গ্ল্যাডস্টোন, হান্না আইনবাইন্ডার, পিটার সারসগার্ড, আইমি লু উড, পাপা এসিডু, গ্যয়েল গার্সিয়া বার্নাল, মেলিসা বারেরা, জশ ও’কনর প্রমুখ।

নির্মাতাদের তালিকায় রয়েছেন ইয়র্গোস ল্যান্থিমোস, আভা ডুভার্নে, অ্যাডাম ম্যাককে, বুটস রিলে, এমা সেলিগম্যান, জোশুয়া ওপেনহাইমার, গায়েল গার্সিয়া বারনাল, কেন লোচ, মাইক লেই প্রমুখ।

এর আগে গেল মাসে ইতালীয় চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একটি দল, ভেনিস ফর প্যালেস্টাইন, শহরটির চলচ্চিত্র উৎসবে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে, একটি চিঠিতে অস্কার বিজয়ী পরিচালক গুইলারমো ডেল টোরোসহ ২০০০ জনের স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছে।

প্রায় ২০০ ব্রিটিশ এবং আইরিশ লেখক ইসরায়েলকে ‘তাৎক্ষণিক এবং সম্পূর্ণ’ বয়কটের আহ্বান জানান। তাদের ভাষ্যে, ‘এই বয়কট ততক্ষণ চলবে যতক্ষণ না পর্যন্ত গাজার জনগণকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানীয় জল, খাদ্য এবং চিকিৎসা সরবরাহ করা হয় এবং জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গাজার জনগণের জন্য অন্য সব ধরনের ত্রাণ এবং প্রয়োজনীয়তা পুনরুদ্ধার করা হয়।’

সে সময় লেখকরা আরো বলেছিলেন, ‘আমরা সব জিম্মি এবং সব পক্ষের অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই বন্দি ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করছি। আমরা পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বসতি স্থাপনকারী সহিংসতা বন্ধ করার দাবি করছি।

আমরা হামাস এবং ইসরায়েলের দ্বারা অবিলম্বে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং সহিংসতা বন্ধের দাবি করছি।’

সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল, আলজাজিরা, আরব নিউজ, ডেডলাইন

উত্তরাধুনিক

Writer, Singer & Environmentalist

ভ্যাঙ্কি আংটি: ঐশ্বরিয়ার হাতের এই আংটি কখনও খোলেন না, জানেন এর পেছনের গল্প?

ইসরায়েলি চলচ্চিত্রশিল্প বয়কটের ডাক বিশ্বের ১৮০০ শিল্পী-নির্মাতার

আপডেট সময়: ০৪:২২:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ছবিতে বাঁ থেকে মার্ক রাফেলো, এমা স্টোন, জেভিয়ার বারডেম ও অলিভিয়া কোলম্যান


গত দুই বছর ধরে গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রতিবাদে বিশ্ব চলচ্চিত্র শিল্পের ১,৮০০-এরও বেশি অভিনেতা, পরিচালক ও শিল্পী ইসরায়েলি চলচ্চিত্রশিল্পকে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন।

তাদের দাবি—গণহত্যা ও বর্ণবাদের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোকে আর কোনো সহযোগিতা নয়।

সম্প্রতি ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক খোলা চিঠিতে তারা এ ঘোষণা দেন।

সেই চিঠিতে বলা হয়, ‘আমরা প্রতিজ্ঞা করছি, ইসরায়েলি সরকার-সমর্থিত বা গণহত্যা ও বর্ণবাদের সঙ্গে জড়িত কোনো চলচ্চিত্র উৎসব, সিনেমা হল, সম্প্রচারমাধ্যম বা প্রযোজনা সংস্থার সাথে কাজ করব না, সেখানে আমাদের চলচ্চিত্র প্রদর্শন করব না বা কোনো ধরনের সহযোগিতায় যুক্ত হবো না।’

চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, এ বয়কটের লক্ষ্য কোনো ব্যক্তিগত শিল্পী নন, বরং যেসব প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলি সরকারের সঙ্গে জড়িত বা তাদের কর্মকাণ্ডকে ‘সাদা ধোঁয়া’ দেয়, কেবল সেসব প্রতিষ্ঠান।

এর আগে ইতালির চলচ্চিত্রকর্মীরা ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভাল বয়কটের আহ্বান জানিয়েছিলেন। ২০০ জনের বেশি ব্রিটিশ ও আইরিশ লেখকও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একই দাবি জানিয়েছেন।

এর ফলে জেরুজালেম ফিল্ম ফেস্টিভাল, হাইফা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভাল, ডোকাভিভ, তেল আবিব ইন্টারন্যাশনাল ডকুমেন্টারি ফিল্ম ফেস্টিভাল এবং টিএলভি ফেস্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ আসরে থাকবে না তাদের সিনেমা বা উপস্থিতি।

‘ফিল্ম ওয়ার্কার্স ফর প্যালেস্টাইন’-এর বিবৃতিতে বলা হয়েছে—এমন এক সংকটময় মুহূর্তে যখন বিশ্বের বহু সরকার গণহত্যাকে সমর্থন দিয়ে চলেছে, তখন এই ভয়াবহতাকে রুখে দিতে আমাদের সবকিছু করতে হবে। ইসরায়েলি সিনেমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান, পরিবেশক বা বিক্রয় এজেন্ট—কেউই কখনো ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকারের পক্ষে দাঁড়ায়নি।

বয়কটের ডাক দেওয়া তারকাদের তালিকায় রয়েছে—মার্কিন তারকা এমা স্টোন, মার্ক রাফালো, আয়ো এডেবিরি, সিনথিয়া নিকসন; ব্রিটিশ অভিনেত্রী অলিভিয়া কোলম্যান, রিজ আহমেদ, টিল্ডা সুইনটন, জো অ্যালউইন; স্প্যানিশ অভিনেতা জেভিয়ার বারডেম; এ ছাড়া আরো রয়েছেন লিলি গ্ল্যাডস্টোন, হান্না আইনবাইন্ডার, পিটার সারসগার্ড, আইমি লু উড, পাপা এসিডু, গ্যয়েল গার্সিয়া বার্নাল, মেলিসা বারেরা, জশ ও’কনর প্রমুখ।

নির্মাতাদের তালিকায় রয়েছেন ইয়র্গোস ল্যান্থিমোস, আভা ডুভার্নে, অ্যাডাম ম্যাককে, বুটস রিলে, এমা সেলিগম্যান, জোশুয়া ওপেনহাইমার, গায়েল গার্সিয়া বারনাল, কেন লোচ, মাইক লেই প্রমুখ।

এর আগে গেল মাসে ইতালীয় চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একটি দল, ভেনিস ফর প্যালেস্টাইন, শহরটির চলচ্চিত্র উৎসবে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে, একটি চিঠিতে অস্কার বিজয়ী পরিচালক গুইলারমো ডেল টোরোসহ ২০০০ জনের স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছে।

প্রায় ২০০ ব্রিটিশ এবং আইরিশ লেখক ইসরায়েলকে ‘তাৎক্ষণিক এবং সম্পূর্ণ’ বয়কটের আহ্বান জানান। তাদের ভাষ্যে, ‘এই বয়কট ততক্ষণ চলবে যতক্ষণ না পর্যন্ত গাজার জনগণকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানীয় জল, খাদ্য এবং চিকিৎসা সরবরাহ করা হয় এবং জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গাজার জনগণের জন্য অন্য সব ধরনের ত্রাণ এবং প্রয়োজনীয়তা পুনরুদ্ধার করা হয়।’

সে সময় লেখকরা আরো বলেছিলেন, ‘আমরা সব জিম্মি এবং সব পক্ষের অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই বন্দি ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করছি। আমরা পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বসতি স্থাপনকারী সহিংসতা বন্ধ করার দাবি করছি।

আমরা হামাস এবং ইসরায়েলের দ্বারা অবিলম্বে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং সহিংসতা বন্ধের দাবি করছি।’

সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল, আলজাজিরা, আরব নিউজ, ডেডলাইন