০৫:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

কুষ্টিয়ায় মা-বাবার কবরের পাশে সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনের দাফন সম্পন্ন

  • আপডেট সময়: ০৬:০০:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • 52

দেশবরেণ্য সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনের মরদেহ রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় পৌর গোরস্তানে দাফন করা হয়েছে। শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মা রৌফা বেগম ও বাবা দেলওয়ার হোসেনের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে, এশার নামাজের পর রাত ৯টার দিকে কুষ্টিয়া পৌর গোরস্থানের সামনে তৃতীয় জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়। এ সময় কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন, কবি ও চিন্তক ফরহাদ মাযহারসহ প্রয়াত শিল্পীর আত্মীয় স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

লোকসংগীতের বরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীন শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ১৫ মিনিটে ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্বামী এবং চার সন্তান রেখে গেছেন।

লালনের গানের বাণী ও সুরকে দেশবিদেশে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে ফরিদা পারভীনের অবদান সর্বজনস্বীকৃত।

শুরুতে নজরুলসংগীত ও আধুনিক গান দিয়ে ফরিদা পারভীনের যাত্রা শুরু হয়। তবে তার সংগীত জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে লালন সাঁইয়ের গান গেয়ে। বাংলাদেশের লালনসংগীতের সঙ্গে তার নাম অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে।

স্বাধীনতার পর কুষ্টিয়ার দোলপূর্ণিমার মহাসমাবেশে প্রথমবারের মতো লালনের গান পরিবেশন করেন ফরিদা পারভীন।

শুরুতে অনীহা থাকলেও বাবার উৎসাহে মকছেদ আলী সাঁইয়ের কাছে লালনের গান শেখা শুরু করেন। এরপর খোদা বক্স সাঁই, করিম সাঁই, ব্রজেন দাসসহ গুরু পরম্পরার সাধকদের কাছে তালিম নিয়ে লালনের গানকে তিনি কণ্ঠে ধারণ করেন। এরপর লালনের গান ফরিদা পারভীন দেশ বিদেশে বা বিশ্বমঞ্চে ছড়িয়ে দিয়েছেন । জাপান, সুইডেন, ডেনমার্ক, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে তার কণ্ঠে বেজেছে লালনের দর্শন।

বাবার চাকরির সুবাদে দীর্ঘদিন কুষ্টিয়া শহরে ছিলেন ফরিদা।

কুষ্টিয়ার মীর মশাররফ হোসেন বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। ১৯৭৪ সালে কুষ্টিয়া গার্লস কলেজ থেকে এইচএসসি এবং একই কলেজ থেকে স্নাতক। ওই শহরেই দীর্ঘদিন তিনি চর্চা করেছেন লালনগীতির।

কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীন ১৯৫৪ সালে ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৮ সালে ১৪ বছর বয়সে তার পেশাদার সংগীতজীবন শুরু হয়। এরপর গানে গানে তিনি কাটিয়েছেন ৫৫ বছর।

সঙ্গীতে অবদানের জন্য ফরিদা পারভীন ১৯৮৭ সালে একুশে পদক লাভ করেন। অন্ধ প্রেম চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দেওয়ার জন্য ১৯৯৩ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ নারী সঙ্গীত শিল্পী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৮ সালে তিনি ফুকুওয়াকা এশীয় সাংস্কৃতিক পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়া তিনি সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস ও অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার পেয়েছেন।

উত্তরাধুনিক

Writer, Singer & Environmentalist

ভ্যাঙ্কি আংটি: ঐশ্বরিয়ার হাতের এই আংটি কখনও খোলেন না, জানেন এর পেছনের গল্প?

কুষ্টিয়ায় মা-বাবার কবরের পাশে সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনের দাফন সম্পন্ন

আপডেট সময়: ০৬:০০:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দেশবরেণ্য সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনের মরদেহ রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় পৌর গোরস্তানে দাফন করা হয়েছে। শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মা রৌফা বেগম ও বাবা দেলওয়ার হোসেনের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে, এশার নামাজের পর রাত ৯টার দিকে কুষ্টিয়া পৌর গোরস্থানের সামনে তৃতীয় জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়। এ সময় কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন, কবি ও চিন্তক ফরহাদ মাযহারসহ প্রয়াত শিল্পীর আত্মীয় স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

লোকসংগীতের বরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীন শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ১৫ মিনিটে ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্বামী এবং চার সন্তান রেখে গেছেন।

লালনের গানের বাণী ও সুরকে দেশবিদেশে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে ফরিদা পারভীনের অবদান সর্বজনস্বীকৃত।

শুরুতে নজরুলসংগীত ও আধুনিক গান দিয়ে ফরিদা পারভীনের যাত্রা শুরু হয়। তবে তার সংগীত জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে লালন সাঁইয়ের গান গেয়ে। বাংলাদেশের লালনসংগীতের সঙ্গে তার নাম অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে।

স্বাধীনতার পর কুষ্টিয়ার দোলপূর্ণিমার মহাসমাবেশে প্রথমবারের মতো লালনের গান পরিবেশন করেন ফরিদা পারভীন।

শুরুতে অনীহা থাকলেও বাবার উৎসাহে মকছেদ আলী সাঁইয়ের কাছে লালনের গান শেখা শুরু করেন। এরপর খোদা বক্স সাঁই, করিম সাঁই, ব্রজেন দাসসহ গুরু পরম্পরার সাধকদের কাছে তালিম নিয়ে লালনের গানকে তিনি কণ্ঠে ধারণ করেন। এরপর লালনের গান ফরিদা পারভীন দেশ বিদেশে বা বিশ্বমঞ্চে ছড়িয়ে দিয়েছেন । জাপান, সুইডেন, ডেনমার্ক, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে তার কণ্ঠে বেজেছে লালনের দর্শন।

বাবার চাকরির সুবাদে দীর্ঘদিন কুষ্টিয়া শহরে ছিলেন ফরিদা।

কুষ্টিয়ার মীর মশাররফ হোসেন বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। ১৯৭৪ সালে কুষ্টিয়া গার্লস কলেজ থেকে এইচএসসি এবং একই কলেজ থেকে স্নাতক। ওই শহরেই দীর্ঘদিন তিনি চর্চা করেছেন লালনগীতির।

কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীন ১৯৫৪ সালে ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৮ সালে ১৪ বছর বয়সে তার পেশাদার সংগীতজীবন শুরু হয়। এরপর গানে গানে তিনি কাটিয়েছেন ৫৫ বছর।

সঙ্গীতে অবদানের জন্য ফরিদা পারভীন ১৯৮৭ সালে একুশে পদক লাভ করেন। অন্ধ প্রেম চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দেওয়ার জন্য ১৯৯৩ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ নারী সঙ্গীত শিল্পী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৮ সালে তিনি ফুকুওয়াকা এশীয় সাংস্কৃতিক পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়া তিনি সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস ও অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার পেয়েছেন।