০৯:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সৌদি আরবকে জোট গঠনের আহ্বান হিজবুল্লাহর

  • আপডেট সময়: ০৪:১৭:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • 22

ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক শক্তিগুলোকে সঙ্গে নিয়ে একটি জোট গঠনে সৌদি আরবকে আহ্বান জানিয়েছে লেবাননের ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। একই সঙ্গে অতীতের বিরোধ ভুলে সৌদি আরবের সঙ্গে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চায় গোষ্ঠীটি।

শুক্রবার এক টেলিভিশন ভাষণে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে হিজবুল্লাহ প্রধান নাঈম কাসেম বলেন, ‘আঞ্চলিক শক্তিগুলোর উচিত হিজবুল্লাহ নয়, বরং ইসরায়েলকে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য প্রধান হুমকি হিসেবে দেখা।’

সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চয়তা দিচ্ছি, প্রতিরোধের (হিজবুল্লাহর) অস্ত্র শুধু ইসরায়েলি শত্রুর দিকেই তাক করা আছে- লেবানন, সৌদি আরব বা অন্য কোনো রাষ্ট্র বা সত্তার দিকে নয়।’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘সংলাপের মাধ্যমে অতীতের মতবিরোধ নিষ্পত্তি করা উচিৎ, অন্তত এই ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে, যাতে আমরা একসঙ্গে ইসরায়েলে আগ্রাসন মোকাবিলা করতে পারি। কারণ হিজবুল্লাহর ওপর চাপ সৃষ্টি করা মানে শুধু ইসরায়েলকেই সুবিধা দেওয়া, যা অনান্য রাষ্ট্রগুলোর জন্যও ঝুকিপূর্ণ হবে।’

সম্প্রতি কাতারে ইসরায়েলি হামলার প্রেক্ষাপটে সৌদি আরব এবং পারমাণবিক অস্ত্রধারী পাকিস্তান একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করার দুই দিন পর সৌদি আরবের কাছে এই আবেদন জানালো হিজবুল্লাহ।

প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের হিজবুল্লাহ–ইসরায়েল যুদ্ধের পর দক্ষিণ লেবানন পুনর্গঠনে সহায়তা দিয়েছিল। কিন্তু ইরানের সমর্থনে হিজবুল্লাহ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠলে দুই দেশের সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে হিজবুল্লাহকে একটি ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি)। হিজবুল্লাহ বর্তমানে ক্ষমতাচ্যুত নেতা বাশার আল-আসাদের পক্ষে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে জড়িত থাকার এবং ইয়েমেনের হুথিদের সমর্থনের অভিযোগ আনা হয়।

পরবর্তীতে ২০২১ সালে সৌদি আরব লেবাননের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে এবং নিজেদের দূত ফিরিয়ে নেয়। তখন রিয়াদের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, হিজবুল্লাহ লেবাননের রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে। পাল্টা বক্তব্যে হিজবুল্লাহর তৎকালীন প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে আখ্যা দেন এবং ইয়েমেনে সৌদি ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন।

এদিকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রিয়াদ, ওয়াশিংটন এবং লেবাননের প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীগুলো দেশটির সরকারকে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল। গত বছর ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে হিজবুল্লাহ ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে এবং সংগঠনের প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ-সহ বহু শীর্ষ নেতা নিহত হন।

সূত্র: আলজাজিরা, রয়টার্স

উত্তরাধুনিক

Writer, Singer & Environmentalist

ভ্যাঙ্কি আংটি: ঐশ্বরিয়ার হাতের এই আংটি কখনও খোলেন না, জানেন এর পেছনের গল্প?

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সৌদি আরবকে জোট গঠনের আহ্বান হিজবুল্লাহর

আপডেট সময়: ০৪:১৭:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক শক্তিগুলোকে সঙ্গে নিয়ে একটি জোট গঠনে সৌদি আরবকে আহ্বান জানিয়েছে লেবাননের ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। একই সঙ্গে অতীতের বিরোধ ভুলে সৌদি আরবের সঙ্গে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চায় গোষ্ঠীটি।

শুক্রবার এক টেলিভিশন ভাষণে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে হিজবুল্লাহ প্রধান নাঈম কাসেম বলেন, ‘আঞ্চলিক শক্তিগুলোর উচিত হিজবুল্লাহ নয়, বরং ইসরায়েলকে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য প্রধান হুমকি হিসেবে দেখা।’

সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চয়তা দিচ্ছি, প্রতিরোধের (হিজবুল্লাহর) অস্ত্র শুধু ইসরায়েলি শত্রুর দিকেই তাক করা আছে- লেবানন, সৌদি আরব বা অন্য কোনো রাষ্ট্র বা সত্তার দিকে নয়।’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘সংলাপের মাধ্যমে অতীতের মতবিরোধ নিষ্পত্তি করা উচিৎ, অন্তত এই ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে, যাতে আমরা একসঙ্গে ইসরায়েলে আগ্রাসন মোকাবিলা করতে পারি। কারণ হিজবুল্লাহর ওপর চাপ সৃষ্টি করা মানে শুধু ইসরায়েলকেই সুবিধা দেওয়া, যা অনান্য রাষ্ট্রগুলোর জন্যও ঝুকিপূর্ণ হবে।’

সম্প্রতি কাতারে ইসরায়েলি হামলার প্রেক্ষাপটে সৌদি আরব এবং পারমাণবিক অস্ত্রধারী পাকিস্তান একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করার দুই দিন পর সৌদি আরবের কাছে এই আবেদন জানালো হিজবুল্লাহ।

প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের হিজবুল্লাহ–ইসরায়েল যুদ্ধের পর দক্ষিণ লেবানন পুনর্গঠনে সহায়তা দিয়েছিল। কিন্তু ইরানের সমর্থনে হিজবুল্লাহ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠলে দুই দেশের সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে হিজবুল্লাহকে একটি ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি)। হিজবুল্লাহ বর্তমানে ক্ষমতাচ্যুত নেতা বাশার আল-আসাদের পক্ষে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে জড়িত থাকার এবং ইয়েমেনের হুথিদের সমর্থনের অভিযোগ আনা হয়।

পরবর্তীতে ২০২১ সালে সৌদি আরব লেবাননের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে এবং নিজেদের দূত ফিরিয়ে নেয়। তখন রিয়াদের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, হিজবুল্লাহ লেবাননের রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে। পাল্টা বক্তব্যে হিজবুল্লাহর তৎকালীন প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে আখ্যা দেন এবং ইয়েমেনে সৌদি ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন।

এদিকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রিয়াদ, ওয়াশিংটন এবং লেবাননের প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীগুলো দেশটির সরকারকে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল। গত বছর ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে হিজবুল্লাহ ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে এবং সংগঠনের প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ-সহ বহু শীর্ষ নেতা নিহত হন।

সূত্র: আলজাজিরা, রয়টার্স