
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ও ফ্রান্সের সদ্যঃসাবেক প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকর্নু। ফাইল ছবি : এএফপি
দায়িত্বে নিযুক্ত হওয়ার মাত্র এক মাসও না কাটতেই সোমবার পদত্যাগ করেছেন ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী। যা দেশটিকে আরো গভীর রাজনৈতিক সংকটে ফেলেছে এবং প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর জন্য নতুন ও গভীর সংকট সৃষ্টি করেছে।
ফরাসি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘সেবাস্তিয়ান লেকোর্নু তার সরকারের পদত্যাগপত্র প্রেসিডেন্টকে জমা দিয়েছেন এবং প্রেসিডেন্ট তা গ্রহণ করেছেন।’
ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়েন লেকোর্নু মাত্র ২৭ দিন দায়িত্ব পালনের পর পদত্যাগ করেছেন, যা আধুনিক ফ্রান্সের ইতিহাসে সবচেয়ে স্বল্পমেয়াদি প্রধানমন্ত্রিত্ব।
তিনি রবিবার রাতে নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করার মাত্র ১৪ ঘণ্টা পরেই পদত্যাগ করেন। তার সোমবার বিকেলে প্রথম মন্ত্রিসভা বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তার আগেই পদত্যাগপত্র জমা দেন।
তার এই পদত্যাগ ফ্রান্সে চলমান রাজনৈতিক সংকটকে আরো জটিল করেছে, যা গত এক বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। ২০২৪ সালের গ্রীষ্মে মাখোঁ সংসদ ভেঙে নির্বাচন দিয়েছিলেন, কিন্তু ফলাফল হয়েছিল ঝুলন্ত পার্লামেন্ট।
নিজের পদত্যাগ প্রসঙ্গে লেকোর্নু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের শর্তগুলো পূরণ হয়নি।’ তিনি অভিযোগ করেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক গোষ্ঠীর ‘দলীয় লোভ-লালসাই’ তাকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে।
লেকোর্নুর পদত্যাগকে অনেকেই ডানপন্থি রিপাবলিকানদের (এলআর) প্রতিক্রিয়ার ফল বলে মনে করছেন। রবিবার রাতে ঘোষিত মন্ত্রিসভা নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা সরকারের ভবিষ্যতে নিজেদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই প্যারিস স্টক মার্কেটে ধস নামে। ব্লু-চিপ সূচক সিএসি ৪০ স্থানীয় সময় সকাল ৮টার দিকে ২ শতাংশের বেশি কমে যায়।
ফ্রান্সের এই অস্থিতিশীলতা ইউরোপজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। জার্মান সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, ‘একটি স্থিতিশীল ফ্রান্স ইউরোপের স্থিতিশীলতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’
মাখোঁ এরপর কী করবেন, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
তিনি এ পর্যন্ত নতুন করে আগাম সংসদ নির্বাচন দিতে অস্বীকার করেছেন এবং নিজের মেয়াদ ২০২৭ সালে শেষ হওয়ার আগে পদত্যাগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিয়েছেন।
২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ফরাসি রাজনীতির ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। মারিন লে পেনের নেতৃত্বে ফরাসি অতি-ডানপন্থিরা এবার ক্ষমতায় যাওয়ার সবচেয়ে বড় সুযোগ দেখছে।
লে পেনের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল র্যালির (আরএন) প্রধান জর্ডান বারদেলা বলেন, ‘আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই নতুন সংসদ নির্বাচন হবে।’
তিনি যোগ করেন, ‘আরএন অবশ্যই সরকার গঠনের জন্য প্রস্তুত থাকবে।’























